১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ইউক্রেনের খারকিভ সীমান্তে রাশিয়ার নতুন অভিযান, ৫ গ্রাম দখলের দাবি

- ছবি : ভয়েস অব আমেরিকা

ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তীব্র লড়াই চলছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের সৈন্যরা পাঁচটি গ্রাম দখল করেছে, তবে কিয়েভ সেই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

মন্ত্রণালয় জানায়, মস্কোর বাহিনী রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চল থেকে সীমান্তের ওপারে ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের প্লেতেনিভকা, ওহিরতসেভ, বরিসিভকা, পাইলনা ও স্ট্রিলেচা গ্রামগুলো দখল করে নিয়েছে।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা রাশিয়ার সাফল্যের দাবি নিশ্চিত করেনি। তবে, শুক্রবার ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার বলছে, কমপক্ষে একটি গ্রাম দখল করা হয়েছে বলে এর অবস্থান নিশ্চিত করা গেছে। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার অর্জনকে ‘কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করেছে।

খারকিভের গভর্নর ওলেহ সিনিয়েহুবভ বলেন, সীমান্তের তিন থেকে পাঁচ কিলোমিটার নিকটবর্তী পাঁচটি গ্রামের চারপাশে লড়াই চলছে।

সিনিয়েহুবভকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানায় ‘আমরা পরিষ্কার বুঝতে পারছি শত্রুরা আমাদের এলাকার উত্তরে কী ধরনের সৈন্য নিয়োজিত করেছে। অবশ্যই, চাপ বাড়তে পারে, তারা তাদের সামরিক ইউনিটগুলোকে আরো শক্তিশালী করতে পারে, তাদের উপস্থিতি বাড়াতে পারে।’

তবে, এখনই আঞ্চলিক রাজধানী খারকিভের প্রায় ১৩ লাখ লোককে সরিয়ে নেয়া শুরু করার প্রয়োজন নেই। তারা নিয়মিত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা সত্ত্বেও সেখানে বসবাস করে আসছে।

তিনি শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইউক্রেনীয় বাহিনী নয়টি হামলা প্রতিহত করেছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার শনিবার রাতের ভাষণে, খারকিভ অঞ্চলের সাতটি সীমান্তবর্তী গ্রামের চারপাশে লড়াইয়ের খবর জানিয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের পরিস্থিতিকে বিশেষভাবে উত্তেজনাপূর্ণ বলে অভিহিত করেন।

রণাঙ্গন সম্প্রসারণ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর এক সূত্র জানিয়েছে, রুশ সেনারা সাঁজোয়া বাহিনী নিয়ে খারকিভের এক কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে ইউক্রেনের হামলা ঠেকাতে তারা এখানে কাজ করছে।

ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই অঞ্চলে রাশিয়ার অভিযানের ফলে প্রায় ১৭০০ বেসামরিক মানুষ এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।

ইউক্রেনে আগ্রাসনের দুই বছরেরও বেশি সময় পর রাশিয়া রণাঙ্গনে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। ইউক্রেন যখন জনবলের ঘাটতির পাশাপাশি আর্টিলারি শেল এবং বিমান প্রতিরক্ষা মজুদ নিয়ে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে, তখন রাশিয়া নতুন এলাকায় অভিযান শুরু করেছে।

শনিবার সকালে জেলেনস্কি এক বিবৃতিতে কিয়েভের পশ্চিমা মিত্রদের তাদের প্রতিশ্রুত অস্ত্র সরবরাহ ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান।

মার্চে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, তিনি বেলগোরোদ সংলগ্ন ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে একটি ‘স্যানিটারি জোন’ তৈরির কথা ভাবছেন। বেলগোরোদ প্রায়ই ইউক্রেনের গোলাবর্ষণের স্বীকার হয়।

শুক্রবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি বলেন, এসব কিছুই ইঙ্গিত করছে রুশ বাহিনী খারকিভে বড় ধরনের আক্রমণের পরিকল্পনা করছে।

তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে, ইউক্রেনীয় বাহিনী তীব্র রুশ সাঁজোয়া স্থল আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জন্য নতুন করে ৪০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সরঞ্জাম প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

প্রেসিডেন্সিয়াল ড্রডাউন অথরিটির এই সাহায্য প্যাকেজ কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে পেন্টাগনের স্টকপাইল থেকে যুদ্ধাস্ত্র এবং পরিষেবাদি স্থানান্তর করার অনুমতি দেয়। কংগ্রেসের ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিল পাসের পর এটিই ইউক্রেনের জন্য জরুরি সামরিক সহায়তার তৃতীয় ধাপ।

সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement