ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ০১ জুন ২০২৪, ১৫:৫০
সদ্য সমাপ্ত ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী প্রার্থী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মো: মোখলেছুর রহমান সুমন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগে শুক্রবার (৩১ মে) রাতে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মোখলেছুর রহমান সুমন এ দাবি করেন।
এ ব্যাপারে তিনি এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিক সম্মেলনে মোখলেছুর রহমান সুমন বলেন, প্রকাশ্যে সিল মেরে ব্যাপক জাল ভোট, ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতিটি কেন্দ্রেই অনিয়ম করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি কেন্দ্র থেকে আমার অ্যাজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। ভোটারদের ভোট দিতে আসতে দেয়া হয়নি। গুণ্ডাবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার একটি হাসপাতালে আরিফ মাতুব্বর নামে একজন কর্মী চিকিৎসাধীন আসেন। তার অবস্থা খুবই খারাপ।
তিনি বলেন, ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে হুমকি এমনকি প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর করে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষের লোকেরা। ভোটের আগের দিন তারা ২০ জন প্রিজাইডিং অফিসারদের নিয়ে গোপন মিটিং করেছে। আমরা রিটার্নিং অফিসারকে জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। আমাদের বিজয়কে তারা ছিনিয়ে নিয়েছে।
এ সময় তিনি ঘোষিত ফলাফলে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের গণনাকৃত ভোটের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার ভোটের ব্যবধানের তথ্য তুলে ধরে বলেন, সবাইতো তিনটি করেই ব্যালট নিয়েছে। তাহলে চেয়ারম্যান ব্যালটের সাথে ভাইস চেয়ারম্যান ব্যালটের এতো ব্যবধান কেনো? বাকি ব্যালট কোথায় গেলো? এতেই বোঝা যায় কী পরিমাণ অনিয়ম হয়েছে।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে নির্বাচনে তুলনামূলক ভালো ভূমিকা দেখা গেলেও উপজেলা প্রশাসন ও নির্বাচন অফিস পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করেছে। আমরা তাদেরকে বারবার নানা অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগ দিলেও তারা আমলে নেয়নি। ভোটের দিন বেলা ১২টার দিকে আমি চারটি কেন্দ্র থেকে আমার অ্যাজেন্টদের বের করে দেয়াসহ প্রকাশ্যে সিল মারার অভিযোগ এনে এসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিতের দাবি জানিয়েছিলাম। তারা তাতে কর্ণপাত করেননি।তাই আমি ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে মোখলেছুর রহমান সুমন বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রেই অনিয়ম করা হয়েছে। আমি দাবি জানাচ্ছি, পুরো নির্বাচনের আবারো ভোটগ্রহণের। সেটি সম্ভব না হলে যে ১৭টি কেন্দ্রে বেশি কারচুপি ও অনিয়ম করা হয়েছে সেগুলোতে আবারো ভোটগ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে আশা করছি, নির্বাচন কমিশন সে আবেদনে সাড়া দিবে।
প্রসঙ্গত, ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন পাঁচজন। এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী চার ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছয়জন রয়েছেন। মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ৯৯টি। আর ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮ জন। নানা ঘটনা অঘটনের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষে দোয়াত কলম প্রতীকের কাউছার ভুঁইয়া ৬২ হাজার ৮৭০ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোখলেছুর রহমান সুমন ৫০ হাজার ৮৩০ ভোট পান বলে বেসরকারি ফলাফলে জানানো হয়।