১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ন্যায়বিচার ও ইসলামী ভ্রাতৃত্ব

-


হজরত ওমর রা:-এর শাসনামল। একদিন দু’জন লোক এক বালককে টেনে ধরে নিয়ে এলো তার দরবারে। ওমর রা: তাদের কাছে জানতে চাইলেন যে, ‘ব্যাপার কি, কেন তোমরা একে এভাবে টেনে এনেছ?’ তারা বলল, ‘এই বালক আমাদের বাবাকে হত্যা করেছে।’
ওমর রা: বালকটিকে বললেন, ‘তুমি কি সত্যিই তাদের বাবাকে হত্যা করেছ?’ বালকটি বলল, ‘হ্যাঁ, আমি হত্যা করেছি তবে তা ছিল দুর্ঘটনাবশত, আমার উট তাদের বাগানে ঢুকে পড়েছিল তা দেখে তাদের বাবা একটি পাথর ছুড়ে মারল, যা উটের চোখে লাগে। আমি দেখতে পাই যে, উটটি খুবই কষ্ট পাচ্ছিল। যা দেখে আমি রাগান্বিত হই এবং একটি পাথর নিয়ে তার দিকে মারি, পাথরটি তার মাথায় লাগে এবং সে মারা যায়।’
ওমর রা: দু’ভাইকে বললেন, ‘তোমরা কি এ বালককে ক্ষমা করবে?’ তারা বলল, ‘না, আমরা তার মৃত্যুদণ্ড চাই।’ ওমর রা: বালকটির কাছে জানতে চাইলেন, ‘তোমার কি কোনো শেষ ইচ্ছা আছে?’

বালকটি বলল, ‘আমার আব্বা মারা যাওয়ার সময় আমার ছোট ভাইয়ের জন্য কিছু সম্পদ রেখে যান, যা আমি এক জায়গায় লুকিয়ে রেখেছি। আমি তিন দিন সময় চাই, যাতে আমি সেই জিনিসগুলো আমার ভাইকে দিয়ে আসতে পারি। আমার কথা বিশ্বাস করুন।’
ওমর রা: বললেন, ‘আমি তোমাকে বিশ্বাস করতে পারি যদি তুমি একজন জামিন জোগাড় করতে পারো, এ নিশ্চয়তা দেবে যে তুমি ফিরে আসবে।’ বালকটি দরবারের চারদিকে তাকাল এত মানুষের মধ্যে কেউই তার জামিন হলো না। সবাই নিচের দিকে তাকিয়ে রইল।
হঠাৎ দরবারের পেছন থেকে একটি হাত উঠল। কার হাত ছিল এটি? প্রখ্যাত সাহাবি আবু যর গিফারি রা:, তিনি বললেন, ‘আমি তার জামিন হবো’। চিন্তা করুন জামিন মানে হলো- যদি বালকটি ফিরে না আসে তবে আবু যর গিফারি রা:-এর শির-েদ করা হবে। সুতরাং বালকটিকে ছেড়ে দেয়া হলো। একদিন গেল, দ্বিতীয় দিনেও বালকটি এলো না, তৃতীয় দিনে দু’ভাই আবু যর গিফারি রা:-এর কাছে গেল।
আবু যর রা: বললেন, ‘আমি মাগরিব পর্যন্ত অপেক্ষা করব।’ মাগরিবের কিছুক্ষণ আগে আবু যর গিফারি রা: দরবারের দিকে রওনা হলেন। মদিনার লোকজন তার পেছনে পেছনে যেতে লাগল। সবাই দেখতে চায় কী ঘটে। আবু যর রা: একটি বালকের ভুলের কারণে আজ জীবন দিচ্ছেন। হঠাৎ আজানের কিছুক্ষণ আগে বালকটি দৌড়ে এলো। লোকেরা সবাই অবাক।

ওমর রা: বললেন, ‘হে বালক তুমি কেন ফিরে এসেছ? আমি তো তোমার পেছনে কোনো লোক পাঠাইনি। কোন জিনিসটা তোমাকে ফিরিয়ে আনল?’
বালকটি বলল, ‘আমি চাই না যে, কেউ বলুক একজন মুসলিম কথা দিয়েছিল কিন্তু সে তা রাখেনি, তাই আমি ফিরে এসেছি।’ ওমর রা: আবু যর রা:-কে বললেন, ‘হে আবু যর তুমি কেন এই বালকের জামিন হলে?’
আবু যর রা: বললেন, ‘আমি দেখলাম একজন মুসলমানের সাহায্য প্রয়োজন, আমি চাই না যে, কেউ বলুক একজন মুসলমানের সাহায্য প্রয়োজন ছিল কিন্তু কোনো মুসলমান তাকে সাহায্য করেনি।’
এ কথা শুনে দুই ভাই বলল, ‘আমরাও চাই না যে, কেউ বলুক একজন মুসলমান ক্ষমা চেয়েছিল কিন্তু অন্য মুসলমান তাকে ক্ষমা করেনি।’ তারপর বালকটি মুক্তি পেল।
লেখক : তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা,যাত্রাবাড়ী, ঢাকা

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
ইসরাইলের সাথে সঙ্ঘাতে আগ্রহী নন সিরিয়ার নতুন নেতা সাবেক ফুটবলার কাভেলাশভিলিই জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট ঘড়ির সময় বদলাতে চান না ট্রাম্প ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াতে অস্ত্র বাংলাদেশ : ওয়েইসি সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র খেয়ালখুশিমতো খরচ হয়েছে জলবায়ু তহবিলের অর্থ গুমে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন : র‌্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ আরাকানে সাড়ে ৪ শ’সেনা নিহত, জান্তার নিয়ন্ত্রণ শেষ বিপাকে রোহিঙ্গারা ভারতসহ সাত ‘অসহযোগী’ দেশের তালিকা ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের সিরীয়রা স্বাধীনতা উদযাপনের সময় দামেস্কে ইসরাইলের হামলা আগামীতে সবাইকে নিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে

সকল