গাজীপুরে কলেজছাত্র খুন
- মোহাম্মদ আলী ঝিলন, গাজীপুর
- ০৬ জুন ২০২৪, ২২:২৬
গাজীপুরে কলেজের র্যাগ-ডে উৎসবকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার জেরে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কালিয়াকৈর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার জাতির বাবা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম মো: আল আমিন হোসাইন (২০)। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার বরিয়াবহ গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে এবং ওই কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
কলেজ কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা জানায়, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার জাতির বাবা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে বুধবার কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদ কামাল ওরফে সোহানের নেতৃত্বে উচ্চ মাধ্যমিক পুরাতন দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিদায় অনুষ্ঠানের অনুমতি নিয়ে র্যাগ ডে পালন করে। র্যাগ ডে অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেয়া হয় প্রভাষক আবু হেনা সাজেদুল আলম ও আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন শিক্ষককে। ছাত্ররা ওই অনুষ্ঠানের দায়িত্বরত শিক্ষকদের সামনেই কলেজ ক্যাম্পাসে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে হৈহুল্লোড় করে। অনুষ্ঠানে শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেয় সোহান ও তার সহযোগীরা। একপর্যায়ে ওই কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
ওই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ও কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমন খান তার সহযোগী সাকিব হৃদয়, আকাশ ও হাসানসহ ১০-১২ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসের মাঠে স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিন হোসাইন ও কামরুলকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া দেয়। ধাওয়া খেয়ে দৌড়ে পালানোর সময় আল আমিন ও কামরুল কলেজের পশ্চিম পাশে ডাইনকিনি সড়কের শাহ মখদুম মার্কেটের সামনে গিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় হামলাকারী পৌর ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের এলোপাথাড়ি মারধর ও কুপিয়ে জখম করে। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে আল আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
কলেজের অধ্যক্ষ সুফিয়া বেগম বলেন, বুধবার শিক্ষার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে তাদের বিদায়ী অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল কোনো ধরনের র্যাগ ডে পালনের অনুমতি দেয়া হয়নি। অনুষ্ঠানে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার জের ধরেই একটি পক্ষ কলেজের একজন ছাত্রকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আরেক ছাত্র আহত হয়েছেন।
কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ এফ এম নাসিম জানান, কলেজের র্যাগ ডে পালনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হয়। সেই বিবাদের জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি পক্ষের হামলায় এক ছাত্র নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। হত্যাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা