১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আশার আলো দেখিয়ে ঈদের ছুটিতে পুঁজিবাজার

-

- ঢাকায় সূচকে পয়েন্ট ফিরলেও চট্টগ্রাম পয়েন্ট হারিয়েছে
- কেনার চাপ ছিল, তবে বিক্রির চাপ কমায় বাড়ল সূচক
- বাজারমূলধনে ফিরেছে ৩,২৪৪ কোটি টাকা

কিঞ্চিৎ আশার আলো দেখিয়ে দেশের পুঁজিবাজার ঈদের ছুটিতে। ছুটির আগে ডিএসইতে এসএমই সূচক ছাড়া সবগুলো সূচক বেড়েছে। কিন্তু সিএসইতে সবগুলো সূচকই তার পয়েন্ট হারিয়েছে। ডিএসইতে টাকায় লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। তবে সূচক পয়েন্ট হারালেও চট্টগ্রাম স্টকে গতকাল শত কোটি টাকার বেশি বেচাকেনা হয়েছে। ক্রেতার চাপ সর্বোচ্চ থাকায় বাজারে বেচাকেনা বেশি হয়েছে। বিক্রির চাপ কম থাকার কারণে বেড়েছে ডিএসইতে মূল্যসূচক। সার্বিকভাবে বাজার মূলধন ০.৫১ শতাংশ বা তিন হাজার ২৪৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা বেড়েছে গতকালের লেনদেনের মাধ্যমে। ঈদ পূর্ববর্তী দুই লেনদেন দিবসে ডিএসইএক্স ৪৭ পয়েন্ট পুনরুদ্ধার করেছে।
লেনদেনের তথ্য থেকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, লেনদেনে শুরুর দশ মিনিটের মাথায় সূচক ও লেনদেন দ্রুত বাড়তে থাকে। ডিএসইর ডিএসইএক্স সূচক ৩৪.৬১ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ১১৭.৮১ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭.১৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১০৮.০৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৯.৬৯ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮২১.৮৮ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৪৯ হাজার আটটি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে ৪২৩ কোটি ১৪ লাখ ১৬ হাজার টাকায়, যা বুধবারের তুলনায় ৭৩ কোটি টাকা বেশি। ওই দিন লেনদেন হয় ৩৫০ কোটি ৭৯ লাখ টাকার। ৩৯৬টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও দর বৃদ্ধিতে ছিল ২২৪টি, দর পতনের শিকার ১১৩টি এবং দর অপরিবর্তিত ৫৯টির। ডিএসইর বাজার মূলধনে ০.৫১ শতাংশ বা তিন হাজার ২৪৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ফিরেছে।
এ দিকে, ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গতকাল ৩৪টি কোম্পানির ৬৯ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬৪টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড বেচাকেনা হয়েছে ৯৫ কোটি ৪৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকায়। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ছয় কোম্পানির।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিকন ফার্মা, ইউনিলিভার কনজ্যুমার, রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স লিমিটেড। এই ছয় কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৩ কোটি ৭ লাখ টাকারও বেশি। আর কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিকন ফার্মার। কোম্পানিটির ৩৫ লাখ ৫৯ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৪ কোটি ৪৫ লাখ ২৭ হাজার টাকায় এবং ইউনিলিভার কনজ্যুমারের ৬৭ হাজার শেয়ার লেনদেনে হয়েছে ১৫ কোটি ৩৬ লাখ ৯৮ হাজার টাকায়।
চট্টগ্রাম স্টকে দুটি সূচক পয়েন্ট হারালেও সিএসই-৩০ সূচক ইতিবাচক ছিল। সিএএসপিআই সূচক ৬.৪৭ পয়েন্ট হারিয়ে এখন ১৪ হাজার ৫৪৭.২৪ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স ৪.৭৮ পয়েন্ট হারিয়ে আট হাজার ৭৪৮.০৫ পয়েন্টে নেমে এসছে। আর সিএসই-৩০ সূচক ৭৩.১৮ পয়েন্ট ফিরে পেয়ে এখন ১১ হাজার ৩৩২.১৭ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৮৬টি কোম্পানির মধ্যে দর বৃদ্ধিতে ছিল ৭২টি, দর পতনে ৮৭টি এবং দর অপরিবর্তিত ২৭টি কোম্পানি। দুই কোটি ৬৬ লাখ ১৩ হাজার ৭৯৮টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে ১১৬ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৯০৩ টাকায়।
রয়্যাল ক্যাপিটাল বাজার পর্যালোচনায় বলছে, বিক্রির চাপ কমায় বাড়ল সূচক। চূড়ান্ত বাজেট ও জুন ক্লোজিং বিষয় দুটি বিবেচনায় নিয়ে ঈদ ছুটিতে যাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ঈদ পূর্ববর্তী দুই লেনদেন দিবসে ডিএসইএক্স ৪৭ পয়েন্ট পুনরুদ্ধার করেছে। চূড়ান্ত বাজেটে পুঁজিবাজার-বান্ধব কিছু সিদ্ধান্ত আসবে অথবা প্রস্তাবিত বিষয়াদি পুনর্বিবেচনা করা হবে এমনটা প্রত্যাশা করছেন বিনিয়োগকারীরা। গতকাল ডিএসইর লেনদেনের পরিমাণ বুধবারের তুলনায় ২০.৮ শতাংশ বা ৭৩ কোটি টাকা বেড়েছে। লেনদেনের শেষ ১০ মিনিটে সূচক ও লেনদেনের পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আশান্বিত করেছে।
তাদের পর্যবেক্ষণ, ঢাকার শেয়ারবাজারে সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। মূলধন গত দিনের তুলনায় ০.৫১ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে ভলিউম ১ শতাংশ এবং টার্নওভার ২১ শতাংশ বেড়েছে। ১৯টি খাতের মধ্যে ১৬টি খাতের বাজার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনটি খাতের বাজার মূলধন কমেছে। এসএমই বাজার সূচক (ডিএসএমইএক্স) ১৪.০৬ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এক হাজার ৪৬৬.০৩ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে এবং লেনদেন হয়েছে ৫.১ কোটি টাকা, যা গত দিনের তুলনায় ২০ শতাংশ কম।


আরো সংবাদ



premium cement