২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিলেট নগরে অবৈধ পার্কিং ক্ষমতার দাপট!

সিলেট নগরীর যত্রতত্র পার্কিং করা অটোরিকশা ও গাড়ি : নয়া দিগন্ত -

সিলেট নগরীর এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা অবৈধ গাড়ি পার্কিং। অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে প্রতিনিয়ত যানজটসহ নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে শহরে। বৈধ পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় কোথাও কোথাও রাস্তার দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা চলে যাচ্ছে থেমে থাকা যানবাহনের দখলে। এতে চরম ভোগান্তিতে পথচারীরা ও সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে নগরের বন্দরবাজারস্থ মধুবন, করিম উল্লাহ মার্কেট, জিন্দাবাজার, রিকাবীবাজার, মেডিক্যাল রোড, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট, ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই, সোবহানীঘাট, কুমারপাড়া, উপশহর পয়েন্টসহ নগরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকায় বিভিন্ন মার্কেট, হাসপাতাল, ডায়াগনিস্টক সেন্টার, স্কুল ও কলেজের নির্ধারিত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। আবার কারো পার্কিং ব্যবস্থা থাকার পরও অর্ধেকাংশ সড়ক দখল করে রাখা হয়েছে ছোট-বড় গাড়ি। এ ছাড়া সড়কের ওপর গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের ওঠানো-নামানো হচ্ছে। ফলে যানচলাচলে বিপত্তি ঘটছে আশপাশের সড়কে।

নগরের প্রাণকেন্দ্র বন্দরবাজার এলাকায় সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখা হয়েছে সিএনজি অটোরিকশা, লেগুনা, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন। ব্যস্ততম এই প্রধান সড়কের অর্ধেক জায়গা দখল করে রেখেছে অটোরিকশা, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস। একই অবস্থা জিন্দাবাজার ও ডাক্তারপাড়া খ্যাত রিকাবীবাজারের প্রধান সড়কেরও। সেখানে অটোরিকশা ও প্রাইভেটকারগুলো পার্ক করা আছে সড়ক দখল করে।

এ দিকে নগরের কিছু জায়গায় নির্ধারিত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও গাড়ি রাখা হচ্ছে সড়কের ওপরে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ, শপিংমল, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় বিপত্তি ঘটছে সড়কে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তবে এ বিষয়য়ে পুলিশের ভাষ্য, আইন অনুযায়ী তারা জরিমানা করতে পারেন না। শুধু রেকার দিয়ে থানায় নিয়ে যেতে পারেন। এ ছাড়া তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া যায় না। ফলে অবৈধভাবে পার্কিং করা গাড়ি সরানো তাদের জন্য কঠিন।

ট্রাফিক পুলিশের একাধিক সদস্য নয়া দিগন্তকে জানান, নগরের বেশির ভাগ মার্কেট ও স্কুল-কলেজের সামনে নির্ধারিত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। যেখানে স্কুল-কলেজ ছুটি হলেই শিক্ষার্থীদের নিতে অভিভাবকদের পাশাপাশি কিছু কোম্পানির গাড়ি সড়কের একপাশ বা তারও বেশি জায়গা দখল করে রাখে। এসব অবৈধ পার্কিংয়ের বিষয়টি তাদের অবগত করলে তারা বিভিন্ন নেতা, কাউন্সিলরসহ নানাজনের পরিচয় দেয়। পরে আমরা কিছু না বলে তাদের একটু সময় দিয়ে গাড়ি অন্য দিকে রাখতে বলি। এরপরও গাড়ি না সরালে অবৈধ পার্কিংকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে তারা বিভিন্ন জনকে ফোনে ধরিয়ে দেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট নয়া দিগন্তকে বলেন, অবৈধ পার্কিংয়ে রাখা গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে আমাদের নানা মন্তব্য শুনতে হয় এটা সঠিক। কী করব এটাও চাকরির একটা পার্ট। যদিও মাঝেমধ্যে খারাপ লাগে, তবুও সহ্য করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, একটা গাড়ি রং সাইড দিয়ে গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে তারা অনেক সময় ফোনে ধরিয়ে দেয়। তারা ভুল স্বীকার করলেও নানা কথাও বলে! এভাবে আমাদের অসঙ্গতিপূর্ণ কথাবার্তাও শুনতে হয়। এসব ক্ষেত্রে খুব অসহায় লাগে।

কুমারপাড়ায় একটি প্রাইভেট স্কুলের সামনে অবৈধ গাড়ি পার্কিং করে রেখেছে আহাদ মিয়া। গাড়ির মালিক একটি বেসরকারি অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। বিষয়টি জানতে চাইলে চালক আহাদ বলেন, প্রতিদিন সকালে স্যারের মেয়েকে নিয়ে স্কুল পৌঁছে দিতে হয়। আবার দুপুর হতেই স্যারের মেয়েকে নিতে আসতে হয়। দুপুর হতেই সড়কের এক পাশে গাড়ি পার্কিংয়ের প্রতিযোগিতা চলে। আমরা জানি সড়কে নির্ধারিত পার্কিং ব্যবস্থা না থাকলে গাড়ি রাখা যায় না। কী করব, স্কুল করে রাখছে অথচ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করেনি। যদিও বিষয়টি সম্পর্কে স্কুল কর্তৃপক্ষ অবগত, তারপরও তাদের অবহেলায় মাঝে মধ্যে আমাদের গাড়িতে ট্রাফিক সার্জেন্টরা মামলা দিয়ে দেয়।

যদিও সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৪৭ ধারায় বলা আছে, সরকার বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ, ট্রাফিক পুলিশের পরামর্শে মোটরযান পার্কিং এলাকা নির্ধারণ করতে পারবে। নির্ধারিত এলাকা ছাড়া পার্কিং করা যাবে না, যদি কেউ করে তা হবে অপরাধ। এ ধারার বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। একই সাথে চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কর্তন করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) গোলাম দস্তগীর কাওছার নয়া দিগন্তকে বলেন, অবৈধ পার্কিং ব্যবস্থাপনায় ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। অনেক সময় ট্রাফিক পুলিশের সদস্য নানা মন্তব্যের শিকার হতে হয় এ বিষয়ে আমরা অবগত। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।

এসএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব নয়া দিগন্তকে বলেন, এরকম ঘটনা বিগত দিন থেকেই চলছে। বর্তমান সময়ে যে এসব ঘটনা বেড়েছে তা নয়। সব মানুষের আচরণ তো আর এক রকম না। বিভিন্ন মানুষের আচরণ বিভিন্ন রকম। তবে দেখা যায় যে, অবৈধ পার্কিং কিংবা অন্য অপরাধে একটি গাড়িকে দায়িত্বরত একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট মামলা দিলে তারা প্রতিক্রিয়া জানায়। আসলে আমরা কখনোই চাই না কোনো গাড়িকে মামলা দিতে। আমরা সব সময়ই চাই সড়ক যানজটমুক্ত রাখতে।ু


আরো সংবাদ



premium cement
আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে মারামারি, মাঠ ছেড়ে উঠে গেল সাদা-কালোরা কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সেভাবেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে : কৃষিমন্ত্রী চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিএনজি ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৪ ভান্ডারিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল