১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকের সর্বনাশ

উত্তরাঞ্চলে দরকার কৃষি পুনর্বাসন

-

গত চার মাসের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বারবার বন্যা দেখা দিয়েছে। দেখা দিয়েছে দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ। তাপ ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছেন লাখ লাখ কৃষক। পরপর তিনটি ফসল হারিয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
কিছু জায়গায় তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলে বন্যা। সেসব এলাকার কৃষক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জের লাখো কৃষকের এখন মাথায় হাত। এর মধ্যে বর্ষার তীব্রতা আবারো বাড়তে পারে এবং চতুর্থ দফা বন্যা দেখা দিতে পারে- এমন আশঙ্কা করছেন অনেকে। নতুন করে বন্যা দেখা দিলে আগামী আমন মৌসুমের ফলন হুমকিতে পড়বে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রায় ২০ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
একটি ইংরেজি দৈনিকের খবরে প্রকাশ, উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় হাজার হাজার কৃষক গত মার্চ মাস থেকে পরপর বন্যায় টানা তিনটি ফসল হারিয়েছেন। বন্যা এখনো চলছে। গত দু’দিনে বন্যার পানি কমলেও বৃষ্টিবাদল শেষ হয়নি। ভারী বর্ষণ হলে চতুর্থবারের মতো বন্যা দেখা দিতে পারে- এমন আশঙ্কা করেন কেউ কেউ। সে ক্ষেত্রে আগামী আমনের ফলন বিনষ্ট হওয়ার ঝুঁকি দেখা দেবে। আমন হলো আমাদের গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যশস্য। বছরে উৎপাদিত মোট ধানের ৪০ শতাংশ আসে আমন মৌসুমে। শুধু ধান নয়, বিপুল পরিমাণ সবজি ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। অসংখ্য মাছচাষির পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পাটের ফলন মার খেয়েছে।

কুড়িগ্রামের কিছু এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ এত বেশি যে, সেখানে প্রায় ৯০ শতাংশ কৃষক একের পর এক ফসল হারিয়েছেন। অনেক জেলায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কৃষকের ধান বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে। এছাড়া তাপপ্রবাহে বীজতলা নষ্ট হওয়ায় অনেকে আউশের আবাদ করতে পারেনি। এ কারণে সিলেট বিভাগে প্রায় আট হাজার হেক্টরের মতো জমিতে আউশের চাষ করতে পারেননি কৃষকরা।
রংপুর বিভাগের বন্যাকবলিত পাঁচ জেলায় এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৪৮২ হেক্টর আমন বীজতলা ও সবজি ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। উত্তর-পূর্ব বিভাগে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হয়নি। সেখানে এক হাজার ৬৪ হেক্টরের বিপরীতে ৯১১ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সবজিচাষিদের। ২৭ হাজার ৩০২ হেক্টর সবজি ক্ষেতের মধ্যে, ১২ হাজার ৩০৭ হেক্টর পানির নিচে পড়ে থাকা সবজি সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে।
বারবার বিনিয়োগ হারিয়ে, উত্তরের দরিদ্র কৃষকরা ঋণের ফাঁদে আটকে পড়ছেন। অনেকের কাঁধে এরই মধ্যে একাধিক ঋণের বোঝা চেপেছে। কৃষকরা এখন অন্যান্য উৎস থেকে ঋণের কিস্তি পরিশোধের চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাদের পুঁজি ফিরে পাওয়ার আর কোনো আশা নেই।
লাগাতার বিপর্যয়ের পরও স্বস্তির অবকাশ মিলছে না। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরেও বড় বন্যা হতে পারে- এমন আভাস দিয়ে জনগণকে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে জরুরি কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি নেয়া এবং কৃষকদের সরাসরি আর্থিক সহায়তা দেয়ার বিকল্প নেই।


আরো সংবাদ



premium cement
বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের আহ্বান ফেনীতে মুক্তিপণ না দেয়ায় শিশু খুন, গ্রেফতার ৩ কিশোর ড. ইউনূসের সাথে এসএফও প্রতিনিধিদলের বৈঠক সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা, সমতা লক্ষ্য পাকিস্তানের হালাল পণ্যের বাজার প্রসারে বাংলাদেশের সাথে কাজ করবে মালয়েশিয়া শমী কায়সারের জামিন স্থগিত দেড় যুগ পর সিলেটে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন কাল হালাল পণ্যের বাজার প্রসারে একসাথে কাজ করবে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া ৫ বছর পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি জিতল জিম্বাবুয়ে জাহিদ-পলক-আজমসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা দেশে এলো ইউক্রেন থেকে আমদানি করা গম

সকল