খুলনায় ফয়সালের বাবার নামে বাড়ি প্লট : ব্যাংকে শ্বশুর ও শাশুড়ির ১৯ কোটি টাকা
- খুলনা ব্যুরো
- ৩০ জুন ২০২৪, ০০:০৫
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল পরিবারের খুলনায় দুইটি বাড়ি ও প্লটের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাড়ির গ্যারেজে একটি টয়েটো ‘হ্যারিয়ার’ গাড়ি দেখা গেছে। তার স্ত্রী এই গাড়িতে করে প্রায়ই খুলনায় ঘোরাফেরা করতেন বলে স্থানীয়রা জানান।
কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের বাড়ি মহানগরীর মুজগুন্নী এলাকায়। তার পিতার নাম কাজী আবদুল হান্নান। স্থানীয় লোকজন তাকে ফিরু কাজী হিসেবে চেনে। মুজগুন্নী আবাসিক এলাকায় প্রায় দুই বিঘা জমির একটি প্লট রয়েছে। মুজগুন্নী গিয়ে ওই প্লটে ফিরু গাজীর নাম সাইনবোর্ডে ঝুলতে দেখা গেছে। এ ছাড়া যশোর রোডের নেছারিয়া মাদরাসার পাশে তাদের প্রায় দুই বিঘার জমির উপর আলিশান তিনতলা বাড়ি রয়েছে। গ্যারেজে একটি হ্যারিয়ার গাড়ি দেখা গেছে। ওই বাড়িতে ফয়সালের বাবা-মা বসবাস করতেন। গতকাল শনিবার বিকেলে ওই বাসায় গেলে তার মা দরজা খুলতে এবং কোনো কথা বলতে রাজি হননি ।
খুলনা সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী মাহফুজুর রহমান লিটন জানান, তাদের সম্পদশালী মানুষ হিসেবেই এলাকার লোক জানে। কাজী ফয়সাল এলাকায় কম আসতেন। তবে তার স্ত্রী আফসানা জেসমিন কয়েক দফা তার কাছে সনদ নিতে এসেছেন।
গত বৃহস্পতিবার আদালত ফ্রিজ করার পর খুলনার সম্পত্তি নিয়ে লুকোচুরি চলছে। হঠাৎ করে বাড়ির সামনে থেকে নাম ফলক সরিয়ে ফেলা হয়েছে। খুলনার খালিশপুর এলাকায় ১১৩ নম্বর সড়কে ফয়সালের শ্বশুরবাড়ি। তারা হঠাৎ করে আত্মগোপন করেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত হতেই এসব বাসার নামফলক খুলে ফেলা হয়েছে ।
জানা গেছে, কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে ১৮টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব ব্যাংক হিসাবে প্রায় ১৯ কোটি টাকা জমা হওয়া এবং পরে তার বড় অংশ উত্তোলনের তথ্য পেয়েছে।
আদালতে জমা দেয়া দুদকের নথি অনুযায়ী, ফয়সালের শ্বশুর আহম্মেদ আলী একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। তার শাশুড়ি মমতাজ বেগম পেশায় গৃহিণী। ফয়সাল ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ নিজের ও স্ত্রীর নামে রাখার পাশাপাশি স্বজনদের নামেও রেখেছেন। শ্বশুর ও শাশুড়ির নামের ব্যাংক হিসাবে যে অর্থ লেনদেন হয়েছে, তা ফয়সালেরই অপরাধলব্ধ আয়।
নথি অনুযায়ী, ফয়সাল ও তার ১১ স্বজনের নামে ১৯টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৮৭টি হিসাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে তার শ্বশুর-শাশুড়ির ব্যাংক হিসাবে। দুদক আদালতে জানিয়েছে, ফয়সাল তার অপরাধলব্ধ আয় লুকানোর জন্য স্বজনদের নামে ৭০০টির মতো ব্যাংক হিসাব খুলেছিলেন। এর মধ্যে দুদক ৮৭টি ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে।
দুদক লিখিতভাবে আদালতকে জানিয়েছে, আবু মাহমুদ ফয়সাল সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ লেনদেন করেছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয়ের উৎস গোপনের জন্য নিজের নামসহ তার আত্মীয়স্বজনের নামে ৭০০টির বেশি হিসাব খোলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা