১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না : মেজর হাফিজ

-


একাত্তরের ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। আলোচনা সভার ফাঁকে জিয়াউর রহমানের একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও সদস্য ডা: পারভেজ রেজা কাননের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কাদের গণি চৌধুরী, অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, অধ্যাপক কামরুল আহসান, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মেজর হাফিজ বলেন, জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন যখন এক দুঃসময় চলছিল। সে দিন(২৫ মার্চ) পাকিস্তানিরা যে দানবীয় তৎপরতা শুরু করেছিল, ভীত-সন্ত্রস্ত্র মানুষ যেভাবে আত্মসমর্পণের জন্য পালিয়ে বেড়াচ্ছিল তখন যদি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইপিআর মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিদ্রোহ না করতো তাহলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না। মুক্তিযুদ্ধ না হলে দেশ স্বাধীন হতো না, আজো পাকিস্তান থাকত। তৎকালীন যারা ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন তারা ফিরে আসতে পারতেন না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতারা জনগণকে প্রস্তুত করেন নাই, শুধু বক্তৃতাই দিয়ে গিয়েছিলেন। এই দুঃসময়ে জনগণের ত্রাতা হিসেবে বাঙালির উপযুক্ত সন্তান হিসেবে নির্যাতিত মানুষের হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন একজন সৈনিক যার নাম মেজর জিয়াউর রহমান। চট্টগ্রামে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সামনে তিনি সৈনিকদেরকে একত্র করে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বলেন যে, আজ থেকে আমরা স্বাধীন, আমার বাংলাদেশকে আমি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করছি এবং এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। এর পরে তিনি ২৭ মার্চে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে আবার স্বাধীনতার ঘোষণা দেন যা সবাই শুনেছেন। এটাই স্বাধীনতা ঘোষণার প্রকৃত ইতিহাস।

বাংলাদেশে ওই সময়ে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাঁচটি ব্যাটালিয়নের ৮০০ বাঙালি সৈনিক যশোর, জয়দেবপুর, গাজীপুর, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের সৈনিকদের বিদ্রোহ ঘোষণার কথাও তুলে ধরেন হাফিজ। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ছিল সাধারণ মানুষের যুদ্ধ। প্রধানত ছাত্ররা যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ মার্চ স্বাধীন দেশের পতাকা উড়িয়েছিল। এটাকে আওয়ামী লীগ পাত্তা দেয়নি। ছাত্রদের ভূমিকায় অভিভূত হয়েছি, বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে ছাত্র-সাধারণ যুবকদের যুদ্ধে যাওয়ার উৎসাহ আমি স্বচক্ষে দেখেছি।
গত শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক আলোচনা সভায় জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানি চর হিসেবে মন্তব্যের পর বিএনপির পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মেজর হাফিজের কাছ থেকে এই ভাষ্য আসলো। হাফিজ বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছি, এই গণতন্ত্র তারা ধূলিসাৎ করেছে। তার একটা ছদ্মরূপ আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি। আজকে মানুষের বাকস্বাধীনতা নাই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নাই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই। আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পদলেহনে ব্যস্ত। এ জন্য কি আমরা যুদ্ধ করেছিলাম এটা প্রত্যেকটি মুক্তিযোদ্ধার মনে প্রশ্ন ।


আরো সংবাদ



premium cement