১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

হৈতালী কাগজ

-

বলছি, এখনকার মতো আগে কাগজের কল ছিল না। প্রাচীনকালে হাতেই কাগজ তৈরি করা হতো। তারও আগে লেখার জন্য ব্যবহৃত হতো ভূর্জপত্র ও তালপাতা। চীনে প্রথম ১০৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে হাতে তৈরি কাগজ প্রস্তুত করেন হান রাজাদের সভাসদ সাই লুন। তাকেই হাতে তৈরি কাগজের জনক বলা হয়। তিনি তুঁতগাছের বাকল ও বাঁশের আঁশ দিয়ে সেই আদি কাগজ তৈরি করেন। পরে চীন থেকে সেই প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হয় তৃতীয় শতক থেকে প্রাচীন ভারতবর্ষে হাতে তৈরি কাগজের প্রচলন শুরু হয়।
অতীতে এ দেশে কাগতীরা কাগজ তৈরির পেশায় নিয়োজিত ছিল। মধ্যযুগে হাতে তৈরি কাগজের প্রচলন ছিল। হাতে তৈরি কাগজকে বলা হতো হৈতালী কাগজ। তুলট কাগজের প্রচলনও ছিল। হাতে তৈরি কাগজকে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য হরিতাল নামক হলুদ রঙের একপ্রকার বিষাক্ত পদার্থ মণ্ডে মিশ্রিত করে দেয়া হতো। এসব কাগজকে তাই হরিতালী কাগজ বলা হতো।
চট্টগ্রাম ছিল এসব কাগজ তৈরির অন্যতম প্রধান স্থান। তাই চট্টগ্রামবাসীর মুখে হরিতালী কাগজ হয়ে ওঠে হৈতালী কাগজ। কাগতীদের হাতে তৈরি এসব কাগজ হাজার বছরও টেকসই হতো বলে চট্টগ্রামের সমাজ সংস্কৃতির রূপরেখা গ্রন্থের লেখক আবদুল হক চৌধুরী উল্লেখ করেছেন। টাঙ্গাইল জেলায় এখনো অনেক কাগতী রয়েছে।
হৈতালী কাগজ না থাকলেও এখনো এ দেশে হাতে তৈরি কাগজের ঐতিহ্য এখনো রয়েছে। সেসব কাগজ ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন হস্তশিল্পসামগ্রী তৈরিতে। বর্তমানে প্রধানত পুরনো কাগজ, পুরনো চট, পাট ইত্যাদি থেকে হাতে কাগজ তৈরি করা হয়। এসব কাগজ ছবির অ্যালবাম, ফ্রেম, গিফট বাক্স, কার্ড, শৌখিনসামগ্রী, ব্যাগ, বই বাঁধাইয়ের বোর্ড ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়। ছবি : সংগ্রহ


আরো সংবাদ



premium cement