ফরিদপুরে রাসেল ভাইপারের কামড়ে কৃষকের মৃত্যু, অন্য দুটি পিটিয়ে মারা হলো
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ২১ জুন ২০২৪, ১৭:৫৯
ফরিদপুরের নর্থচ্যানেলের দুর্গম চরে বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২১ জুন) সকাল ১১টার দিকে ফরিদপুরের বিএসএমএমসি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এছাড়া পার্শ্ববর্তী ডিক্রিরচরে আজ শুক্রবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার দুই দিনে দুটি রাসেল ভাইপার সাপ দেখতে পেয়ে সেগুলো পিটিয়ে মেরেছে গ্রামবাসী।
জানা গেছে, সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৮ দাগ এলাকায় রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর আজ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে হোসেন ব্যাপারি (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই এলাকার পরেশউল্লা ব্যাপারির ছেলে।
খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি মেম্বার হেলালউদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে হোসেন ব্যাপারিকে সাপে কামড়ায়। পরে তাকে ট্রলারযোগে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। তার আগেই আজ শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, শুক্রবার সকালে ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের আইজউদ্দীন মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামে ক্ষেতে কাজ করার সময় একটি রাসেল ভাইপার সাপ দেখতে পান ওই গ্রামের তোতা মোল্লার ছেলে মুরাদ মোল্লা (৪৫)।
মুরাদ মোল্লা বলেন, সকালে বাদামের জমিতে কাজ করার সময় সাপটি নজরে পড়ে। এরপর লাঠি এনে তিন-চারটি বাড়ি মেরে সাপটি মেরে ফেলি। আগের দিন ওই গ্রামের হারুন শেখের ছেলে ইউসুফ আরো একটি রাসেল ভাইপার সাপ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে বলে জানান তোতা মোল্লা।
খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে ডিক্রিরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আবু ফকির বলেন, সম্প্রতি ওই এলাকায় রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মাঝেমধ্যেই তারা এই সাপ দেখতে পাওয়ার খবর পাচ্ছেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২০ জুন) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক এবং সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এক প্রস্তুতিসভায় রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রবে চরাঞ্চলের মানুষের উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে রাসেল ভাইপার সাপ মারতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা করেন। তারা বলেন, কেউ একটি রাসেল ভাইপার সাপ মারতে পারলে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হবে। যতগুলো সাপ মারবে, ততবার এই পুরস্কার দেয়া হবে।
এব্যাপারে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃদ্বয়ের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। তবে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নিয়াজ আহমেদ সজিব বলেন, যিনি বা যারা ওই সাপগুলো মেরেছেন তারা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করলে তাদের ঘোষিত পুরস্কারের অর্থ প্রদান করা হবে।
ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া জানান, যেকোনো বন্য প্রাণী নিধন আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ। রাসেল’স ভাইপার এ দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। ২০১৪ সাল থেকে আবার সাপটির দেখা যাচ্ছে। এ সাপের বংশবৃদ্ধির হার বেশি। একবারে একটি মা সাপ ৬০ থেকে ৭০টি বাচ্চা দেয় এবং প্রায় সবক’টি বেঁচে যায়। এ সাপ সাধারণত চর এলাকায় থাকে এবং ব্যাঙ, ইঁদুর খেয়ে বাঁচে।
তিনি আরো বলেন, ‘পুরস্কারের ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ ওই সাপ ধরতে অথবা মারতে গিয়ে যদি সাপের কামড়ে মারা যায়, তবে এ দায় কে নেবে? বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে দেখুন, সাপের কামড়ে কতজন মারা গেছেন? উল্লেখযোগ্য কোনো সংখ্যা পাওয়া যাবে না। এর চেয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অনেক বেশি লোক মারা যান।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা