জামালপুরে হাসপাতালের ভবন হঠাৎ উধাও
- খাদেমুল বাবুল জামালপুর
- ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৬
বন্ধের দিন হঠাৎ উধাও জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবন। দিন-দুপুরে কে বা কারা ভবনটি ভেঙে নিয়ে গেলো কেউ তা জানে না। তবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভবন ভাঙার ঘটনা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশেই না কি ভাঙা হয়েছে ভবনটি।
জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবনটি গত শুক্রবার দিন-দুপুরে উধাও হয়ে যায়। কে বা কারা ভবনটি ভেঙে নিয়ে গেছে তা জানে না জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি এবং ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মচারীরা। জানা যায়, শতবর্ষী এই ভবনটি এক সময় দাতব্য চিকিৎসালয় হিসেবে ব্যবহার হতো। গত রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান ফটকের বাম ও ডান পাশে পড়ে আছে ভেঙে নেয়া ভবনের অংশবিশেষ। এ ছাড়া কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে দেখা মেলে ওই ভবনের কিছু রড এবং একটি ভেকু। কার নির্দেশে সরকারি ভবনটিকে ভেঙে নিয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মচারীদের কাছে। কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা: রিপন রায় বলেন, আমরা বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে চলে যাই। শনিবার অফিসে এসে দেখতে পাই ভবনটি কে বা কারা ভেঙে নিয়ে গেছে। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এ ব্যাপারে জামালপুর সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিবেশী খালেদা বেগম জানান, আমরা হাসপাতালের পাশে থাকি। গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের লোকজন এসে ভবন ভাঙা শুরু করে। রাত ১টা পর্যন্ত ভবনটি ভাঙা হয়। আমার ছেলে জিজ্ঞেস করতে গেলে তারা তাকে মারতে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো: শাহিন মিয়া বলেন, চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের নির্দেশে তার ঘনিষ্ঠ সাজু বুলডোজার ও ভেকু দিয়ে ভবনটি ভাঙেছে। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে তারা তা দেখায়নি।
কেন্দুয়া বাজার এলাকার শফিকুল ইসলামের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, এই ভবনটি ভাঙাতে আমরা সবাই খুশি। পরিত্যক্ত ভবন ছিল। শুক্রবার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এটি ভাঙা হয়। চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশে লোকজন এসে এসব ভাঙ্গা চূড়া করেছে।
তবে এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেন কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খান। তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, ভবনটি এলাকার মাদক ব্যবসার কারখানা ছিল। ভবনটি অপসারণের জন্য আমি স্বাস্থ্য বিভাগ, উপজেলা প্রশাসনসহ সদর আসনের এমপি কয়েকবার অবগত করেছিলাম। কে ভবনটি ভেঙেছে তা আমি জানি না। ভাঙার পর আমি ভবনের ভাঙ্গা-চূড়ার অবশিষ্ট অংশটুকুর নিরাপত্তার জন্য বাজারের নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করেছি। পরিষদের সামনে হলেও আমি জানি না কে ভেঙ্গেছে।
জামালপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: উত্তম কুমার সরকার বলেন, গত রোববার দুপুরের দিকে আমি ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছি। এ ব্যাপারে জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেন আশ্বাস দিয়েছে। ভবনের যেটুকু অবশিষ্ট আছে, সেটুকুর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। জামালপুর সদর থানার ওসি মুহাম্মদ মহব্বত কবির বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা