আল মাহমুদের কবিতা : নদীর পাড়ভাঙা বাংলাদেশ
- ড. ফজলুল হক তুহিন
- ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
মানুষ যে দেশে জন্মগ্রহণ করে সেটাই তার স্বদেশ। ক্রমে এই দেশ হয়ে ওঠে তার কৈশোর, যৌবন ও পৌঢ়ত্বের আশ্রয়ভূমি। এখানেই তার শরীর ও মানস গঠনের ধারাবাহিক পর্যায় অতিবাহিত হয়, সেজন্য চার পাশের বস্তুপুঞ্জ ও পরিবেশের সাথে গড়ে ওঠে এক অবিচ্ছেদ্য সম্বন্ধ। জন্মভূমির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক মায়ের সাথে সন্তানের নাড়ির যোগসূত্রের মতোই। মানুষের চিন্তা-চৈতন্য-আবেগ-স্বপ্ন ও কর্মের প্রকাশ ও বিকাশে স্বদেশ কোনো না কোনোভাবে সংযুক্ত হয়ে যায়। সে কারণে স্বদেশের প্রতি এক ধরনের অনুভূতি প্রত্যেক মানুষের মধ্যে সহজাতভাবে বর্তমান। সৃজনশীল ও সংবেদনশীল সত্তার জন্য কবি-শিল্পীদের মাঝে তা তুলনামূলকভাবে বেশি সক্রিয়। ফলে তাদের শিল্পকর্মে স্বদেশ বা জন্মভূমির প্রতি এক ধরনের চেতনাস্রোত বয়ে যায়। অর্থাৎ স্বদেশচেতনা প্রতিটি মানুষের রক্তে স্পন্দিত এবং কবির কাব্যকর্মে প্রকাশিত।
আল মাহমুদ যে বাংলাদেশের ছবি আঁকেন তা রবীন্দ্রনাথ-জীবনানন্দ-জসীমউদ্দীন অঙ্কিত নয়; নদীভাঙা গ্রামজনপদের জীবনাচার ও সংস্কৃতির মিশেলে সেই ছবি তার কবিতায় প্রথম বাক্সময় হয়ে ওঠে। তার ভাষ্য :
আমি এমন এক গ্রাম বাংলাকে উপস্থাপন করতে চেয়েছি, যে গ্রামবাংলা ভেঙে পড়া। ঠিক জসীমউদ্দীনের বাংলাদেশও না। আবার জীবনানন্দ দাশের বাংলাদেশও না। জসীমউদ্দীন এবং জীবনানন্দ দাশের বাংলাদেশে এক ধরনের রূপকথা আছে। একটা স্বপ্ন আছে। কিন্তু আমার দেখা বাংলাদেশ একদমই রূঢ়। এ বাংলাদেশ নদীর পাড়ভাঙা বাংলাদেশ। গ্রামকে গ্রাম বিলীন হওয়া বাংলাদেশ। এগুলো আমার কবিতায় প্রথম এসে যায়। [আল মাহমুদ: সাক্ষাৎকার]
বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি, আর্থ-সামাজিক বোধ ও তৃণমূল জীবনাভিজ্ঞতা কবিকে দেশের প্রকৃত স্বরূপ অঙ্কনে সহায়তা করেছে। আল মাহমুদের স্বদেশচেতনা তার কবিতার বিভিন্ন পর্বে বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছে। তার প্রথম পর্যায়ের কবিতায় বাংলাদেশের নদীকেন্দ্রিক ও কৃষিভিত্তিক গ্রামজনপদ এবং গ্রামজনপদে প্রত্যাবর্তন; দ্বিতীয় পর্যায়ে দ্রোহী দেশচেতনা এবং নারীপ্রেম ও দেশপ্রেমের অন্বয়; তৃতীয় পর্যায়ে দেশজননীর ধারণা প্রকাশ পেয়েছে; সঙ্গে সঙ্গে দেশের কাছে আত্মনিবেদনের আন্তরিক মনোভাব প্রকাশিত।
স্বদেশ, স্বদেশের রূপ ও চেতনার উপকরণ, দৃশ্য ও অদৃশ্য প্রভাব ও প্রতিফলন, ধর্ম-সমাজ ও বস্তুগত জীবনের অত্যাবশ্যক খুঁটিনাটি এবং সর্বোপরি মৌলিক গ্রামীণ বাংলার ভেতরদেশ থেকে আল মাহমুদ কবিতা সৃজন করেন। তার দৃষ্টি অনিবার্যভাবে গ্রাম-বাংলার দিকে ধাবিত এবং গভীর সাহস ও প্রত্যয়ের সাথে সেইখানে মগ্ন ও সংলগ্ন আত্মপরিচয়ের ঠিকানায় শেকড় প্রোথিত। দেশজ জীবন ও প্রকৃতির মাঝেই তার জীবনবেদ ও নিষ্ঠাবান কাব্যবিশ্বাস উপস্থাপন করেন এবং প্রমাণ করেন যে, গ্রামের কথকতার অর্থ গ্রাম্যতা নয়; সঙ্গে সঙ্গে স্বদেশকে ভালোবাসা একজন কবির জন্য অপরিহার্য শর্ত। তবে তিনি গ্রাম বলতে বোঝেন-
আমি আমার কবিতায়, আধুনিক নগর সভ্যতা তথা সর্বব্যাপী নাগরিক উৎক্ষেপের যুগেও ক্ষয়িষ্ণু গ্রামীণ জীবন ও ধসেপড়া গ্রামকে উত্থাপন করতে চাইছি বলে অনেক সমালোচক কটাক্ষ করেন। আমি তাঁদের বহুবার বোঝাতে চেষ্টা করেছি, গ্রাম বলতে আমি যূথবদ্ধ আদিম মানবজীবনকে বুঝি না, বরং এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় যে সব নর-নারী ধনতান্ত্রিক নগর সভ্যতার বিরুদ্ধে গেরিলা বাহিনী গড়ে তুলছেন তারা আসলে গ্রামেরই লোক। [‘ভূমিকা’, আল মাহমুদের কবিতা]
বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সাথে নিবিড়ভাবে সংলগ্ন যে গ্রামীণ জীবনকাঠামো ও জীবন-সংস্কৃতি, নাগরিক জীবনযাপনের জটিল ও কঠিন অভিজ্ঞতার মাঝে বসে আল মাহমুদ তাকেই লালন করেছেন চেতনার উজ্জ্বলতায়।
আল মাহমুদের স্বাদেশিকতা গ্রামবাংলার জনপদের জীবনস্পন্দনে বাক্সময়। নাগরিকতার বিপরীতে তার কবিতার ভিত্তি ও উৎস গ্রামের চাষা-চাষি, জমিন, বলদ-লাঙল, নদী, নদীর মাঝি-নৌকা, পাখি, রাস্তার ভবঘুরে ও ঘরণী। তার কবিতায় যে গ্রামের দৃশ্য দেখা যায় তা বাংলাদেশরই প্রতিনিধিত্বশীল গ্রাম। কবির একবিন্দু গ্রামে সমগ্র বাংলাদেশের ছায়া পড়েছে। তার অন্তর্দেশে নদীময় গ্রামবাংলা স্পন্দমান। সেই বিম্বিত বাংলাদেশই তার কবিতা। তার কবিতার চিরকালের অনন্য চরিত্র দেশজতা; তবে দেশজতা মানে কেবল মাটির গন্ধ নয়, মানুষের প্রতিবিম্ব; যে মানুষ জমিনের সঙ্গে যুক্ত। তাই তার কাব্যে কিষান ও জমিন একটি আবহমান বাস্তব ও বর্তমান রূপে বিরাজমান। আল মাহমুদ এই স্বতন্ত্র শিল্প-জগতের বাসিন্দা- যেখানে কিষান বাস্তবতায় লিপ্ত এবং দৃষ্টিভঙ্গিতে শোষণবিরোধী ও নগরবিমুখ।
দ্যাখো, জয়নুলের ছবির মত ঘরবাড়ি, নারী
উঠোনে ঝাড়ছে ধান, ধানের ধুলোয় ম্লান শাড়ি;
গতর উদোম করে হাতে লেপা মাটির চত্বরে
লাঞ্ছিত নিশেন হয়ে পড়ে আছে যেন অনাদরে।
[“প্রত্যাবর্তন”, কালের কলস]
অন্যদিকে স্বদেশের চিত্ররূপ আর কবিতাকে অভিন্নরূপে একই সমান্তরালে স্থাপন করেন। কেননা তাঁর কাছে স্বদেশের প্রকৃতি, মানুষ আর কবিতা একই বন্ধনে আবদ্ধ।
কবিতা তো ফিরে যাওয়া পার হয়ে হাঁটুজল নদী
কুয়াশায় ঢাকা পথ, ভোরের আজান কিংবা নাড়ার দহন
পিঠার পেটের ভাগে ফুলে ওঠা তিলের সৌরভ
মাছের আঁশটে গন্ধ, উঠোনে ছড়ানো জাল আর
বাঁশঝাড়ে ঘাসে ঢাকা দাদার কবর।
[“কবিতা এমন”, সোনালি কাবিন]
কবি ঔপনিবেশিক নিসর্গচিত্র অঙ্কন করেননি। ঔপনিবেশিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে প্রকৃত দেশ, কৃষক-লাঙল-জমিন, নদী-মাছ-জাল, কর্ষণ-আবাদ-শস্যসহ কবি দেশের মাটিলগ্ন কর্মব্যস্ত মানুষের চিত্রাবলী আঁকেন; যার সঙ্গে জীবনবাস্তবতা জড়িত। গ্রামীণ প্রকৃতি এবং গ্রামের মানুষ নিয়ে কবির স্বদেশচেতনা কার্যকর।
নদী ভাঙনে বিলীন হওয়া বাংলাদেশের করুণগাথা তার কবিতাকে করেছে আরো জনমনস্পর্শী। নদী, নদীর ভাঙন, ভাঙনে বিলীন হওয়া গ্রাম, নদীলগ্ন প্রকৃতি-পশুপাখি ও মানুষ তার কবিতার একটা বড় জায়গাজুড়ে আছে। আজীবন নদীর সঙ্গে সম্পর্ক তার; জীবনের গভীর দুঃখময় অভিজ্ঞতা এই নদীর সঙ্গেই হয়েছে।
কেবল আমাকে নদীর কাছে যেতে বলতেন। বলতেন
জেনে আয় কোন দিকে চর পড়েছে।
আমি তার কথায় দৌড় দিতাম। কিন্তু ফিরে এসে বলতাম
আজ কৈবর্তপাড়ার নলিনীদের ভিটেবাড়ি ভাঙলো বাবা।
...তারপর ভাঙনের রেখা পেছনে রেখে
আমরা গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছিতরে পড়লাম।
কেউ গেলাম মামুর বাড়িতে কেউ ফুপুর। যেমন
বাবেল থেকে মানুষের ধারা
ছড়িয়ে পড়লো পৃথিবীতে।
[“চোখ যখন অতীতাশ্রয়ী হয়”, সোনালি কাবিন]
কবি আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়েই কবিতায় স্বদেশের দৃশ্যময় গ্রাম, ভেঙেপড়া গ্রাম, চরের উত্থান-পতন, প্রকৃতি ও মানুষের প্রেম ও হিংসা, বহমান নদী ও নারীকে তুলে আনেন শহরের হাতছানি উপেক্ষা করে। দেশের অধিকাংশ মানুষের জীবন, জীবিকার উৎস, বসবাসের ক্ষেত্র, নদীকেন্দ্রিক জনপদ, পরিপার্শ্ব নিয়েই কবির স্বদেশ নির্মিত।
চড়–ইয়ের বাসা, প্রেম, লতাপাতা, বইয়ের মলাট।
দুমড়ে মুচড়ে খসে পড়ে। মেঘনার জলের কামড়ে
কাঁপতে থাকে ফসলের আদিগন্ত সবুজ চিৎকার।
ভাসে ঘর, ঘড়া-কলসী, গরুর গোয়াল
বুবুর স্নেহের মতো ডুবে যায় ফুল তোলা পুরোনো বালিশ।
বাসস্থান অতঃপর অবশিষ্ট কিছুই থাকে না
জলপ্রিয় পাখিগুলো উড়ে উড়ে ঠোঁট থেকে মুছে ফেলে বাতাসের ফেনা।
[“বাতাসের ফেনা”, সোনালি কাবিন]
বাস্তব জীবনেও কবি গ্রাম-গঞ্জ-শহর ঘুরে ঘুরে বেড়িয়েছেন; দেশের অসংখ্য নদীতে সাঁতার কেটেছেন। তাই নদী, নদীভাঙন, তীরবর্তী গ্রামের মানুষ ও প্রকৃতি অর্থাৎ স্বদেশ তাঁর কবিতায় বিস্তৃৃত ও প্রাণবন্ত।
আল মাহমুদের স্বাদেশিকতা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। তিনি নগরবৈচিত্র্যের অন্তরালবর্তী এমন এক কবি, যার চেতনায় জীবন্ত সত্তার মতো বিরাজমান বাংলাদেশের জনপদ, তার আশা-আকাক্সক্ষা, অচরিতার্থতা ও বেদনার নিবিড় বিষয়াবলি। নাগরিক ঐশ্বর্যের প্রাণহীন পটভূমিতে তিনি অনুভব করেন তিতাসের মায়াবী প্রাণ-স্পন্দন। আর লোকজ উৎসের আঘ্রাণে তার শিল্পীমন ক্রমাগত স্বতন্ত্র ও উজ্জ্বল হয়ে উঠতে থাকে। এই কারণেই কবি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে চান। আল মাহমুদের মৌলিকতা ও নতুনত্ব গাঁয়ে অর্থাৎ স্বদেশে ফেরার পিপাসায় এবং অনিবার্য শব্দ-উপমা-চিত্রকল্পে সে পিপসার প্রকাশে। শৈশবস্মৃতির সঙ্গী কবি ‘তিতাসে’র কাছে ফিরে যেতে চেয়েছেন।
...শহরের
শেষ প্রান্তে যেখানে আমার ঘর, নরম বিছানা,
সেখানে রেখেছি দেহ। অবসাদে ঘুম নেমে এলে
আবার দেখেছি সেই ঝিকিমিকি শবরী তিতাস।
কী গভীর জলধারা ছড়ালো সে হৃদয়ে আমার।
সোনার বৈঠার ঘায়ে পবনের নাও যেন আমি
বেয়ে নিয়ে চলি একা অলৌকিক যৌবনের দেশে।
[“তিতাস”, লোক লোকান্তর]
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় শৈশবের নদীর দেশে, আবহমান বাঙালি অনুষঙ্গের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বাসনায় আকুল হয়ে নিজেকে স্মরণীয় করে তুলতে চেয়েছেন। আল মাহমুদের যাত্রা তৃষ্ণাময় এক পথে; সঙ্গী ঐতিহ্যময় বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশ আবহমান, সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানের সাথে সংলগ্ন, স্থানিক ও সংগ্রামী। প্রকৃতি ও মানুষের যূথবদ্ধ জীবনাচার ও জীবনাভিযানের লক্ষ্যে প্রত্যয়ী।
আল মাহমুদের কবিতায় কবিপুরুষের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে অর্থাৎ গাঁয়ের ছেলে যখন অনিবার্য প্রতিকূলতা জয় করে নিজ গ্রামে ফিরে আসে, তখন কৃষককুল বা ‘শস্যের শিল্পীরা’ অবাক হয়ে যায়। সে যে গাঁয়েরই সন্তান, সকলের লোক, তার স্বজনের মেলে দেয়া বিচালিতে বসতে লজ্জা থাকার কথা নয়। কিন্তু গাঁয়ের লোকের আন্তরিক আহ্বানে প্রত্যাগত পুরুষের বাধা আসে কৃত্রিম-নাগরিক পোশাকের কারণে। গ্রামীণ সংস্কৃতির বিপরীতে নয়া উপনিবেশবাদের সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গের জন্য সে ‘স্বজনের সাহচর্য’ আর ‘দেশের মাটির বুকে’র আত্মীয়তা থেকে বঞ্চিত। সে বন্দী ‘নিভাঁজ পোশাকে’র ‘এক নির্মম সেলাইয়ে’। কিন্তু প্রত্যাগত পুরুষকে এই বাধা জয় করতেই হবে, এবং যে জনপদকে কবি সৃষ্টি করেছেন আধুনিক মানচিত্রের শেকড়সন্ধানী প্রেরণায়, সেখানে পৌঁছার জন্য একটা প্রতীতি প্রতিষ্ঠিত করেছেন গভীরভাবে।
তোমাকে বসতে হবে এখানেই
এই ঠাণ্ডা ধানের বাতাসে।
আদরে এগিয়ে দেওয়া হুঁকোটাতে সুখটান মেরে
তাদের জানাতে হবে কুহলি পাখির পিছু পিছু
কতদূর গিয়েছিলে পার হয়ে পানের বরজ!
[“খড়ের গম্বুজ”, সোনালি কাবিন]
নিজস্ব আশ্রয়ে ফিরে এসে প্রত্যাগত যুবককে কৈফিয়ত দিতে হয় আপন স্বজনের কাছে, নগর সভ্যতার প্রতীক যে নিভাঁজ পোশাক, ছদ্মবেশী কোকিল আর শকুন তাদের প্রতারণায় কিভাবে গ্রামীণ সভ্যতার প্রতীক ‘সবুজ লতা’ সে হারিয়ে এসেছে। ছায়া ও পল্লবের ঘ্রাণহীন নগর থেকে অকৃত্রিম বিশাল বাংলাদেশে কবির প্রত্যাবর্তন তাই বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। তবে আল মাহমুদ জীবনানন্দ দাশ ও জসীমউদ্দীনের গ্রামীণ নিসর্গ, জনপদ ও জীবন চিত্রণের ভঙ্গি অনুসরণ করেননি এবং গ্রামীণ বাংলায় তাদের পথে ফিরে আসেননি। বরং তিনি জয়নুল, কামরুল ও সুলতানের দৃষ্টিভঙ্গি ও পদ্ধতি অনুসরণ করেন। এই স্থানিক আবহমানতা নিয়ে কবি প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। আল মাহমুদের মৌলিকতা এবং স্বাদেশিকতা সেই আবহমান বাংলায় ফেরার পিপাসায় এবং প্রত্যাবর্তনের লজ্জায়। আল মাহমুদের কবিতায় স্বাদেশিক বোধ নিজ দেশের মৃত্তিকা, জল, হাওয়া, কৃষক, কৃষিব্যবস্থা, নদী-নৌকা-জেলে, পশুপাখি এবং মানুষ, মানুষের সমাজ-সংস্কৃতি-রাজনীতি-অর্থনীতি, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত-শান্তি, সমকালীন বাস্তবতা থেকে উত্থিত। আবার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে বর্তমানের যোগসূত্রে এই মনোভাব প্রকাশিত।্ ঔপনিবেশিক চিন্তা-চেতনার শৃঙ্খলের বাইরে এসে স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশে তার স্বাদেশিকতার স্বাতন্ত্র্য বিশেষত্বপূর্ণ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা