সখীপুরে হেভিওয়েট প্রার্থীদের পরাজিত করে চমক দেখালেন অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদ
- মুহাম্মদুল্লাহ, সখীপুর (টাঙ্গাইল)
- ০৭ জুন ২০২৪, ০৯:৪৪
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থীদের পরাজিত করে চমক দেখিয়েছেন অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদ। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে তিনি ১৮ হাজার ৩৭৯ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়াও মোট ৮৩টি ভোটকেন্দ্রের ৬৬ কেন্দ্রেই তিনি হেভিওয়েট প্রার্থীদের পেছনে ফেলে বিপুল ভোটে এগিয়ে আছেন।
তার কাছে পরাজিত হয়েছেন সাবেক ২ বারের উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি শওকত শিকদার, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক ২ বারের মেয়র সানোয়ার হোসেন সজিব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক রফিক ই রাসেল, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি (বহিস্কৃত) ফারুক হোসেন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলমগীর হোসেন চান।
শওকত শিকদারকে আবারো বিজয়ী করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচনী মাঠে বেশ সরব ছিল। কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ মনোনীত প্রার্থী সানোয়ার হোসেন সজিবকে জেতাতে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী নিজে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামেগঞ্জে চষে বেড়িয়েছেন।
ভোটের সব সমীকরণ পাল্টে দিয়ে অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদের এমন বিজয়কে অনেক বড় সাফল্য হিসাবে দেখা হচ্ছে।
সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বোয়ালী কলেজের অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদ এর আগেও ২০১৪ সালে টাঙ্গাইল–৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু স্বাক্ষরে সমস্যা দেখিয়ে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। শুধু তা-ই নয়, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করায় ওই সময় তাকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়। ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হয়ে সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হন। ওই বছরও তাকে একই কারণে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে সাধারণ ক্ষমা করে দলে ফিরিয়ে নেয়া হয়।
সবশেষ ২০২৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও নিজের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস এবং তার প্রতি ভোটারদের আগ্রহ দেখে তিনি নির্বাচনে এসে হেভিওয়েট প্রার্থীদের পরাজিত করে আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।
অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদ ভোটপূর্ব প্রায় প্রতি পথসভায় বলতেন, আমি সখীপুরের রাজনীতিতে সবচেয়ে অবহেলিত ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রার্থী। আমি যোগ্য ও ভোটারদের পছন্দনীয় মানুষ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে নির্বিঘ্নে নির্বাচন করতে দেয়া হয় না। এবার কোনো দলীয় প্রতীক নেই, আপনারা আপনাদের পছন্দের এই প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।
সাঈদ আজাদ আরো বলতেন, আমি সুখে-দুঃখে সখীপুরের মানুষের পাশে থেকেছি এবং মৃত্যু পর্যন্ত থাকব। আমার ওপরে অনেক অবিচার ও জুলুম হয়েছে। তবুও আমি সখীপুরের মানুষের কথা ভেবেছি। আমি সখীপুরকে একটি আদর্শ উপজেলা গঠনের স্বপ্ন দেখেছি এবং এখনো দেখছি। আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণের সুযোগ দিন।
ভোটাররা অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সখীপুরকে একটি আদর্শ উপজেলা গঠনের সুযোগ দিয়েছে। তিনি ভোটারদের আকাঙ্খা ও প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পারেন সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। কথা কাজে মিল থাকলে তার জন্য আরো বড় সুযোগ অপেক্ষা করছে সন্দেহ নেই।
উল্লেখ্য, ৫ জুন (বুধবার) সকাল ৮ থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সখীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হয়। সখীপুরে মোট ভোটার আছে ২ লাখ ৪০ হাজার ৩২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৫৪ জন, নারী ১ লাখ ২০ হাজার ৫৭৩ ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার দুজন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন পাটোয়ারীর দেয়া তথ্যমতে সখীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা