মামলার রায় ও কাবিননামা নকল করে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেন আইনজীবী
- রাজবাড়ী প্রতিনিধি
- ১৫ মে ২০২৪, ০২:০১
রাজবাড়ীতে ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর নকল করে মামলার ভুয়া রায়ের কপি তৈরি, মিথ্যা কাবিননামা তৈরি, সাজানো যৌতুকের মামলা ও জমি সংক্রান্ত মামলার রায় পক্ষে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রাজবাড়ী বারের এক আইনজীবী। এ বিষয়ে ওই আইনজীবী মুঠোফোনে অভিযোগটি মিথ্যা দাবি করে বলেন, আব্দুল জলিল কিছু দিন আগে আমার চেম্বারে এসেছিলেন একটি মামলা করার জন্য। অভিযোগটি সৎ না বিধায় পরে মামলাটি আমি করিনি। এছাড়া তার সাথে আমার আর কোনো কথা হয়নি এবং যোগাযোগও হয়নি। আমি কখনো তার কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা নেইনি। অভিযুক্ত ওই আইনজীবীর নাম মো: আসাদুজ্জামান আসাদ। ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মো: আব্দুল জলিল এই প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে গত ১২ মে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের অনুলিপি রাজবাড়ী পুলিশ সুপার, রাজবাড়ী জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, এনএসআই, ডিজিএফআই ও ফরিদপুর র্যাব-১০ কার্যালয়ে প্রেরণ করেছেন।
ভুক্তভোগী আব্দুল জলিলের বাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত হেরমত আলী।
মো: আব্দুল জলিল অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, গত ৭-৮ মাস আগে তার আপন ছোটভাই স্কুলশিক্ষক মো: মেহেরুজ্জামানের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধে মো: মেহেরুজ্জামান রাজবাড়ী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা চলাকালীন ওয়ারেন্ট ইস্যু হওয়ায় তিনি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। পরিবারের সদস্যরা হাইকোর্ট থেকে জামিনের ব্যবস্থা করেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর প্রতিবেশী মিজানুর রহমান মিজানের সাথে রাজবাড়ীতে এসে অ্যাডভোকেট মো: আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার সহকারী মুহরি মিলনের সাথে কথা হয়। তারা আশ্বস্ত করেন মামলা থেকে অব্যাহতি করাসহ ভাইয়ের সাথে সাত একর জমি নিয়ে যে বিরোধ তার সম্পূর্ণ রায় করিয়ে দিবেন। পরে বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনের কথা বলে পর্যায়ক্রমে প্রতিবেশী মিজানুর রহমানের মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকা গ্রহণ করে অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ।
টাকা গ্রহণের কিছুদিনের মধ্যে জমির মামলার একটি রায় ঘোষণার কাগজ প্রদান করেন। কাগজটি যাচাই করে জানতে পারেন রায়ের কাগজটির ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর নকল ও ভুয়া। পরে শারমিন আক্তার জুই নামের একটি মেয়েকে ১০ লাখ টাকা কাবিনমূলে একটি কাবিননামা তৈরি করে ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা যৌতুকের মামলা দায়ের করেন। এভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে টাকা হাতিয়ে নিয়ে কোনো কাজ করেনি। টাকা ফেরত চাইলে টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি প্রদান করে আসছেন।
ভুক্তভোগী আব্দুল জলিল জানান, আমি হাইকোর্ট থেকে জামিনে বের হয়ে অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের কাছে যাই।
তিনি প্রথমে আমাকে বলেন, চলমান মামলা শেষ করে দিবে এজন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। আমি রাজি হয়ে টাকা দিই। এরপর আমার ছোট ভাই ৮টা দলিলের মাধ্যমে আমার কাছ ৭ একর জমি ফাঁকি দিয়ে নেয়। উকিল আমাকে বলে দলিল প্রতি দুই লাখ ৫০ হাজার করে ২০ লাখ টাকা দিলে জমির মামলার রায় করিয়ে দেবো। এভাবে আমার কাছ থেকে মোট ২৫ লাখ টাকা নেয়। পরে আমার নিজে ভুয়া একটি কাগজ ধরিয়ে দেয়। আমাকে পথে বসিয়ে দিয়েছে ওই উকিল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা