পতনের স্রোতে শেয়ার ছেড়ে দিতে বিনিয়োগকারীরা মরিয়া
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
- সূচক হারিয়ে তিন বছর আগের অবস্থানে ফিরলো পুঁজিবাজার
- একদিনে বাজার হারালো ২ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা
সূচক ও দর পতনের স্রোতে গা ভাসিয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। আতঙ্কিত ও ভিত হয়ে শেয়ার ছেড়ে দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু কেনার কোনো লোক নাই এই পতনের বাজারেও। গতকাল ৮৫ শতাংশই ছিল বিক্রির চাপ এবং মাত্র ১৫ শতাংশ ছিল ক্রেতার উপস্থিতি। তবে ঢাকা স্টকের প্রধান সূচক আরো ৭৭ পয়েন্ট হারিয়ে সেই ২০১১ সালের ১১ মের দিনে বা তিন বছর আগে ফিরে গেছে। অব্যাহত পতনে বাজার থেকে চলে গেছে ০.৪১ শতাংশ বা দুই হাজার ৯১৫ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম স্টকের প্রধান সূচক সিএএসপিআই সূচক ২১৫.০২ পয়েন্ট হারিয়েছে গতকাল।
দুইটি প্রাতিষ্ঠানিক বাজার বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ হলো, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আরে ৭৭ পয়েন্ট হারিয়েছে। ফলে এখন সূচকটির অবস্থান পাঁচ হাজার ৬৮৬.৬৮ পয়েন্টে, যা ছিল গত তিন বছর আগের। পতনের ধারায় পুঁজিবাজার পেছাচ্ছে। লেনদেন বাড়লেও ৮৬.৫৮ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর হারিয়েছে। ১৯টি খাতের মধ্যে মাত্র একটি খাতের দর বেড়েছিল। বাকি ১৮টি খাতই দর হারিয়ে লোকসানের শিকার। বাজারে ৮৩ শতাংশ বিক্রেতা থাকলেও বিক্রির চাপ ছিল ৮৫ শতাংশ। তবে ৬ শতাংশ ক্রয়-বিক্রয়ে ছিল না। এ বি জেড শ্রেণীর শেয়ার ছিল বিক্রির চাপে। তবে ক্রেতার আগ্রহ ছিল এন শ্রেণীর শেয়ারে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাজার সূচনাতে অতটা খারাপ ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে পতনে ঢলে পরে। প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে ঢাকা স্টকে চার কোটি ৬৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৮৫টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছিল ১৪৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকায়। ব্লক মার্কেটে গতকাল ৪০টি কোম্পানির ৪৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৫১টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রি হয়েছে মোট ১৭ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকায়। তবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হতে দেখা গেছে পাঁচ কোম্পানির শেয়ার। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ছিল- আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ই-জেনারেশন, সিটি ব্যাংক, নাভানা ফার্মা এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স পিএলসি। এই পাঁচ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৯৬ লাখ টাকারও বেশি। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫.৮৫ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৪৬.৫৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২২.৭৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৯৮৪.৫৬ পয়েন্টে। ডিএসইতে ৫২২ কোটি ৫১ লাখ চার হাজার টাকায় ১৭ কোটি ২৬ লাখে ১২ হাজার ৬২৮টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড লেনদেন হয়েছে। গত বুধবার লেনদেন হয়েছিল ৪৮২ কোটি ৫৩ লাখ টাকার। আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে ৩৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ডিএসইতে ৩৯৫টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েও দর বেড়েছে মাত্র ২৯টির, কমেছে ৩৪২টির বা ৮৬.৫৮ শতাংশের এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টির। তবে দর পতনে ২০১টি কোম্পানি ছিল এ শ্রেণীর।
অপর দিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২১৫.০২ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ১৩০.৯০ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১৪৫.৫৬ পয়েন্ট এবং সিএসই-৫০ সূচক ১৮.৪১ পয়েন্ট হারিয়েছে। আর ৪৯ লাখ ৭১ হাজার ৬২৪টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড মোট ১৮ কোটি ৫ লাখ ৫৩ হাজার ২১৮ টাকায় হাতবদল হয়েছে। বুধবার লেনদেন হয়েছিল ১১ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। সিএসইতে ২১১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৬টির, কমেছে ১৫৭টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টি প্রতিষ্ঠানের।
তসরিফার ২২ লাখ শেয়ার বিক্রি
এ দিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উদ্যোক্তা রফিক হাসান তার ঘোষণা করা শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন করেছে বলে ডিএসই তথ্য প্রকাশ করেছে। কোম্পানিটির উদ্যোক্তার হাতে থাকা ২১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৩০টি শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন করেছেন। কোম্পানিটির এই উদ্যোক্তা গত ৮ এপ্রিল ওই শেয়ার বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
ওয়ালটন হাইটেকের বিক্রি হবে ৩ লাখ শেয়ার
আর শেয়ারবাজারে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির উদ্যোক্তা পরিচালক তিন লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন। কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালক এস এম রেজাউল আলমের হাতে থাকা ওয়ালটনের তিন কোটি ৮৯ লাখ শেয়ারের মধ্যে তিন লাখ শেয়ার বিক্রি করবেন। আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইর পাবলিক ও ব্লক মার্কেটে বিদ্যমান বাজার দরে ঘোষিত শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন করবেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা