মামলা জটিলতায় বন্ধ স্কুল ভবনের কাজ, ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা
- রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
- ১০ জুলাই ২০২৪, ১৪:২৬
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর ভাদুর ইউনিয়নের মধ্য ভাদুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে আদালতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বাড়ির রাস্তা ১২ ফুট রেখে স্কুল ভবন নির্মাণের শর্ত দিয়ে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদনটি করেন জাকির হোসেন ভূইয়া নামের এক সরকারি চাকুরীজীবি।
জাকির হোসেন ভূইয়া ভাদুর ইউনিয়নের ভূইয়া বাড়ির মরহুম মন্তাজ উদ্দিন ভূইয়ার ছেলে এবং নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী।
সরেজমিনে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মধ্য ভাদুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেছে, একই শ্রেণিকক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পাঠদান চলছে। পাশের লাইব্রেরীতে (শিক্ষকদের রুম) চলছে ৫ম শ্রেণির পাঠদান। গাদাগাদি ও চিৎকার চেঁচামেচিতে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। কারো কথা কেউ শুনছে না। ফলে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালে মাঠের পূর্বপাশের জমিতে সরকারিভাবে আধা পাকা টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘ দিনেও সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ ভবনটি শিক্ষার্থীদের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ২০২৩ ইং সালের নভেম্বরে পুরাতন ভবন ভেঙে নতুন দ্বিতল ভবন নির্মাণের জন্য সয়েল টেষ্ট করার পর ৬৮ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লামিয়া অ্যান্ড তানভির এন্টারপ্রাইজ।
এ দিকে, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারী বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি ভেঙে উক্ত স্থানে নতুন ভবন নির্মাণে লে-আউট দেয়ার পর রাস্তা প্রশস্তকরণ ও বিদ্যালয় সীমানার ভিতরে জমি পাওনা দাবি করে নতুন ভবন নির্মাণ বন্ধ রাখতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন জাকির হোসেন ভূইয়া।
অভিভাবক আবুল কালাম জানান, ‘এই বিদ্যালয় নিয়ে এখন রাজনীতি চলছে। আমরা চাই দ্রুত স্কুলের কাজ শেষ করা হোক।’
জসিম উদ্দিন জানান, ‘যেখানে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ছিল সেখানেই নতুন ভবন হোক। আমাদের বিভেদের কারণে ভবনটি বাতিল হলে এলাকার মানুষের জন্যই ক্ষতি হবে।’
দাতা সদস্য শেখ নুর উদ্দিন ভূইয়া জানান, ‘আমরা চাই স্কুলের নতুন ভবনটি আগের জায়গায়ই হোক। তবে আমাদের বাড়ির চলাচলের রাস্তাটি ১২ ফুট রেখে বাকি জায়গায় স্কুল নির্মাণে আমাদের কোনো আপত্তি নাই।’
এ ব্যাপারে জাকির হোসেন ভূইয়া মোবাইল ফোনে জানান, ‘আমি সরকারি চাকুরি করি আর যাই করি-আমার বাড়ির রাস্তার ১২ ফুটের ভেতরে ঠিকাদার কোনো কাজ করতে পারবে না মর্মে চুক্তি করলে আমি কাজ করতে দিব।’
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবদুল মান্নান ভূইয়া জানান, ‘পুরাতন ভবনটি ভেঙে নতুন ভবনের লে-আউট দেয়ার সময় এক হাত দাতা সদস্যদের রাস্তার দিকে সরিয়ে নেয়ায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় আমিও একজন বিবাদী।’
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন জানান, ‘আগে থেকে পুরাতন ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। মামলার কারণে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ স্থগিত থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে খুবই সমস্যা হচ্ছে।’
রামগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো: সাজ্জাদ মাহমুদ খাঁন বলেন, ‘পুরাতন ভবনের স্থলে নতুন ভবন নির্মাণে লে-আউট দেয়ার পর মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে নির্মাণ কাজ স্থগিত রয়েছে।’
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন ইসলাম বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালতে মামলা থাকায় নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ স্থগিত রয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই সমাধান হবে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা