২০ মে ২০২৪, ০৬ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫
`


‘শ্যামাকাব্য’ কোনো সুপারহিরোর গল্প না -সৌদ

‘শ্যামাকাব্য’ কোনো সুপারহিরোর গল্প না -সৌদ -

বদরুল আনাম সৌদ। নাট্যকার ও নাট্যপরিচালক হিসেবে মেধার পরিচয় দিয়েছেন অনেক আগে। তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা প্রশংসিত হয়েছে। এবার তিনি পরিচালনা করেছেন ‘শ্যামাকাব্য’। ৩ মে ঢাকাসহ সারা দেশে ‘শ্যামাকাব্য’ মুক্তি পেয়েছে। তবে মুক্তির দুই দিনের মধ্যেই সিনেমা হল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাকিবুল হাসান

আপনার অনেক পরিশ্রমের সিনেমা ‘শ্যামাকাব্য’। কিন্তু মুক্তির দুই দিন পরই হল থেকে সরিয়ে ফেলেছেন কেন?
কিছু সিনেমা তো থাকে যেগুলো মুক্তির পর পরই ব্যাপক হিট হয়ে যাবে না, কিন্তু সিনেমাটি দর্শককে দেখার সুযোগ করে দিতে হবে। অথচ সিনেমা মুক্তির পর থেকেই ম্যানেজমেন্টের লোকজন ‘সিনেমা তো চলছে না’ বলে মানসিক যন্ত্রণা দিতে শুরু করেন। বিদেশী সিনেমাগুলোকে তারা ‘আমাদের সিনেমা’ বলেন, অথচ যে এলাকায় ‘শ্যামাকাব্য’র মতো সিনেমার দর্শক আছে বলে মনে করি, সেখানকার হলে তারা একটি প্রদর্শনীও রাখেন না। এটা কেবল শ্যামাকাব্যের বেলাতেই ঘটেনি, আগের অনেক সিনেমার বেলাতেও এমনটা হয়েছে। আমি হলের ম্যানেজমেন্টের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে আমার সিনেমাটি উঠিয়ে নিয়েছি।
পরিচালকের সিদ্ধান্তে সিনেমা উঠিয়ে নেয়ার ঘটনা বিরল। আপনি কি আরো কয়েক দিন অপেক্ষা করতে পারতেন না?
কেউ সম্ভবত এর আগে সিনেপ্লেক্স থেকে সিনেমা তুলে নেয়নি। আমি নিলাম। কারণ প্রথম দিন পর্দার সমস্যার কারণে দর্শক সিনেমাটি ভালো করে দেখতে পারছিলেন না। এ কারণে প্রথম দিনের একটি হাউজফুল শো বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যদিও পরদিন হল পরিবর্তন করে সমস্যার সমাধান করা হয়। দ্বিতীয় কারণ হলো, পরের দিন দেখা গেল, একটি দৃশ্য শেষ না করে ওই দৃশ্যের মাঝামাঝি সময়ে মধ্যবিরতি দেয়া হচ্ছে। বিরতির পর শুরু হচ্ছে সেই দৃশ্যের পর থেকে। সর্বশেষ টিকিট বিক্রির হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্মাতা। তবে এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি। কিন্তু প্রদর্শনী টাইম নিয়ে তার আপত্তির কথা জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, অনুরোধ করার পরেও যে সময়টায় হলে দর্শক কম থাকে, সেই মর্নিং শোতে রাখা হয় শ্যামাকাব্যের প্রদর্শনী। তাই স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে শ্যামাকাব্য সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
‘শ্যামাকাব্য’ নিয়ে প্রত্যাশা কতটুকু ছিল?
আমার প্রত্যাশা এখনও আছে। ‘শ্যামাকাব্য’ দর্শকদের ভালো লাগবে, দর্শকরা গ্রহণ করবেন। ভালো লাগার মতো গল্প আছে। বই পড়ার মতো অনুভূতি কাজ করবে সিনেমাটি দেখার পর। শুধু দেশে না, স্কটল্যান্ড কিংবা ভারতের যেকোনো জায়গায় ‘শ্যামাকাব্য’কে ফেলতে পারবেন। অনেক ব্যবসা সফল সিনেমা হবে এমনটি আশা না করলেও অনেক প্রশংসিত হবে এটুকু আত্মবিশ্বাস আছে। সিনেমা হলে না থাকলেও ওটিটিতে দেখা যাবে এটি।
কী ধরনের গল্প তুলে ধরেছেন?
আমাদের আশপাশের মানুষের গল্প উঠে এসেছে। তার পরও নানাজনের রুচি নানারকম। ‘শ্যামাকাব্য’ কোনো সুপারহিরোর গল্প না। আমাদের গল্প।
অভিনয়শিল্পীরা কতটা দরদ দিয়ে অভিনয় করেছেন?
অভিনয়শিল্পীরা শতভাগেরও বেশি যদি কিছু থাকে, সেটাই দিয়েছেন। অসম্ভব দরদ ও ভালোবাসা দিয়ে তারা অভিনয় করেছেন। কেবল অভিনয়শিল্পীদের কথা বললে কম বলা হবে। সিনেমা একটি টিমওয়ার্ক। টিমের সঙ্গে যারা ছিলেন সবাই অসম্ভব সাপোর্ট ও শ্রম দিয়েছেন। তাদের কথা বলে শেষ করা যাবে না। প্রত্যেকে ভালোবাসা দিয়ে কাজটি করেছেন। আমি মুগ্ধ। যারা কাজ করছেন আমি তাদের ছাড়া কেউ না।
‘শ্যামাকাব্য’র সহ-প্রযোজক তো সুবর্ণা মুস্তাফা?
হ্যাঁ। এটি অনুদানের সিনেমা। সবাই কম-বেশি জানেন, অনুদানের জন্য যা পাওয়া যায় তা একটি সিনেমা বানানোর জন্য পর্যাপ্ত নয়। কেননা, একটি সিনেমার জন্য অনেক টাকা লাগে। তার পরও অনুদান পেয়েছি সে জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। এরপর সুবর্ণা সহ-প্রযোজক হিসেবে আছেন। তবে, সহ-প্রযোজক হিসেবে তিনি আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। কোনো রকম ইন্টারফেয়ার করেননি। সুন্দরভাবে শুটিং শেষ করতে পেরেছি।
লোকেশন কিভাবে খুঁজে পেলেন?
ঘুরতে ঘুরতে লোকেশন ঠিক করেছি। প্রচুর ঘুরেছি। পুরনো জমিদারবাড়ি দরকার ছিল। ঘুরেছি অনেক। এভাবেই একসময় পেয়েছি বাড়িটি। অনেকগুলো জেলায় ঘুরেছি।
আত্মতৃপ্তির বিষয়টি নিয়ে যদি বলতেন
প্রথম সিনেমা ছিল ‘প্রথম প্রেমের মতো’। এটিও কম নয়। এটি আমার কাছে অনেকটা নিজের সিনেমা। আমি যেভাবে গল্প বলতে চেয়েছি, সেভাবেই বলতে পেরেছি।


আরো সংবাদ



premium cement