১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের নামে মামলা

গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের নামে মামলা - ছবি : নয়া দিগন্ত

ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণামূলকভাবে গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সমিতির সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের নামে জিএমপি সদর থানায় মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ রাফিউল করীম বিষয়াটি নিশ্চিত করেন।

মামলার এফআইআরভুক্ত প্রধান তিন আসামি হলেন গাজীপুর বারের সাবেক (২০২৩-২০২৪) সভাপতি আহসান উদ্দিন প্রধান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সরকার ও সাবেক কোষাধ্যক্ষ মো: মিজানুর রহমান।

এর আগে মামলার বাদি জেলা আইনজীবী সমিতির কম্পিউটার অপারেটর সোহাগ রানা খানের পক্ষে গাজীপুরের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আরজি পেশ করেন সমিতির এডহক কমিটির সদস্যসচিব মো: সুলতান উদ্দিন। বিজ্ঞ সিএমএম অভিযোগটি এফআইআরভুক্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে পাঠানোর জন্য জিএমপি সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ রাফিউল করীম বৃহস্পতিবার নয়া দিগন্তকে জানান, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক মামলা রেকর্ড করে বৃহস্পতিবারই আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং এরইমধ্যে মামলার তদন্ত কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।

মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, বিগত ৫ মার্চ ২০২৩ থেকে ৫ মার্চ ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত আসামিদের কার্যকালীন সময়ে সমিতির সাধারণ তহবিল থেকে মোট চার কোটি ১৪ লাখ ৬১ হাজার ২৯৬ টাকা, বিল্ডিং ফান্ড হতে ১০ লাখ ২২ হাজার ৮৯৪ টাকা, বেনাভোলেন্ট ফান্ড হতে দুই কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৯ টাকা এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড হতে ৩৬ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৮ টাকা অর্থাৎ সমিতির পৃথক চারটি তহবিল থেকে সর্বমোট ছয় কোটি ৭২ লাখ ৯৫ হাজার সাত টাকা উত্তোলন করা হয়। অস্বাভাবিক এ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এডহক কমিটির সাধারণ সভায় সদস্যদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। ওই তদন্ত কমিটির এক নিরীক্ষায় অস্তিত্বহীন বিভিন্ন খাতে জাল ও ভূয়া বিল ভাউচারে এক কোটি ৯৪ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলে। এর পর বিগত কমিটির আলোচিত কর্মকর্তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু তাদের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় এবং আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করায় ওই তিন কর্মকর্তাকে সমিতির সদস্য পদ হতে অস্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া মামলার আরজিতে তাদের সহযোগী হিসেবে একই পরিষদের সাবেক লাইব্রেরি সম্পাদক মো: রওশন আলী ও সাবেক মহিলা সম্পাদক কল্পনা আক্তারের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাক্রমে সমিতির লাইব্রেরির আইন বই ক্রয়ের জন্য চার লাখ ও মহিলা কমনরুমের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য দুই লাখ সর্বমোট ছয় লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

সমিতির সদস্যরা জানান, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিন আগে এজিএম (বার্ষিক সাধারণ সভা) ও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করার কথা। গত ৭ মার্চ বিগত কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। এর আগে তারা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বার্ষিক সাধারণ সভা ও পরবর্তী কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেননি। এতে সমিতি পরিচালনায় সঙ্কট তৈরি হয়। এ সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য এক সাধারণ সভায় সর্বসস্মত সিদ্ধান্তক্রমে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সমন্বয়ে নয় সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটির আহ্বায়ক হলেন বারের সাবেক সভাপতি ও সদর মেট্রো থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো: ওয়াজ উদ্দিন মিয়া এবং সদস্য সচিব বারের সাবেক সভাপতি ও গাজীপুর পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো: সুলতান উদ্দিন।

অ্যাডভোকেট সুলতান উদ্দিন জানান, সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এডহক কমিটি তদন্ত করে সাবেক কমিটির সভাপতি, সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সমিতির ফান্ড থেকে এক কোটি ৯৪ লাখ টাকা আত্মসাতের সত্যতা পায়। ফলে বার কাউন্সিলের সিদ্ধান্তক্রমে সাবেক সভাপতি, সেক্রেটারি ও কোষাধ্যক্ষ এবং তাদের সহযোগী হিসেবে লাইব্রেরি ও মহিল সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবারই মামলাটি থানা থেকে এফআইআরভুক্ত হয়ে আদালতে এসে পৌছেছে এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তের জন্য আমাদের কাছে এসেছেন।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
এদিকে গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মো: আসলাম হোসেন এ তফসিল ঘোষণা করেন। এতে আগামী ২০ মে মনোনয়নপত্র দাখিল, ২১ মে যাচাই বাচাই, ২২ মে প্রত্যাহার ও ৩০ মে ভোট দানের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে বুধবার সাবেক পিপি ও বাবের সাবেক সভাপতি রফিক উদ্দিন আহমেদকে সভাপতিপ্রার্থী এবং বারের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বারিউল সিদ্দিককে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী করে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ মনোনীত সাদা প্যানেলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, বিগত ২০২৩ সালের ২ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে উল্লিখিত মামলার আসামিরা নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ মনোনীত ড. সহিদউজ্জামান ও মো: সিরাজুল ইসলাম নেতৃত্বাধীন নীল প্যানেলের সদস্যরা। পরে তারা পুন:নির্বাচনের দাবিতে আদালত পাড়ায় লাগাতার বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেন।


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে ৫৩ নাগরিকের উদ্বেগ ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে দুর্নীতি কে প্রশয় দেয়া হবে না : জাতীয় নাগরিক কমিটি ফতুল্লা থেকে অপহৃত ২ শিশু বরিশাল থেকে উদ্ধার মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করা শিক্ষককে চাকরিচ্যুতের দাবি টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তি ট্রাম্প আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য দিবসে রিকের র‌্যালি ও মানববন্ধন অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের সভাপতি হাসান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল চুয়েটে র‌্যাগিংয়ের দায়ে ১১ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ঢাকায় উচ্চমাত্রার হর্ন ব্যবহার না করতে ডিএমপির নির্দেশনা তামিমের ঝড়ে জয় পেল চট্টগ্রাম তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশা, কর্মকর্তা প্রত্যাহার

সকল