১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রান বন্যায় ভাসল রেকর্ড, শেষ হাসি বেঙ্গালুরুর

রান বন্যায় ভাসল রেকর্ড, শেষ হাসি বেঙ্গালুরুর - ছবি : সংগৃহীত

অবিশ্বাস্য একটা রাতের সাক্ষী হলো ক্রিকেট বিশ্ব। দেখল ক্রিকেটের এক অতিমানবীয় রূপ! পাল্লা দিয়ে চলল চার-ছক্কার উৎসব। রান বন্যায় ভেসে গেল আগের সব রেকর্ড। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একটা ম্যাচ থেকে যতটা রান আসতে পারে, তার সবটাই হলো এক দিনে।

রেকর্ড গড়াই হয় ভাঙার জন্য। কিন্তু কে জানত এক ম্যাচেই এত রেকর্ডের সাক্ষী হবে এম চেন্নাস্বামী স্টেডিয়াম! সোমবার ব্যাঙ্গালুরু বনাম হায়দরাবাদের এই ম্যাচে ব্যাটারদের তাণ্ডবে ওলট-পালট হয়েছে আইপিএল ও টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের একাধিক রেকর্ড। লেখা হয়েছে নতুন ইতিহাস।

কয়েক দিন আগেই আইপিএল সর্বোচ্চ ২৭৭ রান তুলেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তবে ১৯ দিনের ব্যবধানে নিজেদের রেকর্ড নিজেরাই ভেঙে দিল আজ। ২০ ওভারের ম্যাচে ৩ উইকেটে করেছে ২৮৭ রান। যা সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়, জবাব দিতে নেমে ৭ উইকেটে ২৬২ রান তুলেছে ব্যাঙ্গালুরুও! তাতে ২৪০ বলের এক ম্যাচে স্কোরবোর্ডে রান উঠেছে ৫৪৯! আইপিএল তো বটেই, সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এক ম্যাচে যা সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। রান বন্যার এই ম্যাচে ২৫ রানের জয় পেয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

শুধু তাই নয়, দুই দল মিলে এ দিন ছক্কা হাঁকিয়েছে ৩৮টা। টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে যা সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। তাছাড়া দুই দল মিলিয়ে হাঁকিয়েছে ৮১টি বাউন্ডারি। এক ম্যাচে এর চেয়ে বেশি বাউন্ডারি দেখেনি আগে কখনো টি-টোয়েন্টি।

সোমবার ঘরের মাঠে টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিস। তবে প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ কাজে দারুণভাবে কাজে লাগায় হায়দরাবাদ। যেখানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন ট্রাভিস হেড। তবে কম যাননি হেনরিখ ক্লাসেন, মার্করাম, সামাদরাও।

চলতি আইপিএলে এর আগে দুইটি অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন হেড। তবে এবার শতক হাঁকালেন তিনি। মাত্র ৩৯ বলে স্পর্শ করেন তিন অঙ্কের ঘর। যা আইপিএলে চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরি। শুরুটা করেন অভিষেক শর্মাকে নিয়ে। ৮ ওভারে ১০৮ রান তুলে দলকে এনে দেন উড়ন্ত সূচনা। অভিষেক আউট হন ২২ বলে ৩৪ রানে।

তভে হেডের ঝোড়ো ব্যাটিং অব্যাহত থাকে। এবার প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান ক্লাসেনকে নিয়ে এগোতে থাকেন তিনি। এই জুটিতে আসে ২৬ বলে ৫৭ রান। শতক ছুঁয়ে ৪১ বলে ১০২ রানে ফেরেন হেড। তবে রানের গতি কমেনি, কমতে দেননি ক্লাসেন। ২৩ বলে অর্ধশতক পূরণ করে শেষ পর্যন্ত ফেরেন ৩১ বলে ৬৭ করে।

এরপর মার্করাম ১৭ বলে ৩২* ও সামাদ ১০ বলে ৩৭* রান করলে ইতিহাস গড়া সংগ্রহ পায় হায়দরাবাদ। লুকি ফার্গুনসন ২ উইকেট নিলেও রান দেন ৫২।

প্রথম ইনিংসের পরেই হয়তো লড়াইটা একঘেয়ে হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এতো রান তাড়া করে জয় পাওয়া আদৌ সম্ভব কি! তবে হাল ছাড়েনি বেঙ্গালুরু, শুরু থেকেই ছিল বিধ্বংসী। পাওয়ার প্লেতে দুই ওপেনার বিরাট কোহলি ও ডু প্লেসি মিলে ৭৯ রান তুলে দলকে রেখেছিলেন লড়াইয়ে।

৮০ রানে ভাঙে এই জুটি। ২০ বলে ৪২ রান করা কোহলি আউট হন মায়াঙ্ক মারকান্দের বলে। দ্রুত ফেরেন উইল জ্যাকসও, ৪ বলে ৭ করে রান আউট হন তিনি। থিতু হতে পারেননি রজত পাতিদার, দিলিপ সিংহও৷ দারুণ সূচনা এনে দিয়ে ফেরেন ডু প্লেসিসও, আউট হন ২৮ বলে ৬২ রানে।

১০ ওভার শেষে ১২২ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর হয়তো আশা ছেড়ে দিয়েছিল সমর্থকেরা। তবে হাল ছাড়েননি দীনেশ কার্তিক। ৩৫ বলে ৮৩ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস উপহার দেন তিনি। শুরুটা করেন ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মহিপালের সাথে ২৫ বলে ৫৯ রান তুলে। মহিপাল আউট হন ১১ বলে ১৯ করে।

এরপর ইমপ্যাক্ট অনুজ রাওয়াতকে নিয়ে ঝড় তুলেন কার্তিক। এই জুটিতে আসে ২৮ বলে ৬৩ রান। যেখানে ১৯ বলে ৪৮ রানই ছিল কার্তিকের। অনুজ অপরাজিত ছিলেন ১৪ বলে ২৫ রানে। ৩ উইকেট নেন প্যাট কামিন্স।


আরো সংবাদ



premium cement