১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কামরাঙ্গীরচরে সিবিডি প্রকল্প বাতিলের দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

-


রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে (সিবিডি) সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার ও ১০৪ ফিট প্রশস্ত রাস্তা করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার রোজা অবস্থায় জুমার নামাজ শেষে হাজার হাজার মানুষ কামরাঙ্গীরচরের বিভিন্ন সড়কে প্রতিবাদে নেমে পড়ে। তিন ওয়ার্ডে তিনটি বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। পৃথক পৃথক সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা উন্নয়নের পক্ষে, তবে উন্নয়ন করতে হলে আমাদেরকে এখানে রেখে উন্নয়ন করতে হবে। ঢাকা সিটির অন্তর্ভুক্ত ঘনবসতি এ এলাকায় ১০৪ ফিট রাস্তার কোনো প্রয়োজন নেই। বিকল্প প্রস্তাবে ভিন্ন জায়গায় প্রকল্প বাস্তবায়ন হোক আমাদের কোনো আপত্তি নেই। উন্নয়নের নামে আমাদেরকে জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ করার প্রকল্প আমরা কিছুতেই বরদাশত করব না। আমারা জীবন দিবো তবু জন্মভূমি কামরাঙ্গীরচর ছেড়ে অন্যত্র যাবো না। মিছিলে নেতৃত্ব দেন ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে হাফেজ্জী হুজুরের পুত্র মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী ও মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, ৫৬ ওয়ার্ড মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে কমিশনার আলহাজ নুরে আলম সিদ্দিকী। মিছিল শেষে বিক্ষোভ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে তিনটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে হাজী সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, কামরাঙ্গীরচরে ২০ লক্ষাধিক লোক বসবাস করে, ২২ হাজারের বেশি ভবন রয়েছে , অসংখ্য কল কারখানা, শত শত মসজিদ মাদরাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। উন্নয়নের নামে এগুলো উচ্ছেদ করতে আমরা দেবো না। আমরা কামরাঙ্গীরচরের জনগণের পাশে আছি, শেষ পর্যন্ত থাকব ইনশাআল্লাহ। হাফেজ্জী হুজুরের স্মৃতিবিজড়িত এই কামরাঙ্গীরচরকে নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না।

মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, কামরাঙ্গীরচর আমাদের বাপ-দাদার জন্মভূমি, আমাদের সারা জীবনের অর্জন, এটাই আমাদের ঠিকানা। রক্ত দেবো তবুও কামরাঙ্গীরচরের ভিটা ছাড়ব না।
৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কাউন্সিলর আলহাজ নূরে আলম চৌধুরী বলেন, আমরা যেখানে থাকতে পারব না সেই উন্নয়নে আমাদের কোনো লাভ নেই। শত বছরের ঐতিহ্য বিলীন হয়ে যাবে আমরা কিছুতেই মেনে নেবো না।
৫৬ ওয়ার্ডের সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন বলেন, উন্নয়নের নামে কামরাঙ্গীরচরবাসীর ওপর জুলুমের সিদ্ধান্ত আমরা কিছুতেই মেনে নেবো না, ১৯৭১ এ জুলুমের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে প্রয়োজনে কামরাঙ্গীরচর রক্ষায় আবার যুদ্ধ হবে। তবু কামরাঙ্গীরচর ছেড়ে অন্যত্র যাবো না।
সমাবেশে বক্তারা মেয়রের দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, মেয়র তাপস আমাদের প্রতিনিধি হয়েও আমাদের কথা না ভেবে জোরপূর্বক উন্নয়নের নামে আমাদের ওপর এ প্রকল্প চাপিয়ে দিতে চান আমরা তা কিছুতেই মেনে নেবো না।


আরো সংবাদ



premium cement