২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মহররম ১৪৪৬
`

মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি পিছিয়ে বুধবার আদালতে হট্টগোল

-


প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলার ঘটনায় রমনা থানার মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদনের শুনানি ফের পিছিয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ২টা ৫০ মিনিটের দিকে এজলাসে বসেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদের। এ সময় মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু অসুস্থ জানিয়ে সময় আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে বিচারকের কাছে এ সপ্তাহের মধ্যে শুনানির তারিখ চান মির্জা ফখরুলের আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন এবং ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
জয়নুল আবেদীন বলেন, পিপি অসুস্থ থাকার বিষয় আগে জানানো হয়নি। এর আগে এরকম দেখিনি। আসামি পক্ষে হলে কোনো দিন এটা গ্রহণ করা হতো না। এর পর মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ২২ তারিখ বুধবার দেন। আমরা ওই দিন শুনানি করব। তিনি বলেন, এ সপ্তাহে যেকোনো দিন তারিখ দিলে আমরা শুনানি করব। এ সময় আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: আসাদুজ্জামান বলেন, সিআরপিসিতে পিপি থাকার প্রয়োজন আছে কি? এমন কোনো আইন নেই যে পিপি সাহেবের জন্য সময় প্রয়োজন। কোর্ট একটা তারিখ দিতে পারবে না, এটা হয় না।

এর পর আদালত বলেন, আমরা অন্য মামলা শুনি। তখন উপস্থিত আইনজীবীরা চিৎকার করে মির্জা ফখরুলের মামলার শুনানির তারিখ দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় বিচারক পরে তারিখ নির্ধারণ এবং অন্য মামলার শুনানি করতে চান। তবে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা এজলাসেই পরবর্তী শুনানির তারিখ দিতে অনুরোধ করেন।
এর পর আদালত তারিখ না দিয়েই অন্য মামলার শুনানি করতে চাইলে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ডায়াসে দাঁড়িয়ে তখনই শুনানির তারিখ চান। পরে বেলা সোয়া ৩টার দিকে আদালত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে পিপির সাথে যোগাযোগ করতে বলে আদালত উঠে যান।

এর পর বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে আবারো আদালত বসে এবং ২২ নভেম্বর বুধবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদনের তারিখ ধার্য করে আদেশ দেন।
এ বিষয়ে মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে বলা হলো যিনি মহানগর পিপি তিনি নাকি অসুস্থ। তখন আমাদের বলা হলো আজ আর শুনানি হবে না, আমরা সময় নিবো। আমরা আদালতের কাছে জানালাম আমাদেরকে এখনই শুনানির তারিখ দেয়া হোক। দুই পক্ষের বক্তব্য শুনার পরে আদালত ২২ নভেম্বর জামিন আবেদনের পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন।’
আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো: আসাদুজ্জামান, ওমর ফারুক ফারুকী, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, সগীর হোসেন লিওন, মো: মাহবুবুর রহমান খান প্রমুখ।
এ দিকে বিএনপি মহাসচিবের জামিন শুনানি পেছানোর পর পরই মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিকেল ৪টার দিকে বিকট শব্দে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। পরে বাড়তি পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান এবং ঘেরাও দেন। কোতোয়ালি জোনের উপ-কমিশনার জাফর হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের ঊর্ধ্বতন একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি আপনাদের সাথেই কথা বলছিলাম। আমার ঠিক পেছনেই কয়েক গজ দূরে বিকট শব্দে ককটেল বিস্ফোরিত হয়।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত মির্জা ফখরুলের জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন। এর পর গত ২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফখরুলের পক্ষে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। ওই দিনই আদালত শুনানির জন্য ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গত ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে রমনা থানায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করে। মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement