ঢাকা ওয়াসার ডিএমডি ইয়াজদানির বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বাতিল

ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ড. সৈয়দ গোলাম মোহাম্মদ ইয়াজদানিকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো: বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবীর পল্লব। তিনি বলেন, হাইকোর্ট রুলের শুনানি গ্রহণ করে তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ড. সৈয়দ গোলাম মোহাম্মদ ইয়াজদানি একজন সুদক্ষ ব্যক্তি। দক্ষতার কারণে মূলত তাকে ডিএমডি পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এমডির সাথে তার কিছু বিষয় নিয়ে মতবিরোধ হয়। একপর্যায়ে এমডি ড. সৈয়দ গোলাম মোহাম্মদ ইয়াজদানির বিরুদ্ধে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডে অভিযোগ করেন। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের বিরুদ্ধে সংস্থাটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ড. সৈয়দ গোলাম মোহাম্মদ ইয়াজদানিকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

২০২৩ সালের ২২ জুন ড. সৈয়দ গোলাম মোহাম্মদ ইয়াজদানিকে বোর্ডের ৩০৫তম সভায় অব্যাহতি দেয়া হয়। ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সুজিত কুমার বালা তখন এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সাথে ডিএমডির ঠিক বনিবনা হচ্ছিল না। বনিবনা না হলে অনেক কাজে সমস্যা হয়। ওয়াসার স্বার্থেই বোর্ড তাকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিছুদিন ধরেই ডিএমডির সাথে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের দূরত্ব তৈরি হয়। এমডির কিছু সিদ্ধান্তের বিষয়ে বাধা হয়ে দাঁড়ান ড. ইয়াজদানি। এ অবস্থায় বোর্ডের ৩০৪তম সভার এজেন্ডা হিসেবে ইয়াজদানির অব্যাহতির প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই সভায় বোর্ড সদস্যরা আপত্তি দেন। তারা বলেন, একজনকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। এরপর বোর্ডসভায় এমডি ও চেয়ারম্যান বোর্ড সদস্যদের মতামত গুরুত্ব না দিয়ে ইয়াজদানিকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেন।
২০২২ সালের ১৬ মে ড. গোলাম মোহাম্মদ ইয়াজদানিকে ডিএমডি (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) পদে নিয়োগ দেয় ওয়াসা বোর্ড। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী একজন ডিএমডির তিন বছর দায়িত্ব পালনের কথা। সে অনুযায়ী ২০২৫ সালের ১৫ মে পর্যন্ত তার দায়িত্ব পালনের কথা। কিন্তু কিছু অসঙ্গতির বিষয়ে আপত্তি দেয়ায় ইয়াজদানি ওয়াসা প্রশাসনের বিরাগভাজন হন। ইয়াজদানির এ রকম বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন এমডি তাকসিম এ খান। এ রকম বক্তব্য দেয়ার আইনি অধিকার তার নেই বলেও তাকে জানিয়ে দেন এমডি। এরপরই ডিএমডির পদ থেকে চাকরিচ্যুত হন তিনি। পরে এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ইয়াজদানি।