ঢাকার আকাশ মুক্ত
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০
দুই দিনের বিমান হামলায় বাংলাদেশে পাকিস্তান বিমানবাহিনী বিধ্বস্ত হয়ে যায়। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে ঢাকার আকাশে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথবাহিনীর সাথে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর শেষ মরণপণ লড়াই চলে। অবশেষে দুপুরের মধ্যেই পাকিস্তান বিমানবাহিনীর শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়। বাংলাদেশে আগে থেকে মজুদ করা পাকিস্তানের সব জঙ্গিবিমান ধ্বংস হয়। তেজগাঁও বিমানবন্দর রানওয়ে ধ্বংস করে ফেলা হয় টনকে টন বোমা ফেলে। দুই দিন ধরে অনবরত বিমানের আনাগোনায় ঢাকাবাসীর চোখ ছিল আকাশের দিকে। বিভিন্ন এলাকায় মিত্রবাহিনীর বিমান দুই শতাধিকবার হানা দেয়। অবশেষে ঢাকার আকাশ বাংলাদেশ ও ভারতের বিমানবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
অন্য দিকে স্থলভাগেও কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ঘাঁটিতে পাকিস্তান বাহিনী পরাজিত হতে থাকে। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাকিস্তান বাহিনীর পরাজয় এবং পিছু হটার খবর আসতে থাকে ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে। বিভিন্ন অঞ্চলে পাকিস্তানি সৈন্যদের ব্যাপক হতাহতের খবর আসে। বিপুলসংখ্যক সামরিক যান ধ্বংস হয়। চট্টগ্রামে পাকিস্তান নৌবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর নৌবাহিনীর মধ্যে তুমুল যুদ্ধ চলে। বখশীগঞ্জ যৌথবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসে। পীরগঞ্জ, হাতিবান্ধা, পঞ্চগড়, বীরগঞ্জ, আখাউড়া ও নবাবগঞ্জ মুক্ত হয়। জীবননগর, দর্শনা ও কোটচাঁদপুরে পাকিস্তানি সেনারা আত্মসমর্পণ করে।
মুক্তিবাহিনী কুমিল্লা, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল এবং বিভিন্ন অঞ্চলে সামরিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি অঞ্চল দখল করে নেয়। বাংলাদেশের বিমানবাহিনী সিলেট সেক্টরে সাফল্যের সাথে বোমাবর্ষণ করে পাঁচটি বাংকার উড়িয়ে দেয় ও এক ডজন যানবাহন ধ্বংস করে।
সম্মিলিত মিত্রবাহিনী ১৫টি ফ্রন্টে তাদের অগ্রগতি অব্যাহত রাখে। যশোর সেক্টরের কোটচাঁদপুর দখল করে তারা ঝিনাইদহের দিকে অগ্রসর হয়। এ পথে মুক্তিবাহিনী খালিশপুর সেতুটি দখল করে এবং কুষ্টিয়ার কাজীপুরের পতন ঘটে। মিত্রবাহিনী তিতাস নদীর ব্রিজ দখল করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে এগিয়ে চলে। তারা সাফল্যের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাথে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সক্ষম হয়।
এ দিকে এ দিনেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে। কিন্তু রাশিয়ার ভেটোর কারণে তা বরবাদ হয়ে যায়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া যুদ্ধে বিভিন্ন দেশ নিজেদের কোন পক্ষে জড়াবে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয় দেশগুলোর নীতিনির্ধারণী মহলে। চীনের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সীমানা মেনে ভারতীয় বাহিনীকে পূর্ব পাকিস্তান থেকে অবিলম্বে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে কড়া ভাষায় জাতিসঙ্ঘে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। অন্য দিকে রাশিয়াও জাতিসঙ্ঘে উত্থাপিত এক প্রস্তাবে জানায় যুদ্ধবিরতির আগে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে হবে। পাকিস্তান রক্ষায় বঙ্গোপসাগরে কেউ কোনো নৌজাহাজ পাঠালে তারাও ভারতের আক্রমণের শিকার হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা