৩৬০০ টাকা কেজি বিস্কুট কেনার বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে
৪ বছর পূর্তিতে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আতিক- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৪ মে ২০২৪, ০১:২২
কেজিপ্রতি ৩,৬০০ টাকা দিয়ে বিস্কুট কেনার বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম। গতকাল ডিএনসিসি নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের ৪ বছর পূর্তিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি একটি পত্রিকায় রিপোর্ট হয় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে সাতবার বিস্কুট কেনা হয়। এর মধ্যে পাঁচবার প্রতি কেজি বিস্কুট কেনা হয় ৩ হাজার ৬০০ টাকায়। বাকি দুইবার কেনা বিস্কুটের দাম পড়ে প্রতি কেজি ৩ হাজার ২০০ টাকা। মেয়র বলেন, পত্রিকার রিপোর্টকে গুরুত্ব দিয়ে এ ব্যাপারে নতুন নিয়োগ পাওয়া প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত চলছে। তদন্তে কেউ দায়ী প্রমাণিত হলে তিনি শাস্তি পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম তার দায়িত্ব গ্রহণের ৪ বছরে ডিএনসিসির অগ্রগতির সার্বিক চিত্র এবং আগামী এক বছরের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, খালগুলো দখলমুক্ত করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান করেছি এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে এই অভিযান চলবে। আগামী এক বছর ডিএনসিসিতে নতুনভাবে যুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলেও জানান মেয়র।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা সারা বছরই কাজ করছি। এ বছর বর্ষার আগেই ৫৪টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক প্রচার অভিযান পরিচালনা করছি। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রত্যেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। বিটিআই আনার জন্য গত বছর উদ্যোগ নিয়েছিলাম, ঠিকাদার প্রতারণার আশ্রয় নেয়ায় তাকে কালো তালিকাভুক্ত করাসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে আমরা বিটিআই আনার বিষয়টি বন্ধ না করে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে নিজেরাই সরাসরি আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে। দ্রুতই বিটিআই আনতে পারবো। প্রথমবারের মতো এডিসের লার্ভা জন্মাতে পারে এমন পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি নগদ টাকায় কিনে নিচ্ছি। কার্যকরভাবে ওষুধ ছিটানোর জন্য অত্যাধুনিক মেশিন বাফেলো টারবাইন নিয়ে আসবো, এটি প্রক্রিয়াধীন। সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযান চলমান রয়েছে। ডিএনসিসি মেয়র বলেন, অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সেবার পরিসর বৃদ্ধি করেছি। হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স প্রদান এগুলো অনলাইনে হচ্ছে। গুলশান ১ ও তালতলা মার্কেটে ক্যাশলেস লেনদেন ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্মার্ট পার্কিং চালু করেছি। গুলশান-২ এ এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ভিত্তিক ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল চালুর মাধ্যমে প্রমাণ করেছি ডিএনসিসি ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল বাস্তবায়নে সক্ষম। আরও ৬টি স্থানে এআই ভিত্তিক ট্রাফিক সিগন্যাল চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে অনলাইন সেবার পরিসর বাড়াতে গুরুত্ব দিচ্ছি। সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে ইচ্ছা ছিল কিন্তু এখনো বাস্তবায়ন করতে পারিনি উল্লেখ করে মেয়র বলেন, একটি স্মার্ট জবাইখানা করার ইচ্ছা আছে। আমি দ্রুতই এটি বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নিবো। এ ছাড়া গাবতলিতে বৃক্ষ ও প্রাণী হাসপাতাল নির্মাণ করার ইচ্ছা রয়েছে। তিনি বলেন, শহরের পরিবেশ রক্ষায় দুই বছরে দুই লাখ গাছ রোপণের ঘোষণা দিয়েছিলাম। গত বছর ৯০ হাজার গাছ রোপণ করা হয়েছে। আমরা বৃক্ষরোপণকে গুরুত্ব দিয়ে ৪৭ জন মালি নিয়োগ দিচ্ছি। দুইজন সুপারভাইজার নিয়েছি। এই বছর আরও দেড় লাখ গাছ রোপণ করা হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে খালি জায়গায় শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম। উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন মো: আতিকুল ইসলাম। নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে ডিএনসিসির মেয়র হন তিনি। পরে ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন আতিকুল ইসলাম। পরবর্তীতে একই বছরের ১৩ মে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো: মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা