শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০২ মে ২০২৪, ১৬:১৫
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার। পাশাপাশি নোটিশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাস কমিয়ে মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে।
যদি একান্তই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হয় তাহলে মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত তাপদাহের সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাসের সময় সকাল শিফট সকাল ৬টা থেকে সকাল ৮টা এবং ডে শিফট সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত করার এবং প্রচলিত পেপার পেনসিল পরীক্ষার পরিবর্তে শুধুমাত্র অ্যাসাইনমেন্ট, প্রকল্পভিত্তিক কাজ, অনুসন্ধানমূলক কাজের মাধ্যমে মূল্যায়নের বিষয়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লিখিত নির্দেশনা জারির ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও বলে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: মাহবুব হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবরে এ নোটিশ দিয়েছেন অ্যাডভোকেট হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের স্বত্বাধিকারী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।
নোটিশে বলা হয়, আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, ১৯৪৮ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তাপপ্রবাহ হয়েছে এবারের এপ্রিল মাসে। ফলে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে ২৪ এপ্রিল প্রকাশ করা ‘তাপপ্রবাহ: বাংলাদেশ, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন অনুসারে উত্তর ও দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৯০ শতাংশ এলাকা তীব্র তাপপ্রবাহের বিপদে রয়েছে। আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমাদের গাণিতিক মডেল বিশ্লেষণ বলছে, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের কিছু অংশে প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত হলেও মে মাসে দেশে সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হতে পারে। তিনি আরো বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সিলেট অঞ্চল, বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের কিছু অংশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব চট্টগ্রাম অঞ্চলে কিছু স্বস্তির বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও এতে সারাদেশে চলমান তাপদাহ হ্রাসের সম্ভাবনা কম।
প্রথমবারের মতো আবহাওয়াবিদরা জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং অ্যাক্টিভিস্টদের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে স্বীকার করেছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া অস্বাভাবিক আচরণ করছে এবং এর ফলে ধীরে ধীরে তাপদাহের অঞ্চল প্রসারিত হচ্ছে। তারা বলছেন, দাবদাহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ অংশ এবং আংশিকভাবে পূর্ব এশিয়ার দেশ ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামকে প্রভাবিত করেছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুসারে, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েক মিলিয়ন মানুষ প্রবল তাপদাহে ভুগছে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে, কৃষি কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে এবং হিট স্ট্রোক ও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য জটিলতার ঝুঁকি বেড়েছে। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পরিস্থিতিও বিশেষভাবে স্বীকার করা হয়েছে যে কিছু এলাকায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত আর্দ্রতা তাপমাত্রাকে আরো অসহ্য করে তুলেছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গড় তাপমাত্রা ১-৭ ডিগ্রি পর্যন্ত বেড়েছে। তাপমাত্রার পাশাপাশি জলীয় বাষ্পের আধিক্য রয়েছে। একদিকে তীব্র গরম, অপরদিকে বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্য। এ কারণে মানুষের শরীরে প্রচুর ঘাম হচ্ছে। আর্দ্রতা বেশি থাকায় শরীরের ঘাম সহজেই শুকাচ্ছে না।
ডাক্তাররা হিট স্ট্রোক থেকে নিজেদের রক্ষা করতে যতটা সম্ভব বাড়ির ভেতরে থাকার এবং সূর্যের সংস্পর্শে আসার সময় আবহাওয়ার উপযোগী পোশাক পরার এবং তাপদাহের সময় পানিশূন্যতা এড়াতে পানির পাশাপাশি বেশি তরল খাবার খাওয়ার এবং কাজের সময় এক বা দুই ঘণ্টা পরপর বিশ্রাম নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের মস্তিষ্ক নির্দিষ্ট মাত্রার তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে, যদি তা বেশি হয় তবে মানুষ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে, হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে এবং ডিহাইড্রেশনের কারণে ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা এবং কিডনির কর্মহীনতাসহ অন্যান্য জটিলতায় ভুগতে পারে।’
হিট অ্যালার্ট ও দাবদাহের কারণে এপ্রিলের শুরু থেকে হাসপাতালগুলো বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে বাধ্য হয়েছে। এসময় তাপজনিত অসুস্থতা নিয়ে বেশি সংখ্যক রোগী হাসপাতালে এসেছে। এই দীর্ঘায়িত গরম আবহাওয়ায় শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিরাই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে সংকট মোকাবিলায় অতিরিক্ত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ জারি করেছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল স্কুল-কলেজ খোলার কথা থাকলেও দেশজুড়ে হিট অ্যালার্ট ও তাপপ্রবাহের কারণে তা এক সপ্তাহ পিছিয়ে যায়। তীব্র তাপপ্রবাহ আর হিট অ্যালার্টের মধ্যেই গত ২৮ এপ্রিল স্কুল-কলেজ চালু হলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরে। তবে প্রচণ্ড গরমে বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া যায়। গরমে অসুস্থ হয়ে শিক্ষকসহ কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন গত সোমবার হাইকোর্টের নজরে আনা হয়। এরপর শুনানি নিয়ে মাননীয় বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও মাননীয় বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে চলমান তাপপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়।
অথচ শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাংবিধানিক এখতিয়ার আছে, সেখানে এ বিষয়ে যদি কোনো সিদ্ধান্ত (আদালতে) হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আমরা তার উপরের আদালতে, আপিল বিভাগে যাব। একটু আগে শুনেছি আদালত একটা নির্দেশ দিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী হাইকোর্ট জনদুর্ভোগ বিবেচনায় কোনো আদেশ দিলেই কথায় কথায় আপিল বিভাগে চলে যান এবং সেখানে উন্নত দেশের বিভিন্ন উদাহরণ অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। অথচ একেক দেশের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় সেই দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং পরিবেশ পরিস্থিতি অনুসারে। এটি কি শিক্ষামন্ত্রী আসলে বুঝতে চান না, না কি বুঝেও না বোঝার ভান করেন? আমেরিকা, কানাডা, ইউকে, অস্ট্রেলিয়াসহ উন্নত দেশগুলোতে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পার্টটাইম কাজ করে নিজের গাড়ি, বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সম্পন্ন করার আগেই করে ফেলে। তাদের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে, সকল শিক্ষার্থী ভাতা পায়, অনলাইন ও অফলাইন দুই ব্যবস্থাতেই শিক্ষা নেয়ার সুযোগ আছে। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই পড়া শেষ করার পাশাপাশি পরীক্ষাও নেয়া হয় ওপেন বুক পদ্ধতিতে। উন্নত দেশগুলোতে কারিগরি ও কর্মমুখী শিক্ষা দেওয়া হয় ফলে কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন শেষ করে বেকার থাকে না। উন্নত দেশগুলোর আবহাওয়াও আমাদের দেশের মতো নয় এবং উন্নত দেশগুলোর কোনো শিক্ষা কারিকুলাম ও সুবিধা বাংলাদেশে বিদ্যমান নাই। তাই কথায় কথায় আপিল করার অভ্যাস আর উন্নত দেশের উদাহরণ দেয়া বন্ধ করে স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট এডুকেশন কিভাবে চালু করা যায়, কিভাবে স্কুল- কলেজে থাকতেই উন্নত দেশের বাচ্চাদের মতো বাংলাদেশের বাচ্চারাও আয় করতে পারে সেই রকম শিক্ষা কার্যক্রম চালু করুন।
এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলেছেন, ইংলিশ মিডিয়ামের ক্লাস চলবে আর বাংলা মিডিয়াম সব বন্ধ থাকবে এটা বৈষম্যমূলক। ইংলিশ মিডিয়ামের সকল কার্যক্রম ব্রিটিশ কারিকুলামে পরিচালিত হয় এবং পরীক্ষাও হয় ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে। ইংলিশ মিডিয়ামে অতি ধনী পরিবারের সন্তানেরা পড়াশোনা করে, যারা এসি গাড়িতে চলে এবং ক্লাসও করে এসি রুমে। সুতরাং সেই শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে বাংলাদেশের প্রচলিত শিক্ষা কার্যক্রমের তুলনা করার কোনো মানেই হয় না।
লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার আরো বলেছেন, আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। একইসাথে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিও সবার আগে মাথায় রাখতে হবে। এটা মনে রাখতে হবে, একটা শিশু যদি কোনো কারণে মারা যায়, এর পুরো দায়ভার সরকার ও সমগ্র জাতির ওপর এসে বর্তাবে। তাপদাহ ও হিট অ্যালার্ট একটা প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এ ধরনের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখাটাই উচিত। করোনার সময়েও দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল, অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু ছিল। একইভাবে ঘূর্ণিঝড়ের সময়ও সবাই সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়, স্কুল বন্ধ থাকে। এমন দুর্যোগ যদি দেশব্যাপী হয়, তাহলে এর আগামীর ভাবনাটা আমাদের ভাবতে হবে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন অনেক করেছি আমরা। কিন্তু এটা ভাবিনি যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। গ্রামের বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কারণ লোডশেডিং হচ্ছে। খাবার পানি, লোডশেডিংয়ের মতো বিষয়গুলো মাথায় রেখেই স্কুল-কলেজ খোলা রাখার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখে সিলেবাস কমিয়ে মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত অনলাইনে ক্লাস নিয়ে পরবর্তীতে তা অন্যভাবে পুষিয়ে নিতে হবে। যদি একান্তই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে হয় তাহলে দাবদাহের সময়ে মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ক্লাসের সময় সকাল শিফট সকাল ৬টা থেকে সকাল ৮টা এবং ডে শিফট সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত করা যেতে পারে। আগে শিশুদের বাঁচাতে হবে। তারপর লেখাপড়া, চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছু। শিক্ষক মারা গেলেন, শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে গেল স্কুল থেকে আসার পথে এই অবস্থায় স্কুল কলেজ কি করে খোলা থাকে? এটা কোনো অবস্থাতেই যুক্তিসঙ্গত না। এই গরমে স্কুলে আসলে লেখাপড়া হয় না। শিক্ষকও পড়াতে পারেন না, শিক্ষার্থীরাও মনোযোগ দিতে পারে না। বরং তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। শিশুদের বিষয় এটা। বড়দের ব্যাপার না যে কোনোরকমে সইয়ে নেবে।
লিগ্যাল নোটিশে আরো বলা হয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী ইতিপূর্বে চলতি বছরের রমজান মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকবৃন্দদের ধর্মীয় কার্যক্রম পালনে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছিলেন। আবারো প্রচণ্ড দাবদাহ ও হিট অ্যালার্টের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের অবর্ণনীয় কষ্ট ও ভোগান্তি প্রদান করছেন। শিক্ষামন্ত্রী নিজে এসি অফিসে কাজ করেন, এসি বাসায় থাকেন, এসি গাড়িতে চলাচল করেন তাই আপনার কাছে হয়তো তাপদাহ কোনো সমস্যা বলে মনে হয় না।
একবার এসি বন্ধ রেখে সাধারণ মানুষের মতো বাস, রিকশায় চলাচল করে দেখুন তাহলে বুঝতে পারবেন তাপদাহ কাকে বলে। আপনার জায়গায় আমি শিক্ষামন্ত্রী হলে ছয় মাসের মধ্যে পুরো বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিণত করার পাশাপাশি উন্নত দেশগুলোর মতো শিক্ষার্থীদের আয়ের ব্যবস্থাও চালু করতাম। যা আপনার মতো সনাতন চিন্তাধারার শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষে বাস্তবায়ন কোনোদিনই সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশের শিক্ষা কার্যক্রম হিটলারের স্টাইলে চালানোর চেষ্টা করে শিক্ষার্থীদের মনে পড়ালেখা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভীতি তৈরি করছেন। আপনার কার্যক্রমে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার বিরুদ্ধে প্রচুর লেখা হচ্ছে। অনেকে লিখেছেন স্বাধীন বাংলাদেশে আপনার মতো অযোগ্য শিক্ষামন্ত্রী আর কেউ ছিল না। আপনার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিতর্কিত হচ্ছে। তাই আপনি ১নং নোটিশ গ্রহীতা উন্নত দেশগুলোর মন্ত্রীদের মতো জনমনে আপনার বিষয়ে যে ক্ষোভ আছে তা নিরসনে তথা জনদুর্ভোগ অনুধাবন করতে আপনি ব্যর্থ সেই দায়ভার কাঁধে নিয়ে অনতিবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।
লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির সাথে সাথে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাস কমিয়ে মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি যদি একান্তই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে হয় তাহলে মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত তাপদাহের সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাসের সময় সকাল শিফট সকাল ৬টা থেকে সকাল ৮টা এবং ডে শিফট সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে সকাল ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত করার পাশাপাশি প্রচলিত পেপার পেন্সিল পরীক্ষার পরিবর্তে শুধুমাত্র অ্যাসাইনমেন্ট, প্রকল্পভিত্তিক কাজ, অনুসন্ধানমূলক কাজ এর মাধ্যমে মূল্যায়নের বিষয়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লিখিত নির্দেশনা জারির অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় প্রচলিত আইন অনুসারে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে রিট দায়েরসহ প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা