১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’

আঘাত হেনেছে আশঙ্কার চেয়ে কম

-

অল্প ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে চলে গেছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। যে রকম ভয়াবহ রূপ নিয়ে এসেছিল তেমন প্রলয়ঙ্করী হয়ে ওঠেনি শেষ পর্যন্ত। উপকূলে আঘাত হানার সময় ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ে ঝড়টি।
শনিবার রাতে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। তবে এর শক্তি কমে অতি প্রবল থেকে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। খুলনার সুন্দরবন ও সংলগ্ন এলাকা অতিক্রম করার সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় একটানা সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার; যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল। আবহাওয়াবিদরা জানান, ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানার পর এর গতি কমতে শুরু করে। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া না গেলেও পরে জানা যায়, সুন্দরবনের দুবলারচর লণ্ডভণ্ড হয়েছে, ভোলার লালমোহনে ১২টি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলে কয়েকজন এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
জানা যায়, এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব কমে যাওয়ার অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে আমাদের চিরসবুজ বনাঞ্চল সুন্দরবনের অস্তিত্ব। বনের গাছপালা বুক পেতে প্রতিহত করেছে ঝড়ের তাণ্ডব। বনের ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক, কিন্তু মানুষের জীবন ও ঘরবাড়ির বেশি ক্ষতি হয়নি। এর আগেও একাধিক ঝড়ে সুন্দরবনের কারণে আমাদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছিল। আইলা ও সিডরের সেই মহাপ্রলয়ের কথা এখনো উপকূলের মানুষ ভুলে যাননি। সুন্দরবনকে বলা হয় আমাদের দেশের জন্য একটি প্রাকৃতিক প্রতিরোধব্যবস্থা।
কিন্তু আমরা শহরবাসী সেটি মনে রাখি না। তাই সুন্দরবনের ক্ষতি করে শিল্পকারখানা, বন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো ‘আত্মঘাতী’ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এসব প্রকল্প উন্নয়নের পরিবর্তে আখেরে চরম ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারেÑ এটুকু বাস্তব সত্য উপলব্ধি করতে না পারলে ক্ষতির শিকার হওয়া ছাড়া অন্য বিকল্প আমাদের সামনে নেই। দেশের নীতিনির্ধারণের দায়িত্বে যারা রয়েছেন, তাদের এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি। সুন্দরবনের আশপাশে যেসব অবকাঠামো এ বনের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত; সেগুলো অপসারণ করা দরকার। দুর্যোগ-দুর্বিপাক থেকে আত্মরক্ষার জন্য এটা আমাদের আশু করণীয়।
এবার আগেভাগে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ায় প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়েছে। উপকূলীয় সব জেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়। ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছিল। ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী জানান, শনিবার বিকেল পর্যন্ত ১৮ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী করণীয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও শুরু করেছে সরকার। দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ অতীতের সক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছে।
ঝড়ের আঘাতে তছনছ হয়ে গেছে সুন্দরবনের দক্ষিণে অবস্থিত দুবলারচরের অস্থায়ী শুঁটকিপল্লী। ভোলার লালমোহনে একটি গ্রামে শনিবার রাতে টর্নেডোর আঘাতে ১২টি ঘর সম্পূর্ণ বিধস্ত হয়। বিধ্বস্ত ঘরে চাপা পড়ে আহত হয়েছেন ১০ জন। পটুয়াখালীতে ঝড়ের আঘাতে একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পুরো উপকূলীয় এলাকায় অনেক গাছপালা ঝড়ের প্রচণ্ড আঘাতে উপড়ে গেছে। উপদ্রুত এলাকায় দ্রুত ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হওয়া দরকার। বিশেষ করে দুবলারচরের দরিদ্র জেলে পরিবারগুলোর জন্য এই মুহূর্তেই পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই যিনি ঝড়ের তাণ্ডবকে আমাদের জন্য নিস্তেজ করে দিয়েছেন, প্রশমিত করেছেন তার শক্তি দিয়ে এবং আমাদের রক্ষা করেছেন সম্ভাব্য বিপর্যয় থেকে।


আরো সংবাদ



premium cement
অলিম্পিকে ইকুয়েস্ট্রিয়ানে পদক জেতার আশা সৌদি আরবের ভালুকায় কারখানা শ্রমিকের মৃত্যু ইসরাইলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে হিজবুল্লাহ, স্বীকার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ন্যায়বিচার পাওয়া প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার : প্রধান বিচারপতি তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে চকলেট খাওয়ানোর প্রলোভনে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এবার কি যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটেনও ভারতীয় মশলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে? গাইবান্ধায় চাচার ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল ভাতিজির শিশুদের নিয়ে বিশ্বকাপের জার্সি উন্মোচন করলো আফগানিস্তান (ভিডিও) গাজা যুদ্ধ শেষ করতে হামাস প্রধানকে হত্যা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র! জামালপুরে ভাঙন ঠেকাতে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ পাইলিং শঙ্কার মুখে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র টি-টোয়েন্টি সিরিজ

সকল