১৭ জুন ২০২৪
`
সালেম সুলেরী

নজরুল ও আদি-অনাদি

-

জন্ম আর মৃত্যুর বাঁধনে এক অদ্ভুত অভূত সেতুবন্ধ-
বর্ধমান চুরুলিয়া থেকে ঢাকার বৈভবী বিদ্যাতীর্থে,
সদ্যমুক্ত বিশুদ্ধ বাংলাদেশে
সীমানার দুই পাশে, প্রত্যন্ত প্রবাসে অসীম সাহসে
এখনও শাসন করো অগ্নিবীণা-ছোঁয়া রাজ্যপাট।

সাম্যবাদ-সর্বহারার ভাঙার গান;
রুদ্রবীণার ঝংকারময় কবিতা-প্রলয় শিখা!
তাতে ফের পাখার বাতাস,
এই যে বিপ্লব বাতায়ন, কোমলে-মধুরে-শিল্পে
বরফ গলার জাদুমন্ত্রে, স্নিগ্ধ স্বরলিপি হয়ে
দোলালে দোলনচাঁপা, ছায়ানট, পূবের হাওয়া।

ঝিঙে ফুলের শৈশবে,
রুটি-ডলা লিচুতলা লেটো-ভোলা মাভৈ মাভৈ সব
হৃদয়বৃত্তির চিত্তনামা,
শিউলিমালা বা মধুমালা-গীত শতদল-সঞ্চয়িতা, সুসংহিতা
জীবনে না মেলা অংকে অংকিত মরু-ভাস্কর,
রাজবন্দীর জবানবন্দী--
এবার তোমাকে বলি কবি নজরুল--
দারিদ্র্য ও মৃত্যুক্ষিদে চিনতে বলেছো, আমরা চিনেছি।
স্বাধীনতার লাগাম ধরা ‘ভগবান’কে তাড়াতে বলেছো,
আমরাতো হারিয়েছি সেইসব দানব অন্ধকারকে।

আমাদের করতলে মুক্তিযুদ্ধের বিষেরবাঁশি,
বিজয় পতাকা,
আমাদের মুক্ত চোখে রুদ্র মঙ্গলের স্বপ্ন,
গুলবাগিচার শতদল-- ছুঁতে চাই কিন্তু
রিক্তের বেদন, কুহেলিকা, চক্রবাক, দুর্দিনের যাত্রী,
তারাও মননে বাঁধনহারা, বারবার ফিরে ফিরে আসে।

সন্ধ্যা’র জিঞ্জির, চরের চাতক দেখো নতুন সংস্করণে
ধূমকেতু হয়ে আসে আর পাঠ করে
দারিদ্র্যের শাশ্বত কবিতা। সৈনিকত্বে বিবমিষা,
মান্ধাতার বিষ-তৃষা।
আমরা জিতেও হেরে যাচ্ছি নজরুল,
কি অক্ষয় সেতুবন্ধ সুরক্ষায়
কি সমৃদ্ধি নদী-গ্রাম ভূ-রক্ষায়...
পুড়িব একাকী বলে কাঁদলে অথচ দেখো--
একযোগে পুড়ছি সবাই ।

মুক্ত বাংলায় এসে-তো দেখলে--
অবমুক্ত হলো না কণ্ঠের ব্যামো-ব্যাধি,
আজ শুধু, তুমি আর তোমার অর্জন পর্যন্তই আছি--
দারিদ্র্য-মহান স্বর্গে আদি ও অনাদি...।
জাতির হে ইতিহাসকাঁদা বীর, হে উন্নত মমশির,
জন্ম হোক যথাতথা, স্বাধীনবঙ্গে গড়েছি গৌরবসমাধি।


আরো সংবাদ



premium cement