১৬ জুন ২০২৪
`

সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার পাওনা ৫০ হাজারে রফাদফা!

-


গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার এক কর্মকর্তাকে থানায় ধরে নিয়ে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার কথিত পাওনা ৫০ হাজার টাকায় রফাদফা হয়েছে। গত বুধবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগকারী নারী ৫০ হাজারেই মহাখুশি। ভুক্তভোগী কর্মকর্তার দাবি, অভিযোগকারী নারী একজন প্রতারক এবং তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ভুক্তভোগী আব্দুস সামাদ জানান, তিনি বাসন থানাধীন ভোগড়া এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় লাইন ইনচার্জ হিসেবে চাকরি করছেন। এর আগে টঙ্গীতে একটি পোশাক কারখানায় চাকরিকালে অভিযোগকারী নাসিমার সাথে তার পরিচয়। সেই পরিচয়ের সূত্রে নাসিমা একদিন মার্কেট থেকে তাকে উপঢৌকন হিসেবে গেঞ্জি ও আন্ডারওয়ার কিনে দেয়। এভাবে একপর্যায়ে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। বিগত ২০১৯ সালের ৩ জুলাই টঙ্গীর একটি কাজী অফিসে তাদের বিয়ে হয়। এ সময় তার সরল বিশ্বাসের সুযোগে প্রতারণার আশ্রয়ে দেড় শ’ টাকার দু’টি অলিখিত জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নেয়। মাত্র তিন দিনের সংসারজীবনের মাথায় তার ঘর থেকে ‘নববধূ’ নাসিমা নগদ ৪২ হাজার টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করেন। প্রেম ও বিয়ের নামে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বুঝতে পেরে কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে নাসিমার ভয়ে চাকরি ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে যান। পরে নাসিমা বিয়ের কাবিননামা ও ওই স্ট্যাম্প নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়েও হানা দেয়। দেনমোহর বাবদ দুই লাখ এবং স্ট্যাম্পের মাধ্যমে কথিত পাওনা বাবদ আরো সাড়ে তিন লাখ মোট সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার দাবিতে তার নামে গ্রামে বিচার-সালিশ বসায়। ওই সালিশে নাসিমার প্রতারণা প্রমাণ হলে সেখান থেকে সে অপমাণিত হয়ে ফিরে আসে। এসব ঘটনার প্রায় ৫ বছর পর কথিত ওই পাওনা আদায়ের জন্য নাসিমা গত বুধবার আব্দুস সামাদের নামে বাসন থানায় অভিযোগ করেন। ওই দিনই থানার এসআই সাইফুল ইসলাম তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। দিনভর থানা হাজতে আটকে রেখে সম্পূর্ণ টাকা আদায়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু তিনি টাকা দিতে রাজি হননি।

আব্দুস সামাদ আরো বলেন, ‘নাসিমা আমার কাছে কোন টাকা পাবে না এবং আমি প্রতারণার শিকার- পুলিশ এটি বুঝতে পেরেও মামলার ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা আদায় করে। পরে সাদাকাগজে আমার স্বাক্ষর রেখে বুধবার রাতে থানা থেকে ছেড়ে দেয়।’
তিনি জানান, নাসিমা এর আগেও টঙ্গীতে একটি পোশাক কারখানার প্রডাকশন ম্যানেজারকে (পিএম) প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আরো একাধিক পুরুষ তার দ্বারা বিভিন্নভাবে নাজেহাল ও প্রতরণার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত। গাজীপুর আদালতে আরো তিনজন পুরুষের নামে নাসিমার পৃথক দু’টি হয়রানিমূলক মামলাও চলমান। নাসিমা নরসিংদী জেলা সদরের কালাই গোবিন্দপুর গ্রামের বিগচান মিয়ার মেয়ে। গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী ও গাছা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে প্রতারণা করে আসছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাসন থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী আব্দুস সামাদকে ওই নারীর কবল থেকে অল্পতে বাঁচিয়ে দিয়েছি। অন্যথায় আরো বড় ঝামেলায় পড়ত। ৫০ হাজার টাকা পেয়ে ওই নারীও বেজায় খুশি।


আরো সংবাদ



premium cement