২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা যথোপযুক্ত এবং দূরদর্শী নয় : সিসিএনএফ

-

২০২১ সালের জন্য জাতিসঙ্ঘ গৃহীত রোহিঙ্গা সাড়াদান পরিকল্পনাকে (জেআরপি) সঙ্কট মোকাবেলায় যথোপযুক্ত নয় বলে অভিমত প্রকাশ করেছে কক্সবাজারে কর্মরত ৫০টি স্থানীয়-জাতীয় এনজিও-সুশীল সমাজ সংগঠনের নেটওয়ার্ক সিসিএনএফ।
আগামীকাল জেআরপির আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা উপলক্ষে আয়োজিত ‘জাতিসঙ্ঘের রোহিঙ্গা সাড়াদান পরিকল্পনা (জেআরপি) ২০২১ : শরণার্থী ব্যবস্থাপনায় যথোপযুক্ত নয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সিসিএনএফের কো-চেয়ার এবং কোস্ট ফাউন্ডেশনের র্নিবাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী। এতে আরো বক্তব্য দেন পালসের নির্বাহী পরিচালক আবু মোর্শেদ চৌধুরী, ইপসার প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আরিফুর, মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী বিমল দে সরকার ও কোস্ট ফাউন্ডেশনের যুগ্ম পরিচালক মজিবুল হক মনির। রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জেআরপি বা রোহিঙ্গা প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা ২০২১ তৈরির সময় স্থানীয় ও জাতীয় এনজিও প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে লিখিত মতামত পাঠানো হয়েছিল। গত ৬ মে বিষয়টি নিয়ে একটি ওয়েবিনারেরও আয়োজন করা হয় যেখানে স্থানীয় সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি এবং জাতিসঙ্ঘের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। তবে রোহিঙ্গা সঙ্কট ব্যবস্থাপনায় স্থানীয়দের মতামত ওই দলিলটিতে প্রতিফলিত হয়নি বললেই চলে।
তিনি আরো বলেন, গত চার বছরে জাতিসঙ্ঘের বিদেশী কিছু কর্মকর্তার নেতৃত্বে পরিচালিত ইন্টার সেকটোরাল কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ বা আইএসসিজি রোহিঙ্গা কর্মসূচির জন্য প্রাপ্ত তহবিলের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি। প্রাপ্ত অর্থের কত অংশ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যয় করা হয়েছে, স্থানীয় উৎস্য থেকে কেনাকাটায় কত ব্যয় করা হয়েছে, স্থানীয়দের মধ্য হতে কতজনকে নিয়োগ করা হয়েছে এসব তথ্যও বিস্তারিত প্রকাশ করতে পারেনি। স্থানীয় ও জাতীয় এনজিও এবং অনেক আন্তর্জাতিক এনজিও যেমন আইএফআরসি ও এমএসএম এর কার্যক্রম, তাদের প্রাপ্ত অর্থের তথ্য জেআরপিতে অন্তর্ভুক্ত হয় না। তাই আইএসসিজি রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় কতটা কার্যকর সেটা প্রশ্নবিদ্ধ। তা ছাড়া ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির বিশ্লেষণ নেই জেআরপিতে। আগামী ৫ বা ১০ বছরে কোনো প্রত্যাবাসন না হলে এই সঙ্কট মোকাবেলায় কী করা হবে সেটা এখনি ভাবা প্রয়োজন। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে অতিরিক্ত ঘনবসতি একটি বড় সমস্যা, এই সমস্যা নিরসনে সিসিএনএফ সহজে স্থানান্তরযোগ্য এবং স্থাপনযোগ্য দু’তলা ঘরের সুপারিশ করেছে। যেহেতু রোহিঙ্গাদের ৬৫ শতাংশ যুবক-কিশোর, তাই তাদের জন্য প্রয়োজন স্বীকৃত শিক্ষাব্যবস্থা, তাদের জন্য আয়ের ব্যবস্থাও থাকতে হবে, যাতে তারা কোনো সন্ত্রাস ও অবৈধ কার্যকলাপের দ্বারা প্রলুব্ধ না হয় এবং চলমান কক্সবাজার উন্নয়নের জন্য হুমকিতে পরিণত না হয়।
আবু মোশেদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় পৃথক তিনটি লাইন বা কর্তৃপক্ষ আছে যেমন- আইএসসিজি, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরসিসি) এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। কর্মসূচি এবং তহবিল ব্যবস্থাপনার জন্য একটি একক কর্তৃপক্ষ ও একক তহবিল ব্যবস্থাপনা থাকতে হবে। তিনটি সংস্থার সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হওয়া উচিত, স্থানীয় সংসদ সদস্যদের (সংসদ সদস্য), স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, স্থানীয় এনজিও এবং মিডিয়া প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে গঠিত সেই কমিটির মাসিক ভিত্তিতে সমন্বয় সভা হতে হবে।
বিমল দে সরকার বলেন, রোহিঙ্গা অর্থায়নের স্থানীয়করণ নিশ্চিত করতে ‘লোকালাইজেশন রোডম্যাপ’ প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘ কর্তৃক গঠিত লোকালাইজেশন টাস্ক ফোর্স (এলটিএফ)। এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত হয়েছে এবং ২০২০ সালের নভেম্বরে জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তুসেই প্রতিবেদনটি এখনো প্রকাশ করা হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement