বৈশ্বিক সমস্যার বৈশ্বিক সমাধান প্রয়োজন : ব্রিটিশ মন্ত্রী
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৮ মে ২০২৪, ১৮:২৭
যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন বলেছেন, বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। নিয়মিত অভিবাসন ও অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে তাদের সম্পর্ক জোরদার করা হয়েছে।
তিনি বলেন,‘বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর জন্য বৈশ্বিক সমাধান প্রয়োজন এবং সবার জন্য একটি সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আমি বাংলাদেশ ও অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি।’
অবৈধ অভিবাসীদের অপসারণ ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশের সাথে একটি নতুন চুক্তি সই করেছে ব্রিটিশ সরকার।
ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, ‘এই চুক্তিগুলো অবৈধ অভিবাসনের উপর যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে, আমরা এরই মধ্যে তার স্পষ্ট উদাহরণ দেখেছি।’
তিনি বলেন, অবৈধভাবে এখানে আসা বা থাকা বন্ধ করতে আমাদের পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ অপসারণ ত্বরান্বিত করা।
লন্ডনে স্বরাষ্ট্রবিষয়ক প্রথম জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপে উভয় দেশ তাদের অংশীদারিত্ব এবং অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ইস্যুতে সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
চুক্তিটিতে অপসারণের জন্য অত্যন্ত সহায়ক প্রমাণ রয়েছে। এমন ঘটনার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক সাক্ষাৎকারের পরিবর্তে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াটিকে সহজতর করবে।
ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থী, বিদেশী অপরাধী নাগরিক এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও থাকা ব্যক্তিদের সবাইকে শিগগিরই ফেরত পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য লন্ডনে দেশটির স্বরাষ্ট্র দপ্তরে স্বরাষ্ট্রবিষয়ক যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভা করেছে এবং সম্প্রতি প্রত্যাবর্তন-সংক্রান্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সই করেছে।
যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী ও বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বৃহস্পতিবার জেডব্লিউজি বৈঠকের উদ্বোধন করেন এবং দুই দেশের মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসি্ডিউরস (এসওপি) সইয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যমান ভিসা রুটের মাধ্যমে বৈধ অভিবাসন সহজতর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ। এর মধ্যে রয়েছে ভিসা অপব্যবহার রোধে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা, তথ্য বিনিময় এবং সক্ষমতা বাড়ানো, গুরুতর সংগঠিত অপরাধ মোকাবিলায় নিজ নিজ পন্থা সম্পর্কে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানো।
সম্প্রতি ঢাকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যুক্তরাজ্যের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক মন্ত্রী অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ানের মধ্যে বৈঠকের ওপর ভিত্তি করে এই ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোর দিয়ে বলেছেন, অবৈধ অভিবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। আর নতুন প্রত্যাবর্তন চুক্তিতে সম্মত হওয়ার ক্ষেত্রে সমর্থন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী ট্রেভেলিয়ান।
অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে হাইকমিশনার মুনা বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের সহযোগিতায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নথিভুক্ত নয় এমন নির্দিষ্ট সংখ্যক বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে দিচ্ছে।
এ কারণে যুক্তরাজ্যে এই মুহূর্তে অনিবন্ধিত বাংলাদেশীর সংখ্যা ন্যূনতম এবং বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাইকমিশনের সহায়তায় ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করবে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, সুখবর হচ্ছে অনিবন্ধিত নাগরিকের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ শীর্ষ দশটি দেশের মধ্যেও নেই এবং তবুও ব্রেক্সিট-পরবর্তী যুক্তরাজ্যের সাথে তাদের এই সমঝোতা স্মারকটি আনুষ্ঠানিক করার প্রয়োজন ছিল।
গত বছর ২৬ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই সংখ্যা ২০২২ সালের তুলনায় ৭৪ শতাংশ বেশি।
প্রত্যাবর্তন ত্বরান্বিত করতে আলবেনিয়া সরকারের সাথে একটি চুক্তি করেছে দেশটি। এ চুক্তির ফলে আলবেনিয়া থেকে আসা লোকজনের সংখ্যা ৯০ শতাংশেরও বেশি কমেছে।
অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের কার্যক্রম সারা দেশে বাড়ানোয় গত বছর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যক্রম ৬৮ শতাংশ বেড়েছে এবং গ্রেফতার দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
রুয়ান্ডায় প্রথম ফ্লাইটের আগে ৮ থেকে ১০ সপ্তাহের মধ্যে আটক শুরু হয়েছে।
সরকারের রুয়ান্ডা পরিকল্পনা ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসীদের চ্যানেল জুড়ে বিপজ্জনক যাত্রা থেকে বিরত রাখবে। একই সাথে যারা অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে আসবে, তারা যাতে থাকতে না পারে সেটিও নিশ্চিত করবে।
সূত্র : ইউএনবি