ধামরাইয়ে তীব্র গরমে চাহিদা বেড়েছে তালের শাঁসের
- নবীন চৌধুরী, ধামরাই (ঢাকা) থেকে
- ২৫ মে ২০২৪, ১৫:৪৪, আপডেট: ২৫ মে ২০২৪, ১৬:১০
ধামরাইয়ে তীব্র গরমে চাহিদা বেড়েছে তালের শাঁসের। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খেতে সুস্বাদু তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে শহর-গ্রামের হাট বাজারে সর্বত্র। জৈষ্ঠ্য মাসের এমন গরমে শহর-গ্রামের বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে তাল বিক্রির ধুম পড়েছে। ১৫ টাকা থেকে শুরু করে মান ভেদে ৪০ টাকা পর্যন্ত একটি তাল বিক্রি হচ্ছে। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষের তৃষ্ণা মেটায় মিষ্টি তরল এসব তালের শাঁস। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তাল বিক্রি ও খাওয়ার পালা। আর তালের এমন কদর বাড়ায় লাভবান হচ্ছেন মৌসুমি ক্ষুদ্র তাল বিক্রেতারা।
তালের পাইকার শাওন ও সালাউদ্দিন জানায়, ধামরাই উপজেলা বিভিন্ন স্থানে ও পাশের উপজেলা সাভার ঘুরে ঘুরে তাল গাছ মালিকদের কাছ থেকে এসব তাল সংগ্রহ করা হয়। তারা গাছ হিসেবে একটি গাছে কতটি তাল রয়েছে, তার অনুমান করে মূল্য নির্ধারণ করে গাছ হিসেবে তাল কেনেন। গড়ে একটি গাছ থেকে ১৫০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকার তাল কেনা হয়। তারপর তা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন তারা।
ধামরাই এলাকার তাল বিক্রেতা মো: মমিন মিয়া বলেন, ‘তিনি আগে ফুটপাতে চায়ের দোকান করতেন। কিন্তু জৈষ্ঠ্য মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দোকান বন্ধ রেখে তাল বিক্রি শুরু করেছে। ভালো লাভ হচ্ছে তার।
তাল বিক্রেতা আশুলিয়া গোয়ালবাড়ি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, জৈষ্ঠ্য মাস আসলেই তাল বিক্রির ধুম পড়ে যায়। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে ব্যাপক চাহিদা তালের। তাল কাটার জন্য ভিন্ন লোক রেখেছেন বলেও জানান তিনি।
নীলফামারী থেকে আসা রুবেল হোসেন জানান, ‘আমরা তাল গাছ হিসেবে কিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ও ভ্যানে করে ধামরাই বাজার তাল বিক্রি করি।
তাল বিক্রেতা মো: সালাউদ্দিন জানান, কেউ এখানেই তালের শাঁস বের করে খায়। আবার কেউ বাড়িতে পরিবারের জন্য নিয়ে যান। দৈনিক তাল বিক্রি করে তার হাজার টাকা বা তারও বেশি লাভ থাকে।
তালের শাঁস খেতে আসা মানসুর হোসেন ও সাংবাদিক নবীন চৌধুরী বলেন, গরমে তালের শাঁস খাওয়ার মজাটাই আলাদা। যদিও এখন আর আগের মতো তাল গাছ দেখা যায় না। তারপরেও বাজারে তাল দেখে লোভ সামলানো দায়। তাই তালের শাঁস খেতে এসেছি এবং পরিবারের জন্য তালের শাঁস কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
তালের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা সম্পর্কে স্থানীয় পুষ্টিবিদ বলেন, ‘এ গরমে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ মানবদেহে পানি শূন্যতা দূর করে। এতে অনেকগুলো এ্যামাইনো এসিড থাকে, যা প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। একইসাথে ভিটামিন ও মিনারেলেরও উৎস এসব তালের শাঁস। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১ (থায়ামিন), বি২ (রিবোফ্লাভিন) এবং ক্যালসিয়াম, আয়রণ ও পটাশিয়ামের রয়েছে। তালে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় ওজন কমাতেও সাহয্য করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা আরিফুর রহমান ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, তাল একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। তাল গাছ আমাদের ভূমিক্ষয় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সাধারণত সড়কের দু’পাশে ও বিলের মাঝখানের অইলে তাল গাছ বেশি দেখা যায়। প্রকৃতিতে তাল গাছ টিকিয়ে রাখতে কৃষি বিভাগ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ করে প্রতি বছর তাল পাকার পর বীজগুলো সংগ্রহ করে চারায় রূপান্তর করে বিভিন্ন স্থানে রোপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা