আল্লাহর পরিচয় ও আমাদের সংস্কৃতি
- নাজমুল হুদা মজনু
- ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫, আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৬
কুরআনুল কারিমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এমন কিছু কাহিনী ও ঘটনা বর্ণনা করেছেন আসমানি ওহি ছাড়া কারো পক্ষে সেই জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব নয়। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সা:-কে আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমের মাধ্যমে সেই নিগূঢ় তত্ত্ব ও তথ্য অবগত করেছেন। যেমন সূরা কাহাফে গুহাবাসী আসহাবে কাহাফের বর্ণনা করেছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন, এরপর বনি ইসরাইলের নবী মুসা ও খিজির আ: এবং বাদশাহ জুলকারনাইনের অপূর্ব কাহিনী তুলে ধরেছেন। অন্য দিকে আল্লাহ তায়ালা সূরা ইউসুফের মাধ্যমে ইউসুফ আ:-এর জীবনে নারীর ফিতনা ও ভাইদের ষড়যন্ত্র এবং বাদশাহী লাভের অনন্য দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন।
আল্লাহ জাল্লা শানুহ কুরআনুল কারিমে বলেছেন- ‘অবশ্যই (অতীতের) জাতিগুলোর কাহিনীতে জ্ঞানবান মানুষের জন্য অনেক শিক্ষা রয়েছে, (কুরআনের) এসব কথা কোনো মনগড়া গল্প নয়; বরং এ হচ্ছে তারই স্পষ্ট সমর্থন যে, আসমানি কিতাব তাদের কাছে আগে থেকেই মজুদ রয়েছে এবং (তাতে রয়েছে) প্রতিটি (মৌলিক) বিষয়ের বিস্তারিত ও সঠিক ব্যাখ্যা, (সর্বোপরি এতে রয়েছে) ঈমানদার মানুষের জন্য হেদায়াত ও রহমত।’ (সূরা ইউসুফ-১১১)
আমাদের সমাজে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী তথা কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীর মধ্যে নানা ধরনের উপজীব্য-কাহিনী শুনতে এবং পড়তে বেশ আগ্রহ দেখা যায়। সেই সুযোগে কিছু স্বার্থান্বেষী লেখক-লেখিকা রয়েছেন তাদের মগজ ধোলাইয়ে তৎপর। গল্প-উপন্যাসের নামে পত্রপত্রিকা ও বিভিন্ন চটকদার বই-পুস্তক এবং ইদানীং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কল্পকাহিনী রচনা করে সমাজকে কলুষিত করার বীজ বপন করে যাচ্ছেন। সেই সাথে অশ্লীলতার চাষাবাদ করে সস্তা বিনোদন ও জনপ্রিয়তা কুড়াতে ব্যস্ত রয়েছেন।
একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, যুবসমাজের মধ্যে সবসময় কিছু জানার ও বোঝার আগ্রহ তাদের সহজাত প্রবৃত্তি। তারা মন-মননে সতত সজীব ও সতেজ। কিন্তু তাদের এই কোমল মনে সত্য সুন্দর নির্মল আনন্দের খোরাক জোগাতে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই ব্যর্থ। কেবল এ কথা বলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, যুবসমাজের অবক্ষয়ে সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে; বরং মহান স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পরিচয় এবং আমাদের নিজস্ব সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশে উদ্যোগ নিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, আল্লাহ তায়ালার সাহায্য ছাড়া কোনো কাজ সুসম্পন্ন করা সম্ভব নয়। নৈতিক শিক্ষা ছাড়া প্রতিভার সুষ্ঠু বিকাশ সুদূর পরাহত। আমাদের আসল সংস্কৃতি জানতে ও বুঝতে সন্তানদের জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ কুরআনের শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে তুলতে হবে। এক আল্লাহ তায়ালাই যে সবার স্রষ্টা, সব কিছুরই নিয়ন্ত্রক, দুনিয়া ও আখিরাতের মালিক; একমাত্র আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করার জন্যই যে আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে- এই মৌলিক বিশ্বাস তাদের কোমল মনের মণিকোঠায় শৈশবেই অঙ্কন করে দিতে হবে।
কুরআন মাজিদে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা:-কে লক্ষ্য করে বলেছেন- ‘(হে নবী, এদের) তুমি জিজ্ঞেস করো, আসমানগুলো ও জমিনের মালিক কে? তুমি (তাদের) বলো, একমাত্র আল্লাহ তায়ালা, (আরো) বলো, তোমরা কেন আল্লাহকে বাদ দিয়ে অপরকে নিজেদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করছ, যারা নিজেদের কোনো লাভ-লোকসান করতে সক্ষম নয়; তুমি (এদের) জিজ্ঞেস করো, কখনো অন্ধ ও চক্ষুষ্মান ব্যক্তি কি সমান হয়, কিংবা অন্ধকার ও আলো কি কখনো সমান হয়? অথবা এরা আল্লাহর সাথে এমন কিছুকে শরিক করে নিয়েছে যে, তারা আল্লাহর সৃষ্টির মতো (কিছু) বানিয়ে দিয়েছে, যার কারণে সৃষ্টির ব্যাপারটি তাদের কাছে সন্দেহের বিষয়ে পরিণত হয়ে গেছে; তুমি তাদের বলো, যাবতীয় সৃষ্টির স্রষ্টা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা, তিনি একক ও মহাপরাক্রমশালী।’ (সূরা আর-রা’দ-১৬)
আমরা অনেকেই ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসির আমল করে থাকি। কেননা, যে ব্যক্তি ফরজ সালাতের পরে আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করবে মৃত্যু হলেই সে জান্নাতি। সুবহানাল্লাহ! কেবল মুখস্থ পাঠ করাই শুধু নয়; এর অর্থ উপলব্ধি করে আল্লাহর পরিচয় লাভ করা আমাদের জন্য জরুরি।
কুরআনুল কারিমের আয়াতুল কুরসিতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর আত্মপরিচয় তুলে ধরেছেন : আল্লাহ! তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি স্বাধীন ও সব কিছুর ধারক। তন্দ্রা ও নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করে না, নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই তাঁর। কে আছে এমন, যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করতে পারে? সম্মুখের অথবা পশ্চাতের সবই তিনি অবগত আছেন। একমাত্র তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারে না। তাঁর আসন আসমান ও জমিনব্যাপী বিস্তৃত এবং এ দুইয়ের সংরক্ষণে তিনি ক্লান্ত হন না। তিনিই সর্বোচ্চ ও মহীয়ান।
লেখক : সাংবাদিক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা