উখিয়ায় বন-বিট কর্মকর্তার হত্যার প্রধান আসামি বাপ্পিসহ আটক ২
- উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা
- ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৩০
উখিয়ায় দোছরি বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামানকে ডাম্পার ট্রাকে পিষ্ট করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাপ্পিকে চট্রগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে উখিয়া থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল ) সকালে উখিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) রাসেল।
নিহত সাজ্জাদুজ্জামান সজল (৩০) কক্সবাজার দক্ষিণ বন-বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছরি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে।
ঘটনায় আহত বনরক্ষী মোহাম্মদ আলী (২৭) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমনখালী এলাকার আবুল মন্জুরের ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, দোছরি বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদকে হত্যার পর থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঘাতক ডাম্পার চালক বাপ্পিকে উখিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন মজুমদারের নেতৃত্বে এসআই কাউসার হামিদ, এসআই হোসনে মোবারক সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান পরিচালনা করে চট্রগ্রাম বন্দর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ঘটনার পরদিন (১ এপ্রিল) থেকে বাপ্পি সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে নিজেকে আত্নগোপন করে রাখে। একপর্যায়ে সোমবার গোপন সসংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এদিকে সাজ্জাদ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের পেছনে ইন্ধনদাতাসহ সকলের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত রোববার (৩১ মার্চ ) ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি পাচার করছিল একদল পাহাড়খেকো। খবর পেয়ে বন বিভাগের উখিয়ার দোছরি বিটের কর্মকর্তা মো: সাজ্জাদুজ্জামান সজলসহ কয়েকজন বনকর্মী ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তিনিসহ মোটরসাইকেল আরোহী দু'জনকে পাচারকারীদের মাটিভর্তি ডাম্প ট্রাক চাপা দেয়। এতে সাজ্জাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে মারা যান এবং মোহাম্মদ আলী নামের এক বনরক্ষী আহত হন। এ ঘটনায় সোমবার (১ এপ্রিল) বিকেলে বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, উখিয়া রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে ও ডাম্পার ট্রাক চালক মোহাম্মদ বাপ্পি (২৩) একই এলাকার সুলতান আহমদের ছেলে ছৈয়দ আলম ওরফে কানা ছৈয়দ, (৪০) ও তার ছেলে মো: তারেক (২০), রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল এলাকার নুরুল আলম মাইজ্জার ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৭), হরিণমারা এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ছৈয়দ করিম (৩৫), একই এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে আনোয়ার ইসলাম (৩৫), আব্দুর রহিমের ছেলে শাহ আলম । হিজলিয়া এলাকার ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মো: বাবুল (৫০), একই এলাকার ফরিদ আলম ওরফে ফরিদ ড্রাইভারের ছেলে মো: রুবেল (২৪), এবং হরিণমারা এলাকার শাহ আলমের ছেলে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার (৩৯)। মামলার অঞ্জাতনামা আরো ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছে এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিম (৩৫)। আর হত্যার নয় দিনের মাথায় মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উখিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন বলেন, ১ এপ্রিল বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের এক বন কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় রেঞ্জার ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরে পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে। এ ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৩১ মার্চ দুপুরে বিভাগীয় বন কার্যালয়ে প্রথম জানাজা শেষে নিহত সজলকে নিজ বাড়ি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌঁছে এশার নামাজের পর দ্বিতীয় জানাজা শেষ করে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। এরপর তার সহকর্মীরা বিভাগীয় বন কার্যালয়ের সামনে থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত দীর্ঘ মানববন্ধন করে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করা হয় মানববন্ধনে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত প্রধান আসামিসহ দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা