ভুট্টা চাষে নিরব বিপ্লব ঘটিয়েছেন আলফাডাঙ্গার দুর্গম চর অঞ্চলের চাষিরা
- এস, এম কোবাদ হোসেন, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর)
- ০৭ মে ২০২৪, ১০:৩৬
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার দুর্গম চর অঞ্চলে কম খরচে, কম পরিশ্রমে ফসল ঘরে তোলা যায় বলে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।
প্রমত্তা মধুমতির করাল গ্রাসে একাধিকবার বাপ দাদার ভিটা মাটি হারিয়ে জেগে উঠা চরে আশ্রয় নেয়া কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনুকূল আবহাওয়া, কম খরচে অধিক ফলন, অন্য ফসলের চেয়ে পরিচর্যা খরচ ও রোগ বালাই কম হওয়ায় ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।
আশা করা যায়, সরকারি সহযোগিতা ও কৃষি অফিসের পরামর্শ সহায়তা পেলে ভুট্টা চাষে চরাঞ্চলের চাষিরা বিপ্লব ঘটাবে। এমনটিই জানা গেল স্থানীয় ভুট্টা চাষিদের সাথে আলাপ করে।
এখন ভুট্টা মাড়াই মৌসুম চলছে। জমি থেকে ভুট্টা তুলে মাড়াই কাজে ব্যস্ত রয়েছেন আলফাডাঙ্গার কৃষাণ-কৃষাণীরা। চরাঞ্চলের বেলে দোআঁশ মাটি ভুট্টা চাষে বেশ উপযোগী। এ মাটিতে অন্য ফসল খুব একটা ভালো হয় না। ফলে বছরের পর বছর বিস্তীর্ণ এলাকা পতিত পড়ে থাকে। সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ বা সহযোগিতা পেলে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবে এ সকল কৃষক। ফলে এই অবহেলিত এলাকাই এক সময় অর্থকরী এলাকা হয়ে উঠবে। বহুমুখী ব্যবহার যেমন মানুষের খাদ্য, মৎস, হাঁস মুরগি ও গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে বাজারে ভুট্টার চাহিদা ও দাম দুই ভালো।
সরেজমিনে আলফাডাঙ্গার বিভিন্ন হাট বাজারে দেখা যায় প্রতি মণ ভুট্টা প্রকারভেদে ১২৫০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার ১ নম্বর বুড়াইছ ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামের ভুট্টা চাষি আসাদ মিয়া, ওসমান মিয়া ও আব্দুল গফফার অভিযোগের সুরে এ প্রতিবেদককে জানান, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত ভুট্টা চাষ দেখে আমরা ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হই। যে ভাবা সেই কাজ। কোনো রকম অভিজ্ঞতা ছাড়াই ভুট্টার আবাদ করে দ্বারস্থ হই উপজেলা কৃষি অফিসে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার সাহা খুবই ভালো লোক। তিনি ব্লক সুপারভাইজারকে ভুট্টা ক্ষেত পরিদর্শন করে সঠিক পরামর্শ দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। আপশোসের বিষয় এখন পর্যন্ত ব্লক সুপারভাইজার একবারের জন্যও আসেননি।
একই রকম অভিযোগ করেন উপজেলার ২ নম্বর গোপালপুর ইউনিয়নের ভুট্টা চাষি আরিফ হোসেন, আব্দুল্লাহ ও জহুর মিয়া।
এ ব্যাপারে ব্লক সুপারভাইজার দীপ মজুমদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমি অবশ্যই গিয়েছি তবে যারা অভিযোগ করেছেন হয়তো তাদের কারো সাথে কথা হয়নি।’
ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জনাব তুষার সাহা নয়া দিগন্তকে জানান, ‘আমি বা আমার মতো দু’একজন ভালো হয়ে দেশের কোনো কল্যাণ হবে না। ব্লক সুপারভাইজাররা যদি কৃষি সেবা নিয়ে কৃষকদের দোরগোড়ায় যান, তাহলে এই বাংলাদেশ সোনার বাংলাদেশে পরিণত হবে।’
১ নম্বর বুড়াইছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব পান্নু বলেন, ‘চরাঞ্চলের এ সকল মাটি ভুট্টা চাষের উপযোগী। সরকারিভাবে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিলে কৃষকেরা ভুট্টা চাষে উৎসাহিত হবে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জনাব তুষার সাহা বলেন, ‘বিক্ষিপ্তভাবে হলেও উপজেলায় এ বছর রবি মৌসুমে প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। ভুট্টা চাষে আগ্রহী চাষিদের আমার অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা