বাংলাদেশের সিনেমার কালজয়ী এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় দুই প্রেমের গান হচ্ছে ‘তোমারে লেগেছে এত যে ভালো চাঁদ বুঝি তা জানে’ এবং ‘আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন’। দু’টি গানের মধ্যে প্রথম গানটি এহতেশাম পরিচালিত রহমান ও শবনম অভিনীত ‘রাজধানীর বুকে’ সিনেমার এবং দ্বিতীয় গানটি অশোক ঘোষ পরিচালিত রাজ্জাক-শবনম অভিনীত ‘নাচের পুতুল’ সিনেমার গান। দু’টি গানেরই সুরস্র্রষ্টা রবিন ঘোষ। ‘তোমারে লেগেছে এত যে ভালো’ গানটি গেয়েছেন তালাত মাহমুদ এবং দর্শক নায়ক রহমানের লিপে তা উপভোগ করেছেন। অন্যদিকে ‘আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন’ গানটি গেয়েছেন মাহমুদুন্নবী এবং পর্দায় দর্শক নায়ক রাজ রাজ্জাকের লিপে উপভোগ করেছেন। বাংলাদেশের সিনেমার জনপ্রিয় এই দু’টি গানের গীতিকার জীবন্ত কিংবদন্তি গীতিকার কে জি মোস্তফা। রাজধানীর আজিমপুরে এক ধরনের নীরবে নিভৃতে জীবন যাপন করছেন স্বনামধন্য এই কবি, গীতিকার, সাংবাদিক ও কলামিস্ট। গানপ্রেমী শ্রোতা দর্শক যারা আছেন তারা কে জি মোস্তফার লেখা এই দু’টি গান শোনেননি, এমন হতেই পারে না। দু’টি গানের পর আরো অসংখ্য গান লিখেছেন কে জি মোস্তফা। কিন্তু এরপর যদি আর কোনো গান নাও লিখতেন একজন কে জি মোস্তফা এই দু’টি গানের মধ্য দিয়েই অমর হয়ে থাকতেন। কে জি মোস্তফা এখনো গান লিখছেন। ‘বসে আছি জানালায় অপেক্ষা নিয়ে’ শিরোনামের গানটিই তার লেখা প্রকাশিত সর্বশেষ গান। গানটি গেয়েছেন মামুন জাহিদ। এই প্রজন্মের শিল্পীদের গান শোনার সুযোগ তার খুব কম হয়েছে। তবে সময় সুযোগ পেলে তিনি নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের গান শোনেন তিনি। সিনেমার হাজার গানের স্রষ্টা কে জি মোস্তফা বলেন, ‘এই প্রজন্মের অনেক শিল্পীর গান শোনার সুযোগ হয়েছে। তবে তাদের গানের সুর যেমন দীর্ঘ সময় মনে গেঁথে থাকে না, অনুরূপভাবে তাদের গানের কথায় কাব্যময়তার খুব অভাব। অনেক মেলোডিয়াস ভয়েজ আছে এই প্রজন্মে। সেসব ভয়েসকে কাজে লাগাতে হবে। যেন তাদের কণ্ঠের সুর দীর্ঘসময় আমাদের মনে গেঁথে থাকে।’ একজন কে জি মোস্তফার জন্ম ১৯৩৭ সালের ১ জুলাই নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। দৈনিক ইত্তেহাদে ১৯৫৮ সালে শিক্ষানবীস হিসেবে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। ১৯৭৬ সালে তিনি বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারভুক্ত হন এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে সিনিয়র সম্পাদক (যুগ্ম সচিব পদমর্যাদা) হিসেবে অবসর নেন। অনেক সিনেমার সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। রয়েছে বেশ কিছু কাব্যগ্রন্থ, ছড়ার বই, গানের বই, গদ্যগ্রন্থ, গানের সিডি, ক্যাসেট। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পদক, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় সঙ্গীত বিভাগ কর্তৃক পদক ‘দেশবরেণ্য গীতিকার’ পদকসহ আরো বহু পদকে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা