বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় সেতু উড়াল সড়ক নির্মাণের নির্দেশ
- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ২৯ জুন ২০২২, ০১:৩৩
সিলেট-সুনামগঞ্জের ভয়াবহ বন্যাসহ বিভিন্ন এলাকায় পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে অনেক সড়ক কেটে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি কিছু সড়ক বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। বন্যায় ভেঙে যাওয়া ও কেটে ফেলা সড়কে নতুন করে সড়ক নয়, বরং ওইসব অংশে উড়াল সড়ক, কালভার্ট অথবা ব্রিজ নির্মাণ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ হলো এসব স্থানে নতুন করে পুনরায় সড়ক নির্মাণ করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সব শহরে রেলক্রসিংয়ের পরিবর্তে পর্যায়ক্রমে রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় গতকাল প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন। শেরে বাংলানগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন এবং অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, এসআইডি সচিব, আইএমইডি সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী জানান, সভায় ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে ৩৪১ কোটি টাকা জোগান দেয়া হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বন্যায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও মৌলভীবাজারের অনেক সড়ক কেটে ফেলা হয়েছে পানি বের করার জন্য। এছাড়া কিছু সড়ক ভেঙে গেছে। তাই এসব সড়কের জায়গায় নতুন করে সড়ক নির্মাণ করা যাবে না। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। সড়ক সেতু ভেঙে গেছে। হাওর বা প্লাবন এলাকায় সড়ক নয় ব্রিজ অথবা কালভার্ট করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পানি চলাচলে যেন বাঁধা সৃষ্টি না হয়। সিলেট এলাকায় পুনর্বাসনের জন্য নতুন করে প্রকল্প নেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। আরো কোথায় ওভারপাস বা আন্ডার পাস দরকার তা খুঁজে বের করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। নৌরুটে কালভার্ট নয়, ব্রিজ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রেলক্রসিং নয়, হবে ওভারপাস। সব শহরে রেলক্রসিংয়ের পরিবর্তে পর্যায়ক্রমে রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণের নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, আপনারা খুঁজে বের করুন কোথায় আন্ডারপাস, ওভারপাস দরকার। যাতায়াত অবাধ করতে চাই।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলোÑ ১৭১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্প, ১১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প, ৭৫ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া (ত্রিমোহনী-মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ আঞ্চলিক মহাসড়কের ৮১তম কিলোমিটার) রেলবাজার রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ, ৩৩২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে চরখালী, তুষখালী-মঠবাড়ীয়া-পাথরঘাটা মহাসড়কের পিরোজপুর অংশের জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত বেইলি ব্রিজের স্থলে পিসি গার্ডার সেতু ও আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প, এক হাজার ৯২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ (১.৬০ কিমি পর্যন্ত) সড়ক প্রশস্তকরণ, বর্ধিতসহ মোট ৪২৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে জামালপুর শহরের গেইটপাড় এলাকায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, বর্ধিতসহ মোট ৫৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক (এন-১) উন্নয়ন প্রকল্প, ২ হাজার ২৬০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা সদরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ, ৯৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা সেনানিবাসে এমইএস (মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিসেস) এর ভৌত অবকাঠামো সুবিধাদি সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং বর্ধিত ৩০৬ কোটিসহ মোট ৮৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন কার্যক্রমে জরুরি সহায়তা (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প’।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা