চীনের সাথে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক যোগাযোগ আরো বাড়াতে হবে : ওয়েবিনারে বক্তারা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ জুন ২০২১, ১৮:৪১
চীনের সাথে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়াতে হবে নিজেদের স্বার্থেই, চীনের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে লাভবান হবে বাংলাদেশ– এমন বক্তব্যই উঠে এসেছে বাংলাদেশ ডিসকোর্স গ্রুপ আয়োজিত ৮ জুনের ওয়েবিনারে। চায়না মুসলিম ওয়ার্ল্ড কোঅপারেশন রিসার্চ, মালোয়েশিয়াভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক মুসলিম ওয়ার্ল্ড রিসার্চ সেন্টারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ডিসকোর্স গ্রুপের উদ্যোগে চায়না-কো অপারেশন উইথ বাংলাদেশ : কারেন্ট পারসপেকটিভ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদে বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি। সূচনা বক্তব্য রাখেন সিএমডব্লিউসিআর প্রকল্পের হেড এবং এমডব্লিউআরসি-এর প্রেসিডেন্ট অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. ইশারফ হোসেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল কাশেম হায়দার।
অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, সিএমডব্লিউসিআরের রিসার্চ কোঅর্ডিনেটর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. শাফায়াত আহমদ, সাবেক বিচারপতি ও কলামিস্ট ইকতেদার আহমেদ, মালয়েশিয়ার মাহাসা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল বাশার, আইআইইউএম মালয়েশিয়ার অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. এম. মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ পোস্ট পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক শিয়াবুর রহমান, সিএমজি বাংলার সাংবাদিক শান্তা মারিয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি (আইআইইউএম) মালয়েশিয়ার আইন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় ফারুক খান এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা তিনবার চীন সফর করেছেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন এবং কূটনীতিক সম্পর্কের পর থেকে চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রতিটি সরকারের আমলেই বৃদ্ধি পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে পারস্পরিক বোঝাবুঝির ভিত্তিতে চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক চমৎকার। বিভিন্নমুখী সহযোগিতা অর্জনের মধ্য দিয়ে এই সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে। আমি মনে করি এইক্ষেত্রে বিদ্যমান রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে চীনআরও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।
সূচনা বক্তব্যে ড. ইশারফ হোসেন বলেন বিশ্ব ব্যবস্থার নতুন পরিবর্তনে আশা করা যায় চায়নার পাশাপাশি মুসলিম বিশ্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাই চায়নার বিভিন্ন সহযোগিতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ মুসলিম বিশ্বের ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখতে পারে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক পটভূমি উল্লেখ করে সাম্প্রতিক কালের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
মূল বক্তৃতায় আবুল কাশেম হায়দার সাম্প্রতিক সময়ে চীন বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে ভৌত অবকাঠামোগত বিষয়ে কিভাবে ভূমিকা রাখছে সে বিষয়টি তুলে ধরে বলেন প্রযুক্তিতে শক্তিশালী চীনের মতো একটি দেশের সাথেই বাংলাদেশের কার্যকরি বন্ধুত্ব দরকার। যাতে কারে বাংলাদেশ প্রযুক্তি ভিত্তিক বিভিন্ন উন্নয়নে এগিয়ে যেতে পারে।
ইকতেদার আহমদ বলেন চীনসহ বিভিন্ন দেশের বর্তমান বিনিয়োগ নিঃসন্দেহে এদেশের জন্য ইতিবাচক। তবে বিনিয়োগকৃত অর্থের ব্যাপারে বিদেশে পাচারসহ দেশের ভিতরে দুর্নীতি হচ্ছে বলে যে অভিযোগ শোনা যায় তা কঠোরভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। তা নাহলে চীনের বর্তমান সহযোগিতার সত্যিকার সুফল পাওয়া যাবে না।
এয়ারভাইস মার্শাল হুমায়ুন কবীর বলেন, চীনের সাথে সহযোগিতা বিনিময়কে আরো কার্যকরি ও ফলপ্রসূ করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে উপযুক্ত ও শক্তিশালী ডায়লগ গ্রুপ প্রতিষ্ঠাসহ একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা দরকার।
বিগ্রেডিয়ার শাফায়াত বলেন, মুসলিম বিশ্বের কয়েকটি দেশ চীনের সাথে কাজ করে কৌশলগতভাবে যেভাবে লাভবান হচ্ছে একইভাবে বাংলাদেশকে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ ও কার্যক্রমকে ব্যবহার করতে হবে।
প্রফেসর এম. বাসার বলেন, চীনের উইঘরের মুসলিম অধিবাসীদের সাম্প্রতিক বিদ্যমান সঙ্কটের ক্ষেত্রে চীনের সাথে আলোচনা করে বাংলাদেশ ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
ড. এম. মনিরুজ্জিামান বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আলোকে বাংলাদেশকে একটি সোনার বাংলা গঠন করতে হলে চীনসহ অন্যান্য অগ্রসর মুসলিম দেশের সহযোগিতাকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করতে হবে।
শিহাবুর রহমান বলেন, দেশ, জনগণ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে চীনের সহযোগিতা গ্রহণে কোনোরকম অজুহাত, অন্যায় বাধা বিপত্তিকে বিবেচনা করা ঠিক হবে না।
কবি শান্তা মারিয়া বলেন, শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন ফলপ্রসু কার্যক্রম চলছে। এক্ষেত্রে এই কার্যক্রমকে আরো কার্যকরি ও বৃদ্ধি করার জন্য উভয় দেশেই প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা দরকার।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি