মামুনুল হককে ঈদের আগে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলন : হেফাজত
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ৩০ মার্চ ২০২৪, ০৩:০০
ঈদের আগে মাওলানা মামুনুল হককে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। নেতারা বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশকে ধর্মহীনতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তারা মুখে এক কথা বললেও কাজে অন্যরকম। তাদের বিশ্বাস করা যায় না। তারা শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে পরবর্তী প্রজন্মকে ধর্ম শিক্ষাহীন করার সুচিন্তিত পরিকল্পনা নিয়েছে। মূলত সরকার বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর পাঁয়তারা করছে। সরকারের এ ধরনের চেষ্টা রুখে দিতে হেফাজত ইসলামকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। গ্রামে গ্রামে কমিটি গঠন করে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে গতকাল জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য ও করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে বক্তারা এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমির ও দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক আল্লামা খলিল আহমাদ কাসেমী। বক্তৃতা করেন, আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা আবদুল আউয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা সারওয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আজিজুল ইসলাম ইসলামাবাদী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মুফতি মাসউদুল করীম, মাওলানা মুফতি বশির উল্লাহ, মাওলানা শওকত হোসাইন সরকার, মাওলানা বোরহান উদ্দিন কাসেমী, মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা খলিল আহমাদ কাসেমী বলেন, রমজানে আত্মীয় স্বজন ও মুসলমানরা সবাই একসাথে বসে ইফতার করা আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমান সরকার ইফতার মাহফিলের ব্যাপারে কোথাও কোথাও দমনমূলক নীতি গ্রহণ করেছে, যা সাম্প্রদায়িক উসকানির শামিল। তিনি বলেন, নবীপ্রেমিক ইসলামপ্রিয় তৌহিদী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে বাতিলের মোকাবেলা করতে হবে এবং দেশে কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইনসাফভিত্তিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করে স্বাধীনতার সত্যিকার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। নূরানী মাদরাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র করা হলে তার দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে। মাওলানা মামুনুল হককে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সরকার পতন আন্দোলন করি না, কিন্তু আমাদেরকে বাধ্য করলে কোনো উপায় থাকবে না। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৬৮ হাজার গ্রাম রয়েছে। প্রত্যেক গ্রামে হেফাজতের কমিটি গঠন করতে হবে। তৃণমূল থেকে তথা; ধারাবাহিকভাবে গ্রাম, ইউনিয়ন, থানা, জেলা, বিভাগ কমিটি গঠন করে হেফাজতকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে।
আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর বলেন, বর্তমান সরকার একটি মুনাফেক, জালিম ও কুরআনের অপব্যাখ্যাকারী সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামুনুল হককে মুক্তি দেয়ার কথা বলেও না দিয়ে মুনাফেকির পরিচয় দিয়েছেন।
মাওলানা আবদুল আউয়াল বলেন, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে হেফাজতের নেতাদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের বলেছেন প্রধানমন্ত্রী তাকে মামুনুল হককে মুক্তি দেয়ার জন্য বলেছেন। আমাদের কাছেও তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঈদের আগেই মামুনুল হককে মুক্তি দিবেন। তাদের কথা আমরা ফেরেস্তার মতো বিশ্বাস করি, কিন্তু তারা কাজ করেন শয়তানের মতো। ওলামায়ে কেরামকে তারা ধোঁকা দেন।
মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, সরকার শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামী বিষয় বাদ দিয়ে হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি ঢুকিয়েছে। মূলত পরিকল্পিতভাবে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে ইসলামবিমুখ করতে চাচ্ছে।
আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, এদেশে এখন হিন্দুদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। একটি ঘটনায় আদালত চত্বরে জয়শ্রীরাম বলে স্লোগান দিলে তাদের পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে, আবার সেখানেই মুসলমানদের পিটিয়েছে পুলিশ। দেশে মুসলমানরা এখন কোন অবস্থায় আছে তা আমাদের ভাবতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে বাদ দিয়ে কুফরি কথা ঢোকানো হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে হেফাজতকে আবার মাঠে নামতে হবে।
মাওলানা ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, দিল্লি আমাদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে। দিল্লির গোলামি আমরা মানব না। জাতিকে দিল্লির হাত থেকে বাঁচাতে হেফাজতে ইসলামকে দিকনির্দেশনা দিতে হবে।
মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয় নির্বাচনের আগে মামুনুল হককে মুক্তি দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু মুক্তি দেয়া হয়নি। সম্প্রতি হেফাজত মহাসচিবসহ আলেমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন। সেখানে ধর্মমন্ত্রীও ছিলেন। মামুনুল হককে মুক্তি দেয়া হবে বলে আবারো প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। গত ১৯ মার্চ জামিনের আবেদন করতে বলা হলে সেটাও করা হয়। কিন্তু মুক্তি দেয়া হয়নি।
মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী বলেন, সরকার দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর পাঁয়তারা করছে। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতা চালু করেছে। ইফতার মাহফিল করতেও বাধা দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদেরকে আবারো রাজপথে নামতে হবে।
মাওলানা আজিজুল ইসলাম ইসলামাবাদী বলেন, হিন্দুস্তানের আগ্রাসন মোকাবেলায় হেফাজতে ইসলামকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা