সাগরিকায় টাইগারদের চোখ রাঙাচ্ছে শ্রীলঙ্কা

দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম দিনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কি?
একজনের জবাব, শ্রীলঙ্কার করুণারত্বে (৮৬) ও কুশল মেন্ডিস (৯৩) দুই ব্যাটারকে সেঞ্চুরি করতে না দেয়া। জবাবটা হাস্যকর হলেও আপাতদৃষ্টিতে সাগরিকায় ম্যাচের পুরো নাটাই শ্রীলঙ্কার কাছে। আজ দ্বিতীয় দিনে যদি কোনো অঘটন না ঘটে এবং গতকালের মতো টাইগারদের বাজে ফিল্ডিং অব্যাহত থাকে তাহলে রানের পাহাড় গড়ার দিকেই যাচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। এমনও হতে পারে যুৎসই স্কোর পেলে লঙ্কানরা দ্বিতীয় ইনিংস খেলার দিকে যেতে চাইবে না।
সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম সেশনে দু’টি ক্যাচ ও একটি রান আউটের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে স্বাগতিক বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। এই সুযোগে তিন ব্যাটারের হাফ-সেঞ্চুরিতে টেস্টের প্রথম দিন নিজেদের করে রাখলো সফরকারী শ্রীলঙ্কা। দিন শেষে ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩১৪ রান করেছে লঙ্কানরা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৩ রান করেন কুশল মেন্ডিস। বাংলাদেশের পক্ষে ২ উইকেট নেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা পেসার হাসান মাহমুদ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ হার এড়ানো মিশনে প্রথম ম্যাচের একাদশ থেকে দুই পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানার জায়গায় একাদশে সুযোগ পান সাকিব আল হাসান ও হাসান মাহমুদ। এক বছর পর সাকিব বড় ফরম্যাটে খেলতে নামলেও অভিষেক টেস্টের শুরুটা স্মরণীয় করে রাখার দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন হাসান।
ষষ্ঠ ওভারে ব্যক্তিগত ৯ রানে ওপেনার নিশান মাদুশকাকে শিকার করতে পারতেন। কিন্তু স্লিপে মাদুশকার ক্যাচ ফেলেন মাহমুদুল হাসান জয়। এর পর ১৬তম ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সরাসরি থ্রোতে মেহেদি হাসান মিরাজ স্টাম্প ভাঙতে না পারলে, ১৮ রানে জীবন পান দিমুথ করুণারত্নে।

২২তম ওভারে আবারো উইকেট বঞ্চিত হন হাসান। ঐ ওভারের শেষ বলে হাসানের বাউন্সারে হুক করেন করুণারতেœ। বল উড়ে যায় ফাইন লেগে থাকা সাকিব আল হাসানের দিকে। কিন্তু সীমানা থেকে একটু এগিয়ে থাকায় ঠিকঠাক বলের লাইনে যেতে পারেননি সাকিব। বল তার হাত ফসকে ছক্কায় পরিণত হয়। জীবন পেয়ে প্রথম সেশনেই টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন মাদুশকা। দ্বিতীয় সেশনের দ্বিতীয় ওভারেই হাসানের দারুণ ফিল্ডিংয়ে রান আউটের ফাঁদে পড়েন মাদুশকা। ৬টি চারে ১০৫ বলে ৫৭ রান করেন তিনি।
দলীয় ৯৬ রানে শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী জুটি পতনের পর বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন করুণারতেœ ও তিন নম্বরে নামা কুশল মেন্ডিস। এই জুটিতে করুণারতেœর ৩৭ এবং কুশলের ১৮তম হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০০ রানে পৌঁছে সফরকারীরা।

দলীয় ২১০ রানে করুণারতেœকে বোল্ড করে অভিষেক টেস্টে প্রথম উইকেটের দেখা পান হাসান। ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ১২৯ বলে ৮৬ রান করেন করুণারতেœ। হাসানের শিকার হয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে কুশল-করুণারতেœ জুটিতে ১১৪ রান যোগ করেন। করুণারতেœ ফেরার পর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন কুশল। নিজেও সেঞ্চুরির পথে হাঁটতে থাকেন। কিন্তু সাকিবের করা ১১তম ওভারে সিøপে মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে নার্ভাস-নাইন্টিতে বিদায় নেন ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৫০ বলে ৯৩ রান করা কুশল।
এর পর দিনেশ চান্ডিমালকে নিয়ে জুটি গড়ার পথে ছিলেন ম্যাথুজ। এ অবস্থায় ৮০ ওভার শেষেই নতুন বল নিয়ে প্রথম ওভারেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। হাসানের করা ঐ ওভারের শেষ বলে সিøপে মিরাজকে ক্যাচ দেন ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ রান করা ম্যাথুজ। এর পর দিনের শেষ ৫৪ বলে ২৫ রান তুলে অবিচ্ছিন্ন থেকে মাঠ ছাড়েন চান্ডিমাল (৩৪) ও অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা (১৫)। হাসান ৬৪ রানে ২টি ও সাকিব ৬০ রানে ১ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর কার্ড : প্রথম দিন
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস : ৯০ ওভার ৩১৪/৪ (নিশান মাদুশকা ৫৭ দিমুথ করুণারতেœ ৮৬, কুসল মেন্ডিস ৯৩, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ২৩, দিনেশ চান্দিমাল ৩৪*, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ১৫*, খালেদ ০/৪১, হাসান : ২/৬৪, সাকিব ১/৬০, মিরাজ ০/৯৫, তাইজুল ০/৪৮)।