০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফরকালে ৫ দলিল স্বাক্ষর ও বহুমুখী সহযোগিতার সম্ভাবনা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

- ছবি : বাসস

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার থাইল্যান্ড সফরকালে দেশটির সাথে বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রসারে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক ও একটি লেটার অব ইন্টেন্ট স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে থাইল্যান্ড সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

পাঁচটি দলিল স্বাক্ষর ও বহুমুখী সহযোগিতার বিষয়ে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা তাভিসিনের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল থাইল্যান্ডের ব্যাংককে সরকারি সফর এবং ইউনাইটেড নেশনস ইকনোমিক এন্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া এন্ড প্যাসিফিকের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগদান করবেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২৬ এপ্রিল থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউজে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সৌজন্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন।

তিনি বলেন, দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তির পাশাপাশি জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর জন্য একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের রাজপ্রাসাদে রাজা মহা ভাজিরা-লংকর্ন ফ্রা ভাজিরা-ক্লাচাও-উহুয়া এবং রাণী সুধিদা বজ্রসুধা-বিমলা-লক্ষণের সঙ্গেও সাক্ষাত করবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’র পর্যালোচনার পাশাপাশি অন্যান্য অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষত বিনিয়োগ, পর্যটন, জ্বালানি, স্থল এবং সমুদ্র সংযোগ, উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মানব-সম্পদ উন্নয়ন, বৌদ্ধ সার্কিট পর্যটন প্রচারণা, পর্যটন অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে যৌথ কার্যক্রম ও দক্ষতা বিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক সুবিধা অর্জন করতে পারবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, পর্যটন শিল্পে এই সহযোগিতার ফলে উভয় দেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, এছাড়া বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি দেয়া হলে উভয় দেশের সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর হবে এবং বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও প্রশিক্ষণে সরকারী কর্মকর্তারা সময়মত যোগদান করতে পারবেন।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে আসিয়ানের ’সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হিসেবে মর্যাদালাভে বাংলাদেশের আবেদনের বিষয়ে আরো জোরালোভাবে অনুরোধ করা এবং রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন ও মিয়ানমারে চলমান সংঘাত নিরসনে থাইল্যান্ডসহ আসিয়ান সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে আরো বেশি সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি আরও জানান, ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে ২৫ এপ্রিল এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বক্তব্য প্রদান করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

তিনি আরো জানান, একই দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইউএনএসক্যাপের নির্বাহী সচিব সৌজন্য সাক্ষাত করবেন।

স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশ থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর এ সরকারি সফরটি সফল এবং ফলপ্রসূ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট সচিববৃন্দ সফর ও সম্মেলনে যোগদানের কথা রয়েছে। সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement