সালাম, ইসলামী সম্ভাষণ রীতির উৎকৃষ্ট উদাহরণ
- আদিয়াত উল্লাহ
- ১৫ জুন ২০২৪, ০০:০৫, আপডেট: ১৮ জুন ২০২৪, ০৬:৩২
সালাম ইসলামী সংস্কৃতিতে বিদ্যমান গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গগুলোর অন্যতম। ইসলামে প্রত্যেক মুসলিমের মধ্যে সালাম আদান-প্রদানের ব্যাপক প্রচলনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইসলামী সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ সালাম আভিধানিক অর্থ- হুকুম, সালামের মাসনুন শব্দসমূহ, সালামের জবাবের মাসনুন শব্দসমূহ ও সালাম ব্যতীত অন্য সংস্কৃতির সম্ভাষণসমূহ ব্যবহারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি ও সালাম আদান-প্রদানের গুরুত্ব জানা দরকার।
‘সালাম’ শব্দটি আরবি। বাংলায় এর আভিধানিক অর্থ দাঁড়ায় ‘শান্তি কামনা করা’, ‘নিরাপত্তা কামনা করা’ প্রভৃতি। ‘সিলম’ শব্দধাতু থেকে শব্দটির উৎপত্তি। এ শব্দধাতু থেকে উদ্ভূত ‘ইসলাম’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ দাঁড়ায় ‘আত্মসমর্পণ করা’, ‘ইসলাম গ্রহণ করা’ প্রভৃতি। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আর যখন তোমরা সম্ভাষিত হও কোনো সম্ভাষণ শব্দ দ্বারা, তখন তোমরা সম্ভাষণ জানাও তার থেকে উত্তম সম্ভাষণের শব্দ দ্বারা অথবা তাই ফিরিয়ে দাও’ (সূরা নিসা-৮৬)।
নবী করিম সা: বলেছেন, ‘অপর মুসলিমের উপর একজন মুসলিমের ছয়টি কর্তব্য রয়েছে : অসুস্থ হলে তার সেবা করবে, আর সে মারা গেলে তার নিকট উপস্থিত, ডাক দিলে তার জবাব দেয়া এবং সাক্ষাতে সালাম দেয়া, হাঁচি দিলে জবাব দেয়া এবং অনুপস্থিত ও উপস্থিত সর্বাবস্থায় তার কল্যাণ কামনা করবে’ (বুখারি ও মুসলিম)।
জান্নাতিদের একে অপরের মধ্যে সম্ভাষণের মাধ্যম হবে সালাম। জান্নাতিরা একে অপরকে সালাম দেবেন এবং আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর ফেরেশতারা তাদেরকে সালাম জানাবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘সেখানে তাদের প্রথম কথা হবে- পবিত্রতা আপনার হে আল্লাহ এবং তাদের সম্ভাষণ হবে সালাম। আর তাদের শেষ কথা হবে এটিই যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য’ (সূরা ইউনুস-১০)।
সম্ভাষণে সালামের পরিবর্তে অন্য শব্দ ব্যবহার করা মাকরুহ। কোনো অমুসলিমকে সালাম দেয়া জায়েজ নেই। তবে কোনো মজলিসে মুসলিম-অমুসলিম একসাথে বসলে তখন তাদেরকে ‘আসসালামু আলা মানিত্তাবাআল হুদা’ বলে সালাম দেবে।
কখন সালাম দেয়া মাকরুহ : দিনে ও রাতে কয়েকটি সময় আছে যখন সালাম দেয়া মাকরুহ।
১. নামাজ পড়া অবস্থায় কোনো ব্যক্তিকে সালাম দেয়া উচিত নয়;
২. প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়া অবস্থায়;
৩. অজুরত অবস্থায়;
৪. খাওয়ার সময়;
৫. কুরআন তিলাওয়াত করা অবস্থায়;
৬. জিকির ও মোরাকাবারত অবস্থায়;
৭. ওয়াজ ও নসিহত শোনা অবস্থায়;
৮. দ্বীনি শিক্ষার মজলিসে মশগুল ব্যক্তিকে অবস্থায় সালাম দেয়া উচিত নয়;
৯. আজানরত অবস্থায়;
১০. জরুরি হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত থাকা অবস্থায়।
সালাম দেয়া সুন্নাত হলেও এর জবাব দেয়া ওয়াজিব।
সালাম দেয়ার মাসনুন বাক্যসমূহ : সালাম দেয়ার জন্য বিভিন্ন মাসনুন বাক্য হাদিস থেকে পাওয়া যায় :
১. আসসালামু আলাইকুম;
২. সালামুন আলাইকুম;
৩. সালামুন আলাইকা;
৪. আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ;
৫. আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
সালামের জবাব দানের কুরআন সুন্নাহ-ভিত্তিক মূলনীতি হলো সালামের শব্দসমূহ থেকে এক শব্দ বৃদ্ধি করা। সালামের জবাবদানের অনেকগুলো মাসনুন বাক্য রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন হাদিসের আলোকে সুন্নত হিসেবে সাব্যস্ত :
১. ওয়া আলাইকুমুস সালাম;
২. আলাইকুমুস সালাম;
৩. আলাইকাস সালাম;
৪. ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ;
৫. ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু;
৬. ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু ওয়া মাগফিরাতুহু।
লেখক : শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা