নকল কিটে করোনা এইডস ক্যান্সার টেস্ট : মূল হোতাসহ গ্রেফতার ৯
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৩৩
রাজধানীর হাসপাতালে নকল কিট ও রি-এজেন্টের মাধ্যমে করোনা, এইডস, নিউমোনিয়া, ক্যান্সার ও ডায়াবেটিকস রোগের প্যাথলজিকাল টেস্ট হতো। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) অভিযান চালিয়ে অননুমোদিত মেডিক্যাল ডিভাইস আমদানিকরণ, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ মেডিক্যাল টেস্টিং কিট এবং রি-এজেন্ট উদ্ধার করে। একইসাথে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও বনানী থেকে এই জালিয়াতি চক্রের মূল হোতাসহ নয়জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় র্যাব-২-এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। র্যাব-২-এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়। অভিযানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিনিধিরা সহযোগিতা করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ টিমকে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, আমরা জানতে পারি কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান অননুমোদিত মেডিক্যাল ডিভাইস আমদানি করছে। এ ছাড়া করোনা টেস্টিং কিটসহ ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ মেডিক্যাল ডিভাইস মজুত ও বাজারজাত করে আসছে।
অভিযানের সময় গ্রেফতারকৃতরা হলেন মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়ার বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী মো: শামীম মোল্লা (৪০), ম্যানেজার মো: শহীদুল আলম (৪২), ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ আল বাকী ছাব্বির (২৪), অফিস সহকারী মো: জিয়াউর রহমান (৩৫), হিসাব রক্ষক মো: সুমন (৩৫), অফিস ক্লার্ক ও মার্কেটিং অফিসার জাহিদুল আমিন পুলক (২৭), সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মো: সোহেল রানা (২৮), বনানীর এক্সন টেকনলজিস অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের এমডি মো: মাহমুদুল হাসান (৪০) ও হাইটেক হেলথ কেয়ার লিমিটেডের এমডি এস এম মোস্তফা কামাল (৪৮)।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, অধিক মুনাফার জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ ও সহসা মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে এমন টেস্ট কিট ও রি-এজন্টগুলো দেশী-বিদেশী আমদানিকারক ও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে অতি অল্প দামে সংগ্রহ করে পুনরায় মেয়াদ বসিয়ে বিশেষ মুদ্রণ যন্ত্রের সাহায্যে মুদ্রণ বা টেম্পারিং করে বাজারে সরবরাহ করত। প্রতিষ্ঠান তিনটি ১০ বছর ধরে বিভিন্ন নামে ঢাকায় এ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব-২-এর কোম্পানি কমান্ডার জানান, তারা সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এগুলো সাপ্লাই দিত। তবে মেয়াদ উত্তীর্ণের আগে এগুলো কাজ করতো কি না এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। এই রি-এজেন্ট ও টেস্ট কিট চীন থেকে আমদানি করা হতো। রি-এজেন্ট ও টেস্ট কিটের লেভেল বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তৈরি করে পুনরায় টেম্পারিং করে লাগানো হতো। তাদের বিরুদ্ধে র্যাব নিয়মিত মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
র্যাব জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের প্রতিনিধির সহযোগিতায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে রাজধানীর মোহম্মদপুর থানাধীন লালমাটিয়া এলাকায় অবস্থিত বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান বনানীর এক্সন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড, হাইটেক হেলথকেয়ার নামে তিনটি প্রতিষ্ঠানের ওয়্যার হাউজ থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল টিক এবং রি-এজেন্ট জব্দ করা হয়।
র্যাবের দাবি, অভিযান চলাকালে পাওয়া মজুদকৃত বেশিরভাগ মেডিক্যাল ডিভাইস অননুমোদিত। প্রায় সকল প্রকার টেস্ট কিট ও রি-এজেন্টগুলো ব্যবহারের মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা সহসা মেয়াদোত্তীর্ণ হবে। তারা বিশেষ ধরনের প্রিন্টিং মেশিনের সাহায্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার খুব অল্প সময় রয়েছে এ রূপ বিভিন্ন টেস্ট কিট ও রি এজেন্ট মেয়াদ বাড়ানোর কাজ করছিল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা