বোশেখের ঝড়
- আহমদ আবদুল্লাহ
- ১৭ মে ২০২৪, ০০:০৫
মেঘের গুড়ুম গুড়ুম শব্দে সন্ধ্যা নামে। বৃষ্টি পড়ে রাতের আঁধারে। ভোর-সকালে আমবাগানে পড়ে রয় আমের মুকুল। প্রভাতের নির্মল আলো প্রবল বাতাসে উবুড় হয়ে থাকে। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আসে বোশেখের আগমনীবার্তা, যার শুরুটা হয় দুর্যোগের ঘনঘটা দিয়ে। আনন্দ বেদনায় রূপান্তরিত হয় যখন তখন। নিরস-নিরুদ্যম কেটে যায় সারাবেলা। পথঘাট থাকে কাদাজলে একাকার। বেরোনোর তাগিদ হারাতে হয় যেকোনো সময়। আকস্মাৎ ঝড়ের মধ্যে বিদ্যুৎ চমকে আলোকিত হয় চারপাশ।
ঝড় আসে মানব মনে দ্রোহের বার্তা নিয়ে। প্রেমিকের অন্তর সাধনায় বিশ্বাস ও প্রেমের যোগসূত্র আনয়ন করে এই বৈশাখ। চৈত্রের রোদ্দুরে জীবন যখন মৃতপ্রায়, তখনই মরুপ্রান্তর সিক্ত হয় বোশেখের ঝড়ে। কিন্তু বোশেখের ঘূর্ণিঝড় দুঃখ-বেদনা জাগিয়ে তোলে বহুগুণ। প্রকৃতির পালাবদলে পরিবর্তন ঘটে সব দিকে। শত-সহস্র বসতি ভেঙে চুরমার হয় আকস্মিকভাবে। অসহায়রা বোশেখ শেষে মাথা গোঁজার ঠাঁই খোঁজে। লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি-ভিটার ওপর নতুন করে খুঁটি বসায়। তৈরি করে নতুন ঘর, নতুন বাসস্থান। কিন্তু যখন তারা স্থায়িত্বের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, তখন পুরো জোর দিয়ে কাজে মন বসাতে পারে না প্রেমিক-প্রেমিকাদের মতো। যখন কেউ বিশ্বাস-অবিশ্বাসের পথে পা বাড়ায়, তখন এভাবে হোঁচট খায় প্রতিনিয়ত। সম্পর্ক হয়ে পড়ে নড়বড়ে। কোনো রকম বেড়া-চাল দিয়ে দুঃখ-কষ্টে বাঁচাতে হয় সেই মায়ার বাঁধন। কিন্তু পূর্ণতা আর পাওয়া হয়ে ওঠে না।
বোশেখের দিনগুলোতে শোনা যায় না পাখিদের কলতান। ঘূর্ণিঝড়ে হারিয়ে ফেলে কল্লোল ধ্বনি। বিরামহীন বৃষ্টির পানিতে গাছের শাখায় পাখা জাপটে বসে থাকে পক্ষীকুল। মনমরা কবিরা তাকিয়ে রয় আঁধার গগনে। কলম থেকে আছড়ে পড়ে বেদনা মিশ্রিত কাব্যমালা। হঠাৎ করে কবির কপালে বৃষ্টি ফোঁটা গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সে দিকে নেই তার তোয়াক্কা। বিষণœ মনে ভাবে কবি নিষ্ঠুর বোশেখের আগমন। তবে এই নিষ্ঠুরতার পর আসে খুশির আকুলতা। স্থায়ী নয় বোশেখের দুঃখবহ দিনগুলো। সময়ের ব্যবধানে পরিবর্তন হয় সবকিছু। বোশেখ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, কষ্টের ভেতরও দাঁড়াতে হয় শক্ত পায়ে, মনোবল আর শক্তি-সাহস নিয়ে। তাহলেই আশার প্রদীপ জ্বলে উঠবে কোনো একদিন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা