০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


পুত্রবধূ হত্যার অভিযোগে ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের মামলা

-

নোয়াখালী সদর উপজেলার উত্তর শুল্লুকিয়া গ্রামে পুত্রবধূ মারজাহান বেগমকে (২৭) হত্যার অভিযোগে সৎ ছেলে মো: সোহাগ, রাজু ও স্বামী আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রহিমা বেগম (৬৮) নামের এক নারী।

বুধবার নোয়াখালীর সিনিয়র বিচারক মোহাম্মদ নাহিয়ানের ১ নম্বর আমলী আদালতে চার জনকে আসামি করে এ মামলা করেন রহিমা বেগম।

মামলার এজাহারে ওই নারী উল্লেখ করেন, প্রথম স্বামীর সাথে পারিবারিক কলহের জেরে তার বিয়ে বিচ্ছেদের পর উত্তর শুল্লুকিয়া গ্রামের আবদুল খালেকের সাথে দ্বিতীয় বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার এই সংসারে কোনো সন্তান নেই। স্বামী, দুই সৎ ছেলে মো: সোহাগ ও রাজু এবং সোহাগের স্ত্রী মারজাহান বেগম ও তার তিন শিশু সন্তান নিয়েই তাদের সংসার।

গত কয়েক মাস থেকে তার সৎ ছেলে মো: সোহাগ প্রতিবেশী এক মেয়ের সাথে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হওয়ায় তার স্ত্রী মারজাহানের সাথে পারিবারিক কলহ চলে আসছে। ওই কলহের জেরে সোহাগ তার স্ত্রী মারজাহানকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতনসহ মেরে ফেলার হুমকি দিতো।

গত ৩ এপ্রিল দুপুরে রহিমা বেগম পুত্রবধূ মারজাহানকে বাড়িতে রেখে বাবা বাড়িতে বেড়াতে যান। ওই দিন রাত ২টায় মারজাহান বিষ প্রাণে মারা গেছেন বলে স্বামী আবদুল খালেক মোবাইল ফোনে রহিমা বেগমকে জানান।

পর দিন সকালে রহিমা বেগম বাড়িতে এসে জানতে পারেন ছেলে সোহাগের পরকীয়া প্রেমের প্রতিবাদ করায় সোহাগ, তার ভাই রাজু, ভগ্নিপতি জামাল উদ্দিন ও সোহাগের বাবা আবদুল খালেক পুত্রবধূ মারজাহান বেগমকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে তিনি কান্নাকাটি করতে করতে পুত্রবধূর লাশ দেখতে গিয়ে দেখেন মৃত মারজাহানের গলা, হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত ফুলাজখম রয়েছে।

এ সময় তিনি তার ছেলের বউকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রতিবাদ করলে স্বামী আবদুল খালেক ও ছেলেরা তার মূখ চেপে ধরে ঘরে নিয়ে বলে এ সব বললে পুলিশ এসে তোকেসহ আমাদের সাবাইকে থানায় নিয়ে যাবে। এসব বলা যাবে না, বললে তোকেও মেরে ফেলবো।

পরে স্থানীয়ভাবে মৃত মারজাহানের বাবা-মাকে ম্যানেজ করে তার শিশু সন্তানদের কিছু জমি ও নগদ টাকা দেয়া হবে মর্মে থানায় খবর না দিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহতের লাশ দাফন করা হয়।

ঘটনার বিষয়ে মারজাহানকে ধৌত করানো মহিলারা প্রকাশ করলে তারেও ম্যানেজ করার চেষ্টা করে সোহাগের পরিবার।

এদিকে সৎ মা রহিমা বেগমের মূখ বন্ধ রাখতে দীর্ঘ দুই মাস আট দিন ঘরের মধ্যে বন্ধি করে রাখা হয়। পরে সুকৌশলে রহিমা বেগম স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে বুধবার নোয়াখালীর সিনিয়র বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলী আদালতে পুত্রবধূ মারজাহান বেগমকে হত্যার অভিযোগে সৎ ছেলে মো: সোহাগ, রাজু, স্বামী আবদুল খালেক ও সৎ মেয়ের স্বামী জামাল উদ্দিনকে আসামি করে মামলা করেন।

রহিমা বেগম জানান, তিনি স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে আসার পর থেকে পুত্রবধূ মারজাহান হত্যার বিষয়ে মুখ খুললে তাকে শারীরিক নির্যাতনসহ প্রাণে হত্যা করে লাশ গুম করা হবে বলে বিভিন্নভাবে হুমকি-দুমকি দিয়ে যাচ্ছেন স্বামী আবদুল খালেক ও ছেলে সোহাগ। তিনি প্রশাসনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।


আরো সংবাদ



premium cement