১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
পৃথক অভিযানে ৮ জন গ্রেফতার

প্রতিশোধ নিতে পল্লবীতে ডেকে ৪৫ বার কুপিয়ে পাভেলকে হত্যা

-

গ্রুপিং ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত বছর হাবিব নামে একজনকে কুপিয়ে আহত করে পাভেল। এই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা জেল খাটে পাভেল। কিন্তু তাতে রাগ কমেনি হাবিবের। জেল থেকে বের হওয়ার পরই পাভেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। এজন্য একটি গ্রুপও তৈরি করেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঈদের ছুটিতে মাদক সেবনের জন্য ছোট ভাইয়ের মোটরসাইকেলে করে বাড্ডা থেকে পল্লবী নিয়ে আসা হয় পাভেলকে। এরপর হাবিবসহ অন্যরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাভেলের ওপর। তারা পাভেলের বুক-পেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৪৫টি কোপ দিয়ে পাভেলের মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে লাশ ফেলে দেয় পাশের পুকুরে।
রাজধানীর পল্লবী থানার স্বপ্ননগর আবাসিক এলাকায় চাঞ্চল্যকর রিহান ইসলাম ওরফে পাভেল হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতর করেছে পুলিশ। এর মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পল্লবী থানা পুলিশ। বাকি তিনজনকে ডিবি মিরপুর বিভাগের সদস্যরা গ্রেফতার করে। ঘটনার সাথে জড়িত আরো দু’জনকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো মূল পরিকল্পনাকারী মো: হাবিব (২৮), মো: হানিফ (২৬), মো: আনিছ (২২), রায়হান বাবু (২৪), সোহেল তোতা মামা (২৪) ও বাচ্চু ওরফে কাজল বাচ্চুসহ (২৩) আরো দু’জন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পলাতক তাজমুল ও হানিফের সন্ধানে মাঠে রয়েছে পুলিশের একাধিক টিম।
মাদক সেবনের জন্য তাজমুল নামে আরেক সহযোগীর মাধ্যমে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে গত ১৪ এপ্রিল বিকেলে রাজধানীর বাড্ডার পাঁচতালা বাজার এলাকার বাসা থেকে মোটরসাইকেলে করে পাভেলকে ডেকে নেয়া হয় পল্লবী থানার ১২ নম্বর সেক্টরের স্বপ্ননগর আবাসিক এলাকার টেকেরবাড়ি নামক স্থানে গণপূর্তের পুকুরের উত্তরপাড়ে নেয়া হয়। সেখানে মাদক সেবন করেন পাভেল। এর মধ্যে সন্ধ্যার দিকে ঘটনাস্থলে বাসযোগে আসেন মূল পরিকল্পনাকারী হাবিবসহ আরো কয়েকজন। সবাই একসাথে পাভেলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। চাকু ও ছুরি দিয়ে পেট ও পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৪৫টি আঘাত করা হয়।
ছেলের হত্যাকাণ্ডের পর গত ১৫ এপ্রিল পাভেলের মা পারুল বেগম বাদি হয়ে পল্লবী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি করা হয় ছয়জনকে। তারা হলেন- মো: হাবিব, মো: হানিফ, মো: আনিছ, রায়হান নানু, মো: মিলন (৩৭) ও মো: জনিকে (২৬)।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, পূর্বশত্রুতা, চাঁদাবাজি ও মাদকের জের ধরে হত্যার শিকার পাভেল। ভুক্তভোগী ও মূল অভিযুক্ত বন্ধু হলেও তাদের মধ্যে শত্রুতা ছিল। এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত তিনজনকে ডিবি মিরপুর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি থানা পুলিশও পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। গায়েন্দা মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো: রাশেদ হাসান জানান, পাভেল হত্যায় এখনো দু’জন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement