বিক্রেতা খরা : ৯০ শতাংশ ক্রেতার চাপে পুঁজিবাজার
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৮ জুন ২০২৪, ০০:০৫
- সাতটি খাতের শেয়ারের বিক্রেতা শূন্য
- ডিএসইর মূলধন ফিরেছে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা
পতনের জালে দীর্ঘ দিন আটকে থাকার ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছে দেশের পুঁজিবাজার। ধীরে ধীরে হারানো পয়েন্ট ফিরে পাওয়ার পথে এগোচ্ছে। বাজারের এই আচরণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে। বিক্রেতা নেই বাজারে। ক্রেতার ৯০ শতাংশ চাপে রয়েছে বাজার। সিমেন্ট, সিরামিক্স, প্রকৌশল, পাট, সেবা, চামড়া ও টেলিযোগাযোগ খাতে শেয়ারের বিক্রেতা নেই। সূচকে পয়েন্ট বৃদ্ধি ও দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ডিএসই ও সিএসই-দুই বাজারের লেনদেনে অনেক বেড়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল ডিএসইর লেনদেন ৭০০ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে। সার্বিকভাবে ডিএসইর বাজারমূলধন বেড়েছে ০.৯৯ শতাংশ বা ছয় হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা।
লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, টানা ২৯ কার্যদিবসের পর ৭০০ কোটি টাকা লেনদেন অতিক্রম করল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। ক্রেতার চাপেই এখন পুঁজিবাজার। কিন্তু ছিল না বিক্রেতা। বিক্রেতারা এখন শেয়ার ধরে আছেন। দর বৃদ্ধিতে মুনাফা বেশি পাওয়ার আশায়। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫২.৬০ পয়েন্ট যুক্ত হওয়ায় এখন পাঁচ হাজার ৩৫৫.৪১ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচকে আরো ১৭.৬৮ পয়েন্ট যুক্ত হয়ে এক হাজার ১৮৩.৫১ পয়েন্টে ও ডিএসই-৩০ সূচকে আরো ১৮.৭৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯২২.৫৬ পয়েন্টে উঠে এসেছে। গতকাল ১৭ কোটি ৭০ লাখ ৭২ হাজার ৮০৬টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড বেচাকেনা হয়েছে ৭০৫ কোটি ৮৩ লাখ ১১ হাজার ৯৬৪ টাকা বাজারমূল্যে। লেনদেনে অংশ নেয়া ৪০১টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে ২৪৬টির, কমেছে ৯৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৫৬টির। বাজারমূলধন ০.৯৯ শতাংশ বা ছয় হাজার ৪৮৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বেড়েছে।
ঢাকা স্টকের ব্লক মার্কেটে গতকাল ৭৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের দুই কোটি ৪৫ লাখ ৯২ হাজার ২৪৭টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ১০৭ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হতে হয়েছে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও ইসলামী ব্যাংকের। তবে মোট পাঁচটি কোম্পানির সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়। কোম্পানিগুলো হলো- সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ব্যাংক, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং ফাইন ফুডস লিমিটেড। এই পাঁচ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি ৭৯ লাখ টাকারও বেশি।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্সের ৩৬ লাখ শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে ৩১ কোটি ৩২ লাখ টাকায় এবং ইসলামী ব্যাংকের ৩৪ লাখ শেয়ার মোট ১১ কোটি ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকায়। এ ছাড়া ৮ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স। অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ছয় কোটি ৬৭ লাখ ১৩ হাজার টাকার এবং ফাইন ফুডস লিমিটেডের পাঁচ কোটি ৩৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্য দিকে চট্টগ্রাম স্টকের সূচকগুলো গড়ে দেড়শ’ পয়েন্টের বেশি হারে বেড়েছে এক দিনেই। বাজার লেনদেনেও ছিল শত কোটি টাকার বেশি। সিএএসপিআই ১৬৩.৬৬ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ১০১.১৬ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১৮৯.৪৬ পয়েন্ট এবং সিএসই-৫০ সূচক ১১.৮৮ পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৪১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৪টির, কমেছে ৬৯টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টি কোম্পানির। দুই কোটি ৩৭ লাখ ৩৭ হাজার ৬০৮টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে মোট ১১৫ কোটি ৯২ লাখ ৬৫ হাজার ৯১১ টাকা বাজারদরে।
গতকালের বাজারমূল্যায়নে রয়্যাল ক্যাপিটাল বলছে, ৬৪ শতাংশ ক্রেতার বিপরীতে ডিএসইতে ক্রেতার চাপ ছিল ৯০ শতাংশ। তবে বিক্রেতা ছিল ১৭ শতাংশ। আর ১৫ শতাংশ নিশ্চুপ ছিল। বাজারে এন শ্রেণীর শেয়ারের ক্রেতার চাপ কম থাকলেও বিক্রির চাপ বেশি। এ ও জেড শ্রেণীর কোম্পানির ক্রেতা বেশি ছিল। ডিএসইর বাজারমূলধন বেড়েছে ০.৯৯ শতাংশ। ১৯টি সেক্টরের মধ্যে ১৭টি সেক্টরের বাজার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দু’টি সেক্টরের বাজার মূলধন হ্রাস পেয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা