বাজেট শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন ঘটায়নি
টেক্সটাইল গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সংবাদ সম্মেলন- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৩ জুন ২০২৪, ০২:০০
কথিত মাথাপিছু আয়, জিডিপি উন্নয়ন ও সুখী, সমৃদ্ধ-স্মার্ট বাংলাদেশ শিরোনামের বাজেট শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন বা অগ্রগতি ঘটায়নি। বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলা হয়েছে। সরকারঘোষিত জাতীয় বাজেটে ৬ কোটি শ্রমিকের জন্য আলাদাভাবে কোনো খাত বরাদ্দ না দেয়া এবং শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা বরাদ্দ না করায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্রমিক নেতা অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা-শবনম হাফিজ-সভাপতি-বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন, সুলতানা আক্তার-সভাপতি-গ্রীণ বাংলা গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন, কে.এম মিন্টু, আইন বিষয়ক সম্পাদক- বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও স্লোয়েটার শ্রমিক টিইউসি, এফ এম আবু সাঈদ-সাধারণ সম্পাদক-বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন। শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন, সভাপতি টেক্সটাইল গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন। লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, ৬ জুন সরকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেছে। ১৯৭২-১৯৭৩ সনে প্রথম বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা, ৫৩ বছরে জাতীয় বাজেটের আর্থিক আকার বর্তমানে ১০১৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জিডিপিতে ৫.৭% এবং মাথাপিছু আয় ৩ লাখ ৬ হাজার ১৪৪ টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এই হিসেবে মাসিক মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় ২৫,৫১২/- টাকা।
কথিত মাথাপিছু আয়, জিডিপি উন্নয়ন ও সুখী, সমৃদ্ধ-স্মার্ট বাংলাদেশ শিরোনামের বাজেট শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন বা অগ্রগতি ঘটায়নি। দেশ-বিদেশের মাথাপিছু আয়ের এই খতিয়ানের গল্প প্রচার করা হলেও বাস্তবে এই হিসাব কাজির গোয়াল, খাতাকলমে আছে কিন্তু গোয়ালে গরু নাই। দেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে ১৪ কোটি মানুষের মাথা গোজার নিজস্ব কোনো আবাসন নেই। ৫৩ বছরের তুলনায় বর্তমানে ব্যাপকভাবে বেড়েছে আয়, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সম্পদ ও খাদবৈষম্য। শ্রমিক পরিবার জেলখানার কয়েদির চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছে। ১৯৭২ সালে কোটিপতির সংখ্যা ছিল মাত্র ৫ জন, ২০২৩ সালে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯০০ জন। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়িয়ে বছরে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা শ্রমিকদের পকেট থেকে লুটে নিচ্ছে। এদের স্বার্থেই সরকার কালো টাকা (অপ্রদর্শিত আয়) ১৫% কর দিলেই বৈধ বা সাদা টাকা হয়ে যাওয়ার নীতিমালা গ্রহণ করেছে। ফলে পুলিশের সাবেক আইজি বেনজিরের মতো দুর্নীতিবাজদের মতো আরো কয়েক হাজার দুর্নীতিবাজ দুর্নীতি করতে আরো বেশি উৎসাহিত হবে। জাতীয় বাজেটে শিল্প বাজেট, কৃষি বাজেট, স্বাস্থ্য বাজেট, শিক্ষা বাজেট, প্রতিরক্ষা বাজেট ইত্যাদি বাজেট থাকলেও আলাদাভাবে শ্রমিকদের জন্য কোনো বাজেট বরাদ্দের খাত নেই। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং প্রতিষ্ঠানে ১৪ লাখ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য সুযোগ-সবিধা বাদে শুধু বেতন-ভাতার ব্যয় বরাদ্দ ৮১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। কিন্তু বাজেটের এই টাকার অঙ্ক অথবা ১০% বরাদ্দ দিলে বাংলাদেশের গার্মেন্টসহ ৬ কোটি শ্রমিকের স্বল্প মূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করে শ্রমজীবী মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তার সুরক্ষা দেয়া সম্ভব। উন্নয়ন ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির কথা যতই বলা হোক না কেন বৈষম্য অসমতা নিরসন হবে না এবং ৩০ লাখ শহিদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শোষনহীন সমাজ প্রতিষ্ঠাও করা যাবে না। বাস্তবে এই বাজেট বানরের পিঠা ভাগের গল্পের বিবরণ ছাড়া আর কিছুই না। এই বাজেট ৬ কোটি খেটে খাওয়া শ্রমিকের অভাব অনটন আরো বাড়বে। যেহেতু এই বাজেটে শ্রমিকদের জন্য কিছুই নাই সেহেতু বাংলাদেশের ছয় কোটি শ্রমিক এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করছে।
আগামী ২৫ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের প্রতিটি শিল্প অঞ্চলে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা