২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গণতান্ত্রিক আন্দোলন ছাড়া কেউই রক্ষা পাবে না : ফখরুল

-

বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন ছাড়া কেউই রক্ষা পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ‘মুক্ত সাংবাদিকতার অন্তর্ধান দিবস’ পালন উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। মির্জা ফখরুল বলেন, এখন থেকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া দেশ, গণতন্ত্র, সাংবাদিকতা-কোনো কিছুই রক্ষা করা যাবে না, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকেও রক্ষা করা যাবে না। বর্তমান অবস্থা বদলে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। বদলে দেয়ার একটাই পথ, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট যে সরকার, এই সরকারকে সরাতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনই হচ্ছে আমাদের একমাত্র পথ।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মো: গোলাম পারোয়ার, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, আবদুল আউয়াল ঠাকুর, নুরুল আমিন রোকন, বাছির জামাল, রাশেদুল হক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোরসালীন নোমানী, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসিন বক্তব্য রাখেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা থেকে যদি মুক্তি পেতে হয় আমাদের ঐক্য দরকার হবে। যেটা আমরা চেষ্টা করছি সবসময়। আসুন গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সবাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাই, সব রাজনৈতিক দলকে একখানে আনার চেষ্টা করি এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের যে অধিকার, আমরা ১৯৭১ সালে যেটার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য, গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য সেটাকে ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই করি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে।
তিনি বলেন, এই সরকারের কোনোরকমের মূল্যবোধ নেই। আওয়ামী লীগ তো গণতন্ত্রে বিশ্বাসই করে না। আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসাথে যায় না, কখনোই যায় না। ওদের যে রসায়ন তার মধ্যে গণতন্ত্র হয় না। ওদের ভাবটাই হচ্ছে যে, আমি ছাড়া আর কেউ নেই। আমি একমাত্র দেশকে নিয়ন্ত্রণ করব, আমি দেশ চালাব, আমি সব কিছু। সেজন্য এই অবস্থা থেকে মুক্ত হতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, পারস্পরিক সমস্যাগুলোকে দূর করতে হবে। ন্যাশনাল ইউনিটি এই গণতন্ত্রের জন্য বেশি প্রয়োজন।
গণমাধ্যমের ওপর সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে যে অবস্থায় পড়েছি এটা নিঃসন্দেহে সবচেয়ে খারাপ সময়, সবচেয়ে কঠিন সময়। এখানে এমন একটা অবস্থা তৈরি করে ফেলা হয়েছে বিশেষ করে ভয়ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে যে আজকে কেউ সাহস করছে না। আজকে আমার মনে হয় যে, যত সাংবাদিক এখন বেকার আছেন, এত বেকার বোধহয় কখনো ছিল না। পচাত্তর সালে বাকশাল করার পর চারটি পত্রিকা রেখেছিল, বাকিগুলো চলে গিয়েছিল। আজকে কিন্তু পরোক্ষভাবে ওই রকমই একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। তাদের কথা যারা বলবে, তাদের পক্ষে যারা থাকবে তাদের পত্রিকা চলবে, তাদের চ্যানেল চলবে, তাদের গণমাধ্যমগুলো চলবে। অন্য যারা আছে তাদেরগুলো তারা চলতে দেবে না।
তিনি বলেন, আমি জানি, আপনারা অনেক ভুক্তভোগী, আপনারা অনেক কষ্ট করছেন, অনেকের চাকরি নেই, অনেকে জেল-জুলুমের মামলার মধ্যে পড়েছেন। সাগর-রুনি থেকে শুরু করে অনেকে খুন হয়ে গেছেন, অনেকে গুম হয়ে গেছেন, অনেককে হত্যা করা হয়েছে। তারপরেও আপনাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। কারণ আপনারাই হচ্ছেন গণতন্ত্রের মূলভিত্তি। মুক্ত সাংবাদিকতা বা মুক্ত সংবাদমাধ্যম না থাকলে গণতন্ত্র কখনোই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। গণতন্ত্রের মূল বিষয়টাই হচ্ছে গণমাধ্যম সব দেশে, সব যুগে, সব কালে সাংবাদিকরা একটা প্রধান ভূমিকা পালন করে। আপনারা চেষ্টা করছেন, সব সময় করেছেন।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘আমাদের প্রবীণ সম্পাদক আবুল আসাদ গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ দিন কারাগারে আছেন, তিনি জামিন পাচ্ছেন না, কোনো জামিন নেই। জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল দিগন্ত টিভি, চ্যানেল ওয়ান বন্ধ, আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ। লেখার তো কোনো স্বাধীনতা নেই, ক্ষমতা নেই।। এভাবে আইন করেছে যে, আপনি কিছুই করতে পারবেন না। বলে কি করবি, হেইঠাও করতে পারবি না। এই অবস্থায় আমরা আছি। তিনি বলেন, ভিন্নমত পোষণকারী কোনো সংবাদপত্র কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন পাচ্ছে না। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি বিজ্ঞাপন দিলে তাকেও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এইভাবে সাংবাদিক নির্যাতন হচ্ছে। এই অবস্থার অবশ্যই আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাধারণ মানুষের বাক-স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণ ও গণতন্ত্রকে ভয় পায়, এ জন্য তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য ফ্যাসিবাদকে বেছে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে এই আইনের মাধ্যমে সাংবাদিক সমাজসহ সব শ্রেণীর মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। অবিলম্বে এই কালাকানুন বাতিলের দাবি জানাচ্ছি এবং সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, দেশে সুশাসন নেই। কথা বলার স্বাধীনতা নেই। দুনীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। কাজেই এই সরকারকে হটানোর জন্য আন্দোলন-সংগ্রামের বিকল্প নেই।


আরো সংবাদ



premium cement
বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল