২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়ার আরো চার মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ বহাল

-

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে করা তিন মামলা এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা এক মামলার কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল বিচারপতি ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ মামলাগুলো সচল চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। একই সাথে আদেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হাইকোর্টের রুল শুনানি করতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা অপর একটি মামলায় জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির। আর খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নয়া দিগন্তকে বলেন, আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা চারটি মামলায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন। আমরা আদালতে বলেছি ঘটনার সময় বেগম জিয়া বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে বন্দী ছিলেন। তাকে এসব মামলার হুকুমের আসামি করা হয়েছে। অথচ তিনি নেতাকর্মীদের নাশকতা পরিহার করে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে বলেছেন। তার বিরুদ্ধে এসব মামলা চলতে পারে না। হাইকোর্ট যথার্থভাবে এসব মামলার কার্যক্রমে ওপর স্থগিত আদেশ দিয়েছেন যা বহাল থাকা উচিত। তিনি আরো বলেন, মমতাজ উদ্দিন মেহেদীর করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সেখানে তিনি বলেছেন ৩০ লাখ শহীদের তালিকা করতে। এটা কোনো অপরাধ তো না। তাদের সম্মানিত করার জন্য শহীদদের লিস্ট করার কথা বলেছেন। আর কতজন শহীদ হয়েছে তার কোনো লিস্ট নেই। তাদের ও তাদের পরিবারকে স্বীকৃতি-সম্মান দিতে লিস্ট প্রয়োজন।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, বিভিন্ন থানায় নাশকতার অভিযোগে চারটি মামলা করা হয়েছিল, হাইকোর্ট রুল ও স্টে দিয়েছিল তার বিরুদ্ধে আমরা আপিল বিভাগে আবেদন করি। এগুলো হাইকোর্টে রুল দ্রুত শুনানি করতে বলেছেন। তিনি বলেন, মামলাগুলোর মধ্যে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার একটি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলা ছিল।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল নয়া দিগন্তকে বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে করা চারটি মামলায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন। এ ছাড়া কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় করা নাশকতার অপর একটি মামলায় জামিন আদেশ বহাল রেখেছেন আদালত। তিনি আরো বলেন, এ চার মামলাসহ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোর মধ্যে মোট ১২ মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ বহাল রাখলেন আপিল বিভাগ।
এর আগে গত ১৭ আগস্ট ও ২৩ আগস্ট চারটি করে মোট আট মামলার বিষয়ে একই আদেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
২০১৫ সালে নাশকতা ও সহিংসতার অভিযোগে দারুস সালাম থানায় করা তিনটি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৭ সালে ওই আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। একই বছর হাইকোর্ট মামলাগুলোর কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে গাড়ি ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগের অভিযোগে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে নাশকতার মামলাগুলো দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
অন্য দিকে ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে’ খালেদা জিয়া ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত’ মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ এনে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন মেহেদী। ওই মামলার বৈধতা নিয়ে আবেদনের পর ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ নিয়ে রুল জারি করেন। এর বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল